ভারত–পাকিস্তান আন্তর্জাতিক সীমান্ত বরাবর পাঞ্জাবে আবারও মাদক ও অস্ত্র পাচারের চেষ্টা ভেস্তে দিল (BSF) বিএসএফ। গোপন সূত্রের খবরের ভিত্তিতে টহল চালিয়ে বিএসএফের জওয়ানরা একাধিক অভিযানে ড্রোন, একটি পিস্তল এবং এক কিলোগ্রামেরও বেশি হেরোইন উদ্ধার করেছেন। ইতিমধ্যেই এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সন্দেহভাজনকে পাকড়াও করল টহলদল
শুক্রবার রাতে অমৃতসরের অটারি সীমান্ত এলাকায় নিয়মিত টহল চলাকালীন বিএসএফ (BSF) জওয়ানদের চোখে পড়ে এক ব্যক্তির সন্দেহজনক গতিবিধি। তাকে ঘিরে ফেলে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়। প্রথমে মেলেনি কোনও স্পষ্ট জবাব। পরে বিস্তারিত তল্লাশির পর তার কাছ থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও উপকরণ উদ্ধার হয়, যা তাকে পাচারচক্রের সঙ্গে যুক্ত বলে প্রমাণ করে। এরপর ওই ব্যক্তিকে আটক করে পাঞ্জাব পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতকে জেরা করে পাচারচক্রের পেছনের মূলচক্রিদের খোঁজে নেমেছে তদন্তকারীরা।
ড্রোনের মাধ্যমে মাদক পাচারের চেষ্টা
সাম্প্রতিক সময়ে সীমান্তে মাদক পাচারের অন্যতম কৌশল হয়ে দাঁড়িয়েছে ড্রোন। পাকিস্তান সীমান্ত পেরিয়ে এদেশে হেরোইন, অস্ত্র ও অন্যান্য অবৈধ সামগ্রী পাঠাতে বারবার ব্যবহার করা হচ্ছে ড্রোন প্রযুক্তি। এদিনের অভিযানে বিএসএফ একটি ড্রোন আটক করে, যাতে লুকিয়ে রাখা ছিল এক কিলোগ্রামেরও বেশি হেরোইন। এই হেরোইনের আন্তর্জাতিক বাজারমূল্য কয়েক কোটি টাকা বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অস্ত্র উদ্ধার
ড্রোনের সঙ্গে মাদক উদ্ধারের পাশাপাশি বিএসএফ (BSF) জওয়ানরা একটি দেশি পিস্তলও উদ্ধার করেছেন। গোয়েন্দাদের ধারণা, এই অস্ত্র মাদকচক্রের সহযোগীদের হাতে তুলে দেওয়া হত, যাতে পাচার রুটকে সুরক্ষিত রাখা যায়। সীমান্তের ওপার থেকে মাদক ছাড়াও নিয়মিত অস্ত্র পাচারেরও চেষ্টা চলছে বলে জানাচ্ছেন বিএসএফ আধিকারিকরা।
দুই জনের গ্রেপ্তারি
এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে ইতিমধ্যেই দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি, মোবাইল ফোন এবং সন্দেহজনক যোগাযোগের তথ্য মিলেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃতরা স্বীকার করেছে, পাকিস্তানি দিক থেকে ড্রোন পাঠিয়ে মাদক ও অস্ত্র সরবরাহের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তারা সেই চালান সীমান্ত এলাকা থেকে সংগ্রহ করে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে দেওয়ার কাজে যুক্ত ছিল।
বিএসএফের কড়া নজরদারি
বিএসএফের (BSF) এক আধিকারিক জানিয়েছেন, সীমান্ত এলাকায় সাম্প্রতিক কালে ড্রোনের গতিবিধি বেড়েছে। এর মোকাবিলা করতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিশেষ নজরদারি চালানো হচ্ছে। নাইট ভিশন ডিভাইস, অ্যান্টি-ড্রোন সিস্টেম এবং অতিরিক্ত টহল বাড়ানো হয়েছে। সীমান্তে যে কোনও ধরনের অবৈধ অনুপ্রবেশ রুখতেই এই তৎপরতা।
মাদকচক্রের জাল ছিন্ন করার লড়াই
পাঞ্জাব দীর্ঘদিন ধরেই মাদক সমস্যায় জর্জরিত। তরুণ প্রজন্মের একটি বড় অংশকে ধ্বংস করছে হেরোইনসহ নানান ধরনের মাদক। সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তান থেকে আসা এই মাদকের হাত ধরেই গড়ে উঠেছে এক বিশাল চক্র। এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে আন্তর্জাতিক দুষ্কৃতী নেটওয়ার্ক। বিএসএফ ও পাঞ্জাব পুলিশ মিলিতভাবে এই চক্রকে ভাঙার চেষ্টা করছে।