কয়েক কোটি টাকার মাদক উদ্ধার, গ্রেফতার ১২

চণ্ডীগড়: আন্তঃরাজ্য মাদকচক্রের (Inter-state narcotics network) বিরুদ্ধে বড়সড় সাফল্য অর্জন করল চণ্ডীগড় পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ। ট্রাইসিটি এবং পার্শ্ববর্তী রাজ্যজুড়ে সক্রিয় দুটি সংগঠিত নারকোটিকস সিন্ডিকেটকে ভেঙে দিয়ে মোট ১২ জন অপরাধীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযানে বাজেয়াপ্ত হয়েছে ৮.১৫ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের কোকেন, হেরোইন, সিন্থেটিক ড্রাগ, নগদ টাকা, সোনা-রুপোর গয়না এবং একাধিক গাড়ি।

Advertisements

ক্রাইম ব্রাঞ্চের এসপি জসবীর সিংহ এনডিটিভিকে জানান, দুটি পৃথক এফআইআরের তদন্তের ভিত্তিতে ধারাবাহিক অভিযান চালানো হয়। গোপন সূত্রে তথ্য পাওয়া মাত্রই বিভিন্ন এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয় এবং পরপর একাধিক স্থানে হানা দেয় পুলিশ। উদ্দেশ্য ছিল আন্তঃরাজ্য নেটওয়ার্কে যুক্ত সংগঠিত মাদক সরবরাহ চক্রকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করা।

   

প্রথমে সেক্টর ৪০ এলাকা থেকে গ্রেফতার হয় আশ্বনি কুমার ওরফে আশু। তার কাছে থেকে উদ্ধার হয় ৪৭.৮০ গ্রাম হেরোইন। আশুর জেরা থেকেই উঠে আসে আরও কয়েকজনের নাম। পুলিশ এরপর গ্রেফতার করে সোনু ওরফে কাল্লু এবং সালমানকে, যাদের কাছ থেকে আরও ১০০.৬০ গ্রাম হেরোইন এবং ২.০১ গ্রাম আইস (ICE) উদ্ধার হয়।

তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ক্রাইম ব্রাঞ্চের নজরে আসে আরেক বড় কারবারি—সুনীল ওরফে দার্চি এবং অনুপ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে উঠে আসে ধাকোলি, জিরকপুরের বাসিন্দা বন্টির নাম—যিনি ছিলেন আন্তঃরাজ্য সরবরাহ চক্রের মূল হোতা।

বন্টির বাড়িতে হানা দিয়ে পুলিশ উদ্ধার করে ৫২৩ গ্রাম কোকেন, ২০.৬৪ লক্ষ টাকা নগদ, সোনার গয়না ও সামগ্রী।পরে আরও তল্লাশি অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করা হয় অতিরিক্ত ৪৯০ গ্রাম কোকেন, হেরোইন, ক্র্যাক বল এবং নগদ টাকা। সব মিলিয়ে প্রথম সিন্ডিকেট থেকে বাজেয়াপ্ত হয়েছে ১.০২ কেজি কোকেন, ১৯৭ গ্রাম হেরোইন, ২.০১ গ্রাম ICE, ২১ লক্ষ টাকা নগদ ও দুটি গাড়ি।

তদন্তে জানা যায়, বন্টি দিল্লির সাপ্লায়ার সানির কাছ থেকে বড় পরিমাণ কোকেন আনত এবং আফ্রিকান নাগরিকদের কাছ থেকেও বিভিন্ন সিন্থেটিক মাদক সংগ্রহ করত। তার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে চণ্ডীগড়জুড়ে পেডলারদের হাতে মাদক পৌঁছে যেত।

Advertisements

১৯ নভেম্বর দ্বিতীয় অভিযানে গ্রেফতার হয় রাহুল ও অরুণ কুমার। তাদের কাছ থেকে ১৪৬.৩৬ গ্রাম কোকেন উদ্ধার হয়। এর পরে ধরা পড়ে আরও চারজন—ইন্দরজিৎ সিংহ ওরফে রোহিত, টিন্কু, আকাশ এবং বিশাল।

পুলিশ জানায়, অরুণ কুমার ছিল সিন্ডিকেটের মূল হ্যান্ডলার, যে দিল্লি থেকে সরাসরি কোকেন আনত।রাহুল ‘ড্রপ পয়েন্ট’-এর মাধ্যমে ক্রেতাদের কাছে পণ্য পৌঁছে দিত GPS লোকেশন পাঠিয়ে রাখা হত মাদক।

আকাশ সামলাত আর্থিক লেনদেন, ব্যবহৃত হতো একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট। ইন্দ্রজিৎ ছিল পাঞ্জাবের সাপ্লায়ার গিলের সঙ্গে যোগসূত্র রক্ষা করা ব্যক্তি। এই চক্র থেকে উদ্ধার হয়েছে ১৮৪ গ্রাম কোকেন, ২৭৯ গ্রাম হেরোইন, ৫ লক্ষ টাকা নগদ, সোনা-রুপোর গয়না, দুটি গাড়ি ও নোট-কাউন্টিং মেশিন।

পুলিশ জানিয়েছে, দুই মাদকচক্রই ডিজিটাল পেমেন্ট, প্রক্সি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, কোডেড ‘ড্রপ পয়েন্ট’ এবং আন্তঃরাজ্য রুট ব্যবহার করে কার্যক্রম চালাত। তদন্ত চলছে এবং আরও গ্রেফতার হতে পারে।