BJP MPs Face Backlash for Challenging Supreme Court with ‘Tubelight’ and ‘Thumbs-Up’ Jibes
সুপ্রিম কোর্ট এবং প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে বিজেপি সাংসদ (bjp mps) নিশিকান্ত দুবে এবং দিনেশ শর্মার বিতর্কিত মন্তব্য রাজনৈতিক মহলে ঝড় তুলেছে। এই মন্তব্যের জেরে বিরোধী দলগুলি তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। এআইএমআইএম প্রধান ও হায়দ্রাবাদের সাংসদ আসাদুদ্দিন ওয়াইসি গোড্ডার সাংসদ দুবের বিরুদ্ধে কড়া সমালোচনা করে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উচিত আদালতের বিরুদ্ধে হুমকি দেওয়া বন্ধ করা।
কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা জয়রাম রমেশ কেন্দ্রীয় সরকারের উপর সুপ্রিম কোর্টকে দুর্বল করার অভিযোগ তুলেছেন। তবে, বিজেপি দ্রুত এই মন্তব্য থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে নিয়েছে এবং এগুলোকে “ব্যক্তিগত মতামত” হিসেবে উল্লেখ করে “পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান” করেছে।
বিতর্কের কেন্দ্রে সুপ্রিম কোর্টের রায়
এই বিতর্কের পেছনে রয়েছে সুপ্রিম কোর্টের একটি গুরুত্বপূর্ণ রায়, যা গত ৮ এপ্রিল বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং আর মহাদেবনের বেঞ্চে প্রকাশিত হয়। তামিলনাড়ু সরকারের একটি আবেদনের প্রেক্ষিতে এই রায়ে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি এবং রাজ্যপালদের দ্বিতীয়বার পাঠানো আইনের বিল তিন মাসের মধ্যে অনুমোদন করতে হবে।
আদালত আরও জানিয়েছে, কোনও বিলের সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার শুধুমাত্র আদালতের। এই রায় কার্যত রাষ্ট্রপতি এবং কাউন্সিল অব মিনিস্টার্সের ক্ষমতা সীমিত করেছে, যারা রাষ্ট্রপতিকে পরামর্শ দেন। একাধিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কেন্দ্র সরকার এই রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ পিটিশন দাখিল করার পরিকল্পনা করছে।
নিশিকান্ত দুবের আক্রমণ (bjp mps)
নিশিকান্ত দুবে (bjp mps) সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে বলেন, “যদি সুপ্রিম কোর্টই সব সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে সংসদ বন্ধ করে দেওয়া উচিত। আদালতের একমাত্র উদ্দেশ্য ‘মুখ দেখে আইন দেখানো’। সুপ্রিম কোর্ট তার সীমা অতিক্রম করছে।”
তিনি সমকামিতা বৈধকরণের রায়ের সমালোচনা করে বলেন, “আর্টিকেল ৩৭৭-এ সমকামিতা অপরাধ ছিল। ট্রাম্প প্রশাসন বলেছে, পৃথিবীতে শুধু পুরুষ এবং মহিলা—দুটি লিঙ্গ আছে। হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, জৈন, শিখ—সবাই সমকামিতাকে অপরাধ মনে করে। কিন্তু একদিন সকালে সুপ্রিম কোর্ট বলল, আমরা এটি বাতিল করছি।”
তিনি আরও বলেন, “রাম মন্দির, কৃষ্ণ জন্মভূমি বা গয়ানবাপী ইস্যুতে আদালত বলে, ‘কাগজ দেখাও’। কিন্তু মোগলদের আগমনের পর নির্মিত মসজিদের ক্ষেত্রে বলে, ‘কাগজ কোথায় পাবে?’ সুপ্রিম কোর্ট ধর্মীয় যুদ্ধকে উস্কে দিচ্ছে।” দুবে (bjp mps) প্রশ্ন তোলেন, “রাষ্ট্রপতি ও রাজ্যপালদের জন্য সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার অধিকার আদালতের কীভাবে হল? রাষ্ট্রপতি প্রধান বিচারপতিকে নিয়োগ করেন। সংসদ আইন তৈরি করে। আপনি সংসদের উপর নির্দেশ দেবেন?”
পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে প্রতিশোধের লড়াইয়ে নিউ চণ্ডীগড়ে আরসিবি
দিনেশ শর্মার মন্তব্য
বিজেপি নেতা (bjp mps) দিনেশ শর্মা বলেন, “কেউ রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করতে পারে না, কারণ রাষ্ট্রপতি সর্বোচ্চ। ড. বিআর আম্বেদকর যখন সংবিধান লিখেছিলেন, তখন বিধানসভা ও বিচার বিভাগের অধিকার স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছিল। সংবিধান অনুযায়ী, কেউ লোকসভা বা রাজ্যসভাকে নির্দেশ দিতে পারে না।”
বিজেপির অবস্থান
বিজেপি দ্রুত এই মন্তব্য থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে নিয়েছে। দলের সভাপতি জেপি নাড্ডা এক্স-এ লিখেছেন, “বিজেপির সঙ্গে নিশিকান্ত দুবে এবং দিনেশ শর্মার (bjp mps) বিচার বিভাগ ও প্রধান বিচারপতি সম্পর্কিত মন্তব্যের কোনও সম্পর্ক নেই। এগুলো তাদের ব্যক্তিগত মতামত। বিজেপি এই মন্তব্য সমর্থন করে না এবং পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করে।” তিনি আরও বলেন, “বিজেপি সবসময় বিচার বিভাগের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং এর নির্দেশ ও পরামর্শ মেনে চলে, কারণ আমরা বিশ্বাস করি, সুপ্রিম কোর্টসহ দেশের সব আদালত গণতন্ত্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ।”
ওয়াইসি ও রমেশের প্রতিক্রিয়া
আসাদুদ্দিন ওয়াইসি দুবের মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করে বলেন, “আপনারা টিউবলাইট, থাম্বস-আপ। আপনারা আদালতকে হুমকি দিচ্ছেন? সংবিধানের আর্টিকেল ১৪২ আম্বেদকর প্রণয়ন করেছিলেন। মোদীজি, আপনার লোকেরা এতটাই উগ্র হয়ে উঠেছে যে তারা আদালতকে হুমকি দিচ্ছে। এদের না থামালে দেশ দুর্বল হবে।”
জয়রাম রমেশ বলেন, “বিজেপি নেতারা সুপ্রিম কোর্টকে দুর্বল করার চেষ্টা করছে। সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর বিরুদ্ধে আইন করা যাবে না। ইলেক্টোরাল বন্ডের মতো বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট সরকারের পদক্ষেপকে অসাংবিধানিক বলেছে। তাই আদালতকে লক্ষ্য করা হচ্ছে।”
উপ-রাষ্ট্রপতির সমালোচনা
এর আগে, উপ-রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ও সুপ্রিম কোর্টের বিরুদ্ধে কঠোর মন্তব্য করেছিলেন। তিনি বলেন, “রাষ্ট্রপতি একটি উচ্চ পদ। তাঁকে সময়সীমার মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হচ্ছে। আমরা কোথায় যাচ্ছি? বিচারপতিরা আইন প্রণয়ন করবেন, সুপার-পার্লামেন্টের ভূমিকা পালন করবেন, কোনও জবাবদিহিতা ছাড়াই। আর্টিকেল ১৪২ গণতান্ত্রিক শক্তির বিরুদ্ধে পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র হয়ে উঠেছে।”
সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা নিয়ে এই বিতর্ক ভারতীয় গণতন্ত্রের তিনটি স্তম্ভ—বিচার বিভাগ, আইনসভা এবং নির্বাহী বিভাগের মধ্যে সীমারেখা নিয়ে নতুন প্রশ্ন তুলেছে। বিজেপি নেতাদের মন্তব্য এবং বিরোধীদের প্রতিক্রিয়া রাজনৈতিক উত্তেজনাকে আরও তীব্র করেছে। সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক রায় এবং এর প্রতিক্রিয়া ভারতের সাংবিধানিক কাঠামোর ভারসাম্য নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার সূচনা করেছে।