কানাডা সরকার (India-Canada relation) শুক্রবার একটি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ক্যালগারি থেকে প্রকাশিত এক সংবাদ প্রতিবেদনে দাবি করা যে, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অমিত শাহ এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল খালিস্তানি সন্ত্রাসী হারদীপ সিং নিজ্জারের হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন, সেই দাবি অসত্য এবং ভিত্তিহীন। কানাডার সরকার (India-Canada relation) এই অভিযোগের কোনো ধরনের প্রমাণ খুঁজে পায়নি এবং একে সম্পূর্ণ মিথ্যা হিসেবে অভিহিত করেছে।
গত অক্টোবর মাসে, কানাডার (India-Canada relation) রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ (RCMP) এবং অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তারা দেশের নিরাপত্তার জন্য একাধিক অভিযোগ প্রকাশ করেছিলেন, যার মধ্যে দাবি করা হয়েছিল যে ভারতের সরকারী এজেন্টরা কানাডার মাটিতে গুরুতর অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত। এর পরিপ্রেক্ষিতে, কানাডার (India-Canada relation) সংবাদপত্রে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়, যেখানে দাবি করা হয়েছিল যে মোদী, শাহ, সুষমা স্বরাজ (তৎকালীন বিদেশমন্ত্রী) এবং ডোভাল নিজ্জারের হত্যার পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতেন এবং তাদের অনুমোদন ছিল। এই প্রতিবেদনটি অভিযোগ করেছে যে, ভারতীয় সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত ছিলেন।
কানাডা সরকারের (India-Canada relation) পক্ষ থেকে দ্রুতই একটি বিবৃতি দেওয়া হয়, যাতে বলা হয়েছিল যে, এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি যা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, বিদেশমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর অথবা জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালকে এই অপরাধের সাথে জড়িত বলে প্রমাণিত করে। কানাডা সরকারের (India-Canada relation) মুখপাত্র একে “অন্যায় এবং অবাস্তব” মন্তব্য হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
কানাডা সরকারের (India-Canada relation) বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, “অক্টোবর ১৪ তারিখে, ক্যানাডিয়ান (India-Canada relation) নিরাপত্তা বাহিনী দেশের নিরাপত্তার জন্য অতিরিক্ত পদক্ষেপ হিসেবে কিছু গুরুতর অপরাধের অভিযোগ প্রকাশ করে, যেগুলি ভারতের সরকারের এজেন্টদের দ্বারা কানাডায় সংঘটিত হয়েছিল। তবে, এই অভিযোগে ভারতীয় সরকারের কোন উঁচু পদস্থ কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।”
এদিকে, ভারত সরকার এই প্রতিবেদনের প্রতি নিজেদের ঘৃণা জানিয়ে একটি শক্তিশালী প্রতিবাদ জানিয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রক এই প্রতিবেদনের জন্য কানাডার (India-Canada relation) সংবাদপত্রকে ‘অসত্য’ এবং ‘রুচিহীন’ বলে অভিহিত করেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রন্ধীর জৈস্বাল বলেছেন, “আমরা সাধারণত মিডিয়া প্রতিবেদন সম্পর্কে মন্তব্য করি না, তবে এই ধরনের মিথ্যা দাবিকে তাচ্ছিল্য করা উচিত। এই ধরনের অপপ্রচারের মাধ্যমে আমাদের দেশের বিরুদ্ধে ক্ষতিকর প্রচারণা চালানো হচ্ছে, যা কেবল আমাদের পরস্পরের সম্পর্ককে আরও কঠিন করে তুলবে।”
ভারত নিয়মিতভাবে নিজ্জারের হত্যাকাণ্ডে নিজেদের জড়িত থাকার অভিযোগ নাকচ করে আসছে। ভারত বলছে, কানাডা প্রায়ই খালিস্তানি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলির প্রতি সমর্থন জানিয়ে তাদের মাটি থেকে কার্যকলাপ চালিয়ে আসছে। ভারতের মতে, কানাডা তার মাটিতে খালিস্তানি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিরাপত্তা এবং সমর্থন দিচ্ছে, যা ভারতীয় স্বার্থের পরিপন্থী।
এই বিতর্ক আরো তীব্র হয়ে ওঠে যখন গত মাসে কানাডার রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ (RCMP) দাবি করে, ভারতীয় সরকারী এজেন্টরা কানাডার মাটিতে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত, যার মধ্যে হত্যাকাণ্ড, চাঁদাবাজি এবং হুমকি দেয়া অন্তর্ভুক্ত। এর পরপরই, দুই দেশ একে অপরকে শীর্ষ কূটনীতিকদের বহিষ্কার করেছে, যা দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের আরও অবনতি ঘটিয়েছে।
ভারত-কানাডা সম্পর্কের ওপর এই প্রভাব
কানাডা ও ভারতের সম্পর্ক মূলত বিভিন্ন ক্ষেত্র, যেমন বাণিজ্য, নিরাপত্তা, পরিবেশ এবং শিক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে, খালিস্তানি আন্দোলন এবং সম্প্রতি নিজ্জারের হত্যাকাণ্ড নিয়ে এই সম্পর্কের মধ্যে চরম টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়েছে। ভারতে নিপীড়িত খালিস্তানি সন্ত্রাসীদের প্রতি কানাডার সহানুভূতির কারণে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক মাঝে মাঝে উত্তেজিত হয়।
দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের এই সংকট, বিশেষত চলতি বছরে ঘটে যাওয়া ঘটনাবলির পর, ভারতের পক্ষ থেকে কূটনৈতিক স্তরে সঠিক পদক্ষেপের কথা বলা হয়েছে, যা ভবিষ্যতে সম্পর্কের পুনর্নির্মাণে সাহায্য করবে।