জি.ও. নং ৩ ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগী নাইডু, কী বললেন তিনি!

অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এন. চন্দ্রবাবু নাইডু (Chandrababu Naidu) জানিয়েছেন, তফসিলি অঞ্চলে কেবলমাত্র স্থানীয় উপজাতিদের সরকারি চাকরিতে যোগ্যতা দেওয়ার বিধান থাকা জি.ও. নং ৩ পুনরুজ্জীবনের জন্য সরকার…

chandrababu-naidu

অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এন. চন্দ্রবাবু নাইডু (Chandrababu Naidu) জানিয়েছেন, তফসিলি অঞ্চলে কেবলমাত্র স্থানীয় উপজাতিদের সরকারি চাকরিতে যোগ্যতা দেওয়ার বিধান থাকা জি.ও. নং ৩ পুনরুজ্জীবনের জন্য সরকার সক্রিয়ভাবে উদ্যোগ নিচ্ছে। শিগগিরই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত ঘোষণা হবে বলে তিনি শনিবার আল্লুরি সীতারাম রাজু জেলার পাদেরু মণ্ডলের লাগিসিপল্লি গ্রামে বিশ্ব আদিবাসী দিবসের অনুষ্ঠানে জানান।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “জি.ও. নিয়ে আলোচনা চলছে এবং উপজাতি সম্প্রদায়ের সর্বাধিক সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য এটি কীভাবে ফিরিয়ে আনা যেতে পারে।” ২০২০ সালে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বাতিল হওয়া এই সরকারি আদেশ পুনর্বহালের দাবি দীর্ঘদিন ধরে আদিবাসীরা জানিয়ে আসছেন। তিনি আরোও বলেন, “এগিয়ে যাওয়ার পথে বেশ কয়েকটি পরামর্শ পাওয়া গেছে। একটি ছোট ভুল আরও বিলম্বের কারণ হতে পারে, যে কারণে একটি সক্রিয় এবং সাবধানতার সাথে বিবেচনা করা জরুরি।”

   

নাইডু জোর দিয়ে বলেন যে এনডিএ সরকার জেলার আদিবাসী সম্প্রদায়ের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি এবং আয় বৃদ্ধির জন্য ধারাবাহিকভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

কল্যাণ ও উন্নয়ন প্রকল্প

নাইডু জানান, এনটিআর ভরোসা প্রকল্পের অধীনে বর্তমানে ৩.৭৭ লক্ষের বেশি আদিবাসীকে মাসিক পেনশন দেওয়া হচ্ছে, যার বার্ষিক ব্যয় ১,৫৯৫ কোটি টাকা। ৪.৮২ লক্ষ পরিবার পাচ্ছে প্রতি মাসে ২০০ ইউনিট বিনামূল্যে বিদ্যুৎ, এবং শিগগিরই শুরু হবে বিনামূল্যে ছাদে সৌর প্যানেল স্থাপন।
থাল্লিকি বন্দনম প্রকল্পে ৪.৮৬ লক্ষের বেশি ছাত্রীর মায়েদের অ্যাকাউন্টে সরাসরি ৬৪২ কোটি টাকা জমা হয়েছে।

দক্ষতা উন্নয়নে সরকার পর্যটন, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও হস্তশিল্পে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তুলবে। মানব সম্পদ উন্নয়ন ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী নরা লোকেশ ৩৭৩টি নতুন স্কুল ভবনের জন্য বরাদ্দ করেছেন ৪৫ কোটি টাকা। স্বাস্থ্যসেবায় সিকেল সেল অ্যানিমিয়ায় আক্রান্ত ১,৪৮৭ জন পাচ্ছেন মাসিক ১০,০০০ টাকা পেনশন। গর্ভবতী নারীদের নিরাপদ প্রসবের জন্য ৭৬টি প্রসব-পূর্ব কক্ষ আধুনিকীকরণ, ৩৫টি নতুন ভবন নির্মাণ ও ১৫টি সংস্কারের কাজ চলছে।

কৃষি ও কফি চাষ

Advertisements

আরাকু কফি চাষ এক লক্ষ একর বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। বর্তমানে ১১টি মণ্ডলে ২.৫৮ লক্ষ একর জমিতে কফি চাষ হয়, যা ২.৪৬ লক্ষ মানুষের জীবিকা। এছাড়া ১.৮০ লক্ষ একরে চেরি চাষে বছরে ৯০,০০০ টন উৎপাদন হচ্ছে। আদিবাসীরা আম, সপোতা, কাজু, কাঁঠাল, জামুন, লেবু, কাস্টার্ড আপেল ও জাফরান চাষেও সফলতা পাচ্ছেন।

অবকাঠামো ও পর্যটন

এক বছরে ২০০ কোটি টাকায় ২৬৯ কিমি বিটি রাস্তা নির্মাণে ২০৩টি গ্রাম সংযুক্ত হয়েছে। উপজাতি অঞ্চলে ৫১৫ কিমি জাতীয় সড়ক নির্মাণে চলছে ৮,৫৭০ কোটি টাকার কাজ। আগামী কয়েক বছরে ১,৪৮৩টি বসতিতে ২,৮৫০ কোটি টাকার সড়ক সংযোগ তৈরি হবে, যা এএসআর জেলাকে ‘ডোলিমুক্ত’ করবে। এই মাসের মধ্যেই ডিএসসির মাধ্যমে শিক্ষক পদ পূরণ হবে।

আরাকু, লাম্বাসিঙ্গি ও মারেডুমিল্লিকে পর্যটন ক্লাস্টার হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। উপজাতি এলাকায় ১,০০০ হোমস্টে স্থাপনে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।

অনুষ্ঠানে মন্ত্রী গুম্মাদি সন্ধ্যা রানী, জেলা কালেক্টর এ.এস. দীনেশ কুমার ও পুলিশ সুপার অমিত বরদা উপস্থিত ছিলেন। পরে মুখ্যমন্ত্রী উপজাতিদের তৈরি পণ্যের প্রদর্শনী পরিদর্শন করেন।