ইন্ডিয়া জোটের উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী বি সুদর্শন রেড্ডি (Vice President)। পদপ্রার্থীর নাম ঘোষণা হওয়ার পরেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে গুজন। এই গুঞ্জনের সূত্রপাত ২০১১ সালের একটি মামলা এবং তার রায়। ইন্ডিয়া জোটের প্রার্থী সুদরাসান রেড্ডি ২০১১ সালে নন্দিনী সুন্দরের করা একটি মামলায় সলওয়া জুডুমকে অবৈধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছিলেন। যা মাওবাদী বিরোধী অভিযানকে দুর্বল করেছিল।
রাজনৈতিক মহলের একাংশের বলছেন, বিজেপি সরকার যখন দেশে মাওবাদী নির্মূলের লক্ষ্য পূরণের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, তখন বিরোধী জোট এমন একজন প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়েছে, যাঁর অতীত রায় মাওবাদীদের বিরুদ্ধে লড়াইকে বাধাগ্রস্ত করেছিল। এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে বিজেপি তীব্র সমালোচনার সুর চড়াতে পারে। যা উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে।
নন্দিনী সুন্দরের মামলা ও সলওয়া জুডুম
২০১১ সালে সুপ্রিম কোর্টে নন্দিনী সুন্দরের দায়ের করা একটি মামলায় বিচারপতি বি সুদর্শন রেড্ডি এবং বিচারপতি এস এস নিজ্জর ছত্তিশগড়ে সলওয়া জুডুমকে অবৈধ ঘোষণা করেন। সলওয়া জুডুম ছিল ছত্তিশগড় সরকারের একটি মাওবাদী বিরোধী উদ্যোগ, যেখানে স্থানীয় আদিবাসীদের বিশেষ পুলিশ অফিসার (এসপিও) হিসেবে নিয়োগ করে মাওবাদীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ব্যবহার করা হত।
নন্দিনী সুন্দর এবং অন্যান্য মানবাধিকার কর্মীরা অভিযোগ করেছিলেন যে, সলওয়া জুডুম মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে এবং এটি সাংবিধানিকভাবে অবৈধ। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে এই উদ্যোগ বন্ধ করা হয় এবং এসপিওদের নিয়োগ অবৈধ ঘোষণা করা হয়। এই রায়ের পর সলওয়া জুডুম ভেঙে দেওয়া হয়, যা মাওবাদী বিরোধী অভিযানে বড় ধাক্কা হিসেবে বিবেচিত হয়েছিল।
বিজেপি দাবি করতে পারে, ইন্ডিয়া জোটের উপরাষ্ট্রপতি প্রার্থী এই রায়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, যা দেশের নিরাপত্তার জন্য ক্ষতিকর ছিল। তাঁদের মতে, মাওবাদী সমস্যা ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ, এবং সলওয়া জুডুমের মতো উদ্যোগ ছিল এই সমস্যা মোকাবিলার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন উঠেছে, সুপ্রিম কোর্টের এই রায় মাওবাদীদের বিরুদ্ধে লড়াইকে দুর্বল করেছিল এবং এই প্রার্থীর মনোনয়ন জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি ইন্ডিয়া জোটের উদাসীনতার প্রমাণ। তারা এই ইস্যুকে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রচারে বিরোধীদের ঘায়েল করতে চাইছে।
সমোলোচকরা বলছেন, “যখন মোদী সরকার মাওবাদী সমস্যা সমাধানে দৃঢ় পদক্ষেপ নিচ্ছে, তখন বিরোধীরা এমন একজনকে প্রার্থী করেছে, যিনি মাওবাদী বিরোধী অভিযানকে বাধা দিয়েছিলেন। এটি দেশের নিরাপত্তার সঙ্গে আপস।”
রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আনন্দপুরের খাল থেকে উদ্ধার যুগলের দেহ
তবে রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন ইন্ডিয়া জোটের উপরাষ্ট্রপতি প্রার্থীকে নিয়ে মাওবাদী ইস্যুতে বিজেপি সরব হতে পারে। আবার সমোলোচকরা বলছেন ২০১১ সালের সলওয়া জুডুম রায়কে কেন্দ্র করে এই বিতর্ক উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রচারে বড় ভূমিকা পালন করতে পারে।