‘বিজেপির লোকেরা দুটি এপিক নম্বর পাচ্ছে’! দাবি তেজস্বীর

রবিবার, বিহারের সাসারামে ‘ভোটাধিকার যাত্রা’-র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রীয় জনতা দলের (আরজেডি) নেতা তেজস্বী যাদব (Tejashwi) তীব্র ভাষায় বিজেপি এবং নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন। তিনি…

Tejashwi claims two epic numbers

রবিবার, বিহারের সাসারামে ‘ভোটাধিকার যাত্রা’-র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রীয় জনতা দলের (আরজেডি) নেতা তেজস্বী যাদব (Tejashwi) তীব্র ভাষায় বিজেপি এবং নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন। তিনি বলেন, “লালুজী এবং লোহিয়া সবসময় বলে এসেছেন, ‘ভোটের শাসন মানে ছোট মানুষের শাসন।’’নির্বাচন কমিশনের দুর্নীতিতে বিজেপির লোকেরা দুটো করে এপিক নম্বর পাচ্ছে।’ 

কিন্তু বিজেপির লোকেরা নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে এমন কাজ করাচ্ছে, যা তারা নিজেরা করতে পারছে না। এর মানে তারা আপনাদের ভোটাধিকার কেড়ে নিচ্ছে।” এই যাত্রায় কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী, আরজেডি প্রধান লালু প্রসাদ যাদব এবং অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এই যাত্রার লক্ষ্য হল ভোটারদের অধিকার রক্ষা করা এবং নির্বাচনী তালিকা থেকে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার অভিযোগ তুলে ধরা।

   

তেজস্বী যাদব বলেন, “বিহার হল গণতন্ত্রের জননী। এই মাটিতে গণতন্ত্রের ধ্বংসের চেষ্টা বিজেপি করছে। আমরা এটা হতে দেব না। আমাদের এই ‘ভোটাধিকার যাত্রা’ প্রত্যেক বিহারীকে তাদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার জন্য আয়োজিত হয়েছে।” তিনি আরও অভিযোগ করেন যে, নির্বাচন কমিশন বিজেপির নির্দেশে কাজ করছে এবং বিরোধীদের ভোট কমানোর জন্য ভোটার তালিকা থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষের নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, “বিজেপির লোকেরা শুধু একটি নয়, দুটি ইপিক নম্বর পাচ্ছে, এমনকি বিভিন্ন বুথে ভোট দেওয়ার সুযোগও পাচ্ছে। এটা গণতন্ত্রের সঙ্গে প্রতারণা।”এই যাত্রা ১৭ আগস্ট সাসারাম থেকে শুরু হয়ে গয়া, মুঙ্গের, ভাগলপুর, কাটিহার, পূর্ণিয়া, মধুবনী, দ্বারভাঙা, পশ্চিম চম্পারণ এবং আরা হয়ে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত চলবে।

এরপর ১ সেপ্টেম্বর পাটনায় একটি বিশাল ‘ভোটাধিকার সমাবেশ’-এর মাধ্যমে এই যাত্রা সমাপ্ত হবে। কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কে.সি. ভেনুগোপাল বলেন, “এটি কেবল ভোট নয়, আমাদের সংবিধান এবং গণতন্ত্র রক্ষার লড়াই। যারা আমাদের কঠিন অর্জিত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র করছে, তাদের জনগণ শাস্তি দেবে।”

তেজস্বী যাদব আরও বলেন, “আমরা সুপ্রিম কোর্ট থেকে নির্দেশ পেয়েছি যে, নির্বাচন কমিশনকে বিহারের খসড়া ভোটার তালিকা থেকে ৬৫ লক্ষ ভোটারের নাম বাদ দেওয়ার কারণ প্রকাশ করতে হবে। এটি আমাদের লড়াইয়ের একটি বড় জয়। আমরা জনগণের মধ্যে গিয়ে তাদের ভোটাধিকার সম্পর্কে সচেতন করব এবং স্থানীয় সমস্যাগুলো তুলে ধরব।” তিনি মহাগঠবন্ধনের শাসনের দৃষ্টিভঙ্গিও জনগণের কাছে তুলে ধরার কথা জানান।

Advertisements

আরজেডি প্রধান লালু প্রসাদ যাদবও এই যাত্রায় অংশ নিয়ে বলেন, “আমরা গণতন্ত্র রক্ষার জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছি। ভবিষ্যতেও আমরা এই লড়াই চালিয়ে যাব। আমরা আমাদের ভোটাধিকার কেড়ে নিতে দেব না। বিজেপি সংবিধান ধ্বংস করার চেষ্টা করছে, কিন্তু আমরা তা হতে দেব না।” তিনি এই যাত্রার সবুজ পতাকা উত্তোলন করে এটির শুভারম্ভ করেন।

এই যাত্রার মাধ্যমে বিহারের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে জনগণের সমর্থন সংগ্রহ করতে এবং বিজেপি-নেতৃত্বাধীন এনডিএ-র বিরুদ্ধে জনমত গঠনের চেষ্টা করছে। তেজস্বী যাদব বলেন, “বিজেপি কেবল ভোটাধিকার কেড়ে নিচ্ছে না, তারা জনগণের অস্তিত্ব মুছে ফেলার চেষ্টা করছে। আমরা এই যাত্রার মাধ্যমে বিহারের প্রতিটি জেলায় গিয়ে মানুষকে সচেতন করব।”

নির্বাচন কমিশন এই অভিযোগগুলো অস্বীকার করেছে এবং বলেছে যে ভোটার তালিকার ত্রুটি নিয়ে আপত্তি জানানোর সময় ছিল ‘দাবি ও আপত্তি’ পর্বে। কমিশনের মতে, ভোটার তালিকা সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া হয়েছিল, যাতে সময়মতো সমস্যা উত্থাপন করা যায়। তবে, বিরোধীরা এই অভিযোগ তুলে ধরে বলছে যে কমিশন বিজেপির স্বার্থে কাজ করছে।

প্রকাশ্যে সরকারি আধিকারিককে হুমকি বিধায়কের! মুখ খুললেন শুভেন্দু

এই যাত্রা বিহারের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করবে বলে মনে করা হচ্ছে। রাহুল গান্ধী এবং তেজস্বী যাদবের নেতৃত্বে এই যাত্রা বিহারের জনগণের মধ্যে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার রক্ষার বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। এটি আসন্ন নির্বাচনকে গণতন্ত্রের জন্য একটি ‘নির্ণায়ক যুদ্ধ’ হিসেবে তুলে ধরার প্রয়াস।