মুম্বই: শুক্রবার ফের বোমা হুমকির ই-মেল ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়াল বোম্বে হাইকোর্টে (Bombay High Court)। আদালতের সরকারি ই-মেল আইডিতে বোমা হামলার হুমকি আসার পরই নড়েচড়ে বসে মুম্বই পুলিশ। মুহূর্তে আদালত চত্বর ঘিরে ফেলে বিশাল নিরাপত্তা বাহিনী। শুরু হয় খুঁটিনাটি তল্লাশি। আদালতের সব কর্মচারী, আইনজীবী ও মামলাকারীদের দ্রুত বাইরে বেরিয়ে যেতে বলা হয়। প্রায় দুই ঘণ্টা স্থগিত থাকে আদালতের কাজকর্ম। তবে শেষ পর্যন্ত কিছুই পাওয়া যায়নি। পুলিশ জানায়, হুমকিটি সম্পূর্ণ ভুয়ো।
এটি ছিল এক সপ্তাহের মধ্যে বোম্বে হাইকোর্টে দ্বিতীয় বোমা হুমকি। গত ১২ সেপ্টেম্বর একইভাবে আদালতের ই-মেলে বোমার খবর আসে। তখনও আদালতের কার্যক্রম থমকে দাঁড়ায়। দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত তল্লাশি চলার পর হুমকিকে ভুয়ো ঘোষণা করে পুলিশ।
একই দিনে দিল্লি হাইকোর্টও হুমকি পেয়েছিল। সেখানেও দাবি করা হয়েছিল যে তিনটি বিস্ফোরক আদালত প্রাঙ্গণে রাখা হয়েছে। ভোরবেলা হুমকি পাওয়ার পরেই দিল্লি পুলিশ ও বোম স্কোয়াড গোটা এলাকা ঘিরে ফেলে। কিন্তু কোনও সন্দেহজনক বস্তু উদ্ধার হয়নি।
তারপরের দিন, দিল্লির দুটি বেসরকারি হাসপাতাল—দ্বারকার ম্যাক্স হাসপাতাল এবং শালিমারবাগের শাখায় বোমা হুমকি আসে। পুলিশ ও দমকল বাহিনী চূড়ান্ত তল্লাশি চালিয়েও কিছু পায়নি। একই দিনে দিল্লির তাজ প্যালেস হোটেলেও বোমা হামলার হুমকি আসে। সেটিও হোক্স বলে প্রমাণিত হয়।
এদিকে সোমবার গুজরাট হাইকোর্টে একইভাবে বোমা হামলার হুমকি পাঠানো হয়েছিল ই-মেলের মাধ্যমে। এ বছর জুন মাস থেকে এ নিয়ে তিনবার একই ধরনের হুমকি এসেছে গুজরাট হাইকোর্টে। প্রতিবারই তা ভুয়ো প্রমাণিত হয়েছে।
ক্রমাগত এই ধরনের ভুয়ো হুমকিতে প্রশাসন ও সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ বেড়েই চলেছে। আদালত, হাসপাতাল, হোটেল—সব ক্ষেত্রেই বারবার একই কৌশল ব্যবহার করছে দুষ্কৃতীরা। সাইবার সেল মনে করছে, এর পিছনে বড় কোনও চক্র কাজ করছে। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, এই ভুয়ো আতঙ্ক ছড়ানোদের চিহ্নিত করে কড়া শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের মেল পাঠানো শুধুমাত্র জনসাধারণকে আতঙ্কিত করার উদ্দেশ্যে নয়, বরং আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গ করারও একটি প্রচেষ্টা। প্রশাসনের তরফে সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকার পাশাপাশি ভুয়ো খবর ছড়িয়ে না দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।
একাধিক হাইকোর্টে একসঙ্গে বোমা হুমকি আসা নিঃসন্দেহে দেশের বিচারব্যবস্থার নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। এই ঘটনার তদন্ত ইতিমধ্যেই জোরকদমে শুরু হয়েছে।