BJP: ২৪টি আসনে বিজেপির জয় অনিশ্চিত, ভরসা পিসির ‘একলা চলো’ নীতি

দু’ডজন লোকসভা কেন্দ্রে পরাজয় নিশ্চিত বলেই বিজেপির (BJP) সাংগঠনিক রিপোর্ট চলে গেছে দিল্লিতে। তবে এই রিপোর্টে গুরুত্বপূর্ণ ‘নোট’ দিয়ে বলা হয়েছে এই আসনগুলির অন্তত ৫০…

BJP

দু’ডজন লোকসভা কেন্দ্রে পরাজয় নিশ্চিত বলেই বিজেপির (BJP) সাংগঠনিক রিপোর্ট চলে গেছে দিল্লিতে। তবে এই রিপোর্টে গুরুত্বপূর্ণ ‘নোট’ দিয়ে বলা হয়েছে এই আসনগুলির অন্তত ৫০ শতাংশ অনুকূলে আসবে যদি ঠিক মতো খেলা হয়। পরিস্থিতি বিচার করে পিসি-ভাইপোর মধ্যে লড়ালড়ি লাগিয়ে দিতে মরিয়া বিজেপি। ত্রিকোণ যুদ্ধে শেষ হাসি কার এ নিয়ে রাজনৈতিক কাটাছেঁড়া চলছে।

বিজেপির ভরসা পিসি। তিনি খেললেই জয় নিশ্চিত। নচেত পরিস্থিতি কঠিন। কারণ, দক্ষিণ থেকে তেমন লাভদায়ক ফল আসছে না। ভরসা উত্তর ও পশ্চিম আর হিন্দি বলয়ের রাজ্যগুলি।

লোকসভা নির্বাচন নিয়ে ফের আলোচনার কেন্দ্রে চলে এসেছে (বহুজন সমাজ পার্টি) বিএসপি। দলটির নেত্রী মায়াবতী ইন্ডিয়া জোটে যোগ দেবে কি না, তা নিয়ে আলোচনা চলছে।  মায়াবতী বিরোধী জোটে যোগ দিলে তা দ্বিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পরিণত হবে। তিনি উত্তর প্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁকে বুয়াজি অর্থাৎ পিসির সম্মান দেন সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব। সেই সম্পর্কের খাতিরে অপর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ হলেন ভাতিজা অর্থাত ভাইপো।

তবে বিএসপি প্রধান মায়াবতী লোকসভা নির্বাচনে একা লড়ার কথা বারবার পুনরাবৃত্তি করছেন, কিন্তু তারপরেও বিএসপির INDIA মঞ্চে যোগ দেওয়ার বিষয়ে জল্পনা চলছে। বিএসপি জোটের অংশ হোক বা না হোক, উভয় ক্ষেত্রেই নির্বাচনের রাজনৈতিক সমীকরণ বদলাতে সময় লাগবে না। মায়াবতী যদি বিরোধী জোটে যোগ দেন, তাহলে ইউপির বেশির ভাগ আসনেই বিজেপির সঙ্গে সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে এবং তিনি যদি ‘একলা চলো’-তে অটল থাকেন, তাহলে তা হবে ত্রিকোণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা। এমন পরিস্থিতিতে সকলের চোখ বিএসপির দিকে।

বিএসপি যদি তাদের রাজনৈতিক কৌশল বদল করে, তাহলে কি ২০২৪ সালের সমস্ত সমীকরণ বদলে যাবে? উত্তর প্রদেশে  ত্রিকোণ লড়াইয়ের কারণে, এসপি-কংগ্রেস জোটের ক্ষতি হবে বলে মনে করা হচ্ছে এবং বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ লাভবান হবে। বিজেপি বিশেষত সেই আসনগুলিতে লাভবান হবে বলে আশা করা হচ্ছে যেখানে জনসংখ্যা প্রধানত মুসলিম, দলিত এবং অনগ্রসর। এসপি-কংগ্রেস এবং বিএসপির মধ্যে ভোটারদের বিভাজন এনডিএ-র জয়ের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেবে।

বিএসপি যেভাবে ইউপি লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে, তাতে ২০১৪ সালের মতো ফল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আসন সমীকরণের কথা মাথায় রেখেই লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী দেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন মায়াবতী। মুসলিম অধ্যুষিত আসনে মুসলিম প্রার্থীদের বাজি ধরার প্রস্তুতি চলছে, একই আসনে এসপি-কংগ্রেস জোটও মুসলিম প্রার্থীদের প্রতি আস্থা প্রকাশ করছে। উদাহরণস্বরূপ, দানিশ আলি আমরোহা লোকসভা আসনে কংগ্রেস থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে, আর বিএসপিও এই আসনে একজন মুসলিম প্রার্থীকে প্রার্থী করছে। একইভাবে, মেরঠ, বিজনৌর, সাহারানপুর, কাইরানা, মোরাদাবাদ এবং সম্বল লোকসভা আসনে মুসলিম প্রার্থী দেওয়ার কৌশল রয়েছে।

বিএসপি যদি তার ‘একলা চলো’ রাজনৈতিক কৌশল পরিবর্তন করে এবং বিরোধী জোটের অংশ হয়, তাহলে লোকসভা নির্বাচনের রাজনৈতিক সমীকরণ পুরোপুরি বদলে যাবে। কংগ্রেস, বিএসপি এবং এসপি একসঙ্গে নির্বাচনে লড়লে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নতুন মোড় আসবে।২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে, বিএসপি এসপি-আরএলডি জোটের সাথে লড়াই করে ১০টি লোকসভা আসন জিতেছিল।

২০১৪ সালে এককভাবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে দলটি শূন্যে নেমে আসে। উত্তরপ্রদেশে বিজেপির জয় ঠেকাতে, যেখানে সর্বাধিক ৮০টি লোকসভা আসন রয়েছে, কংগ্রেস বিরোধী জোটে এসপি সহ বিএসপি-কে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য ক্রমাগত চেষ্টা করছে, তিনি রাজি হলেই বিজেপি অনেক আসনেই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে।

ইউপিতে প্রায় দুই ডজন লোকসভা আসন রয়েছে, যেখানে দলিত ও মুসলিম ভোট একটি নির্ধারক ভূমিকা পালন করে। মায়বতী ইন্ডিয়া জোটে গেলেই বিজেপির পক্ষে এই আসনগুলি ধরে রাখা কঠিন হবে।