ওবিসি শংসাপত্র প্রদানে কঠোর যাচাই প্রক্রিয়ার আদেশ বিজেপি নেতার

মুম্বই, ১০ সেপ্টেম্বর: মহারাষ্ট্রের রাজস্ব মন্ত্রী এবং বিজেপি নেতা চন্দ্রশেখর বাওয়ানকুলে বুধবার (OBC Certificates)জানিয়েছেন যে, অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি (ওবিসি)-দের প্রতি কোনো অবিচার করা হবে না…

OBC Certificates in maharastra

মুম্বই, ১০ সেপ্টেম্বর: মহারাষ্ট্রের রাজস্ব মন্ত্রী এবং বিজেপি নেতা চন্দ্রশেখর বাওয়ানকুলে বুধবার (OBC Certificates)জানিয়েছেন যে, অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি (ওবিসি)-দের প্রতি কোনো অবিচার করা হবে না এবং মারাঠা কোটার বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী শুধুমাত্র প্রকৃত কুনবি রেকর্ডধারীদেরই কুনবি শংসাপত্র প্রদান করা হবে।

মারাঠা সম্প্রদায়ের জন্য সংরক্ষণের বিষয়ে চলতে থাকা বিতর্কের মধ্যে এই ঘোষণা রাজ্যের রাজনীতিতে নতুন আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। মন্ত্রী বাওয়ানকুলে জোর দিয়ে বলেছেন, কুনবি শংসাপত্র প্রদানের ক্ষেত্রে কঠোর যাচাই প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে, যাতে ওবিসি সম্প্রদায়ের সংরক্ষণের অধিকার ক্ষুণ্ন না হয়।মহারাষ্ট্রে মারাঠা কোটার ইস্যু দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক এবং সামাজিক বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু।

   

মারাঠা সম্প্রদায় দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা এবং চাকরিতে ১০% সংরক্ষণের দাবি জানিয়ে আসছে। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে মহারাষ্ট্র সরকার মারাঠা কোটা আইন পাস করে, যা মারাঠা সম্প্রদায়ের জন্য সংরক্ষণের বিধান রাখে। তবে, এই কোটার আওতায় কুনবি (যারা ওবিসি বিভাগের অধীনে পড়ে) শংসাপত্র প্রদানের প্রক্রিয়া নিয়ে ওবিসি সম্প্রদায়ের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

অনেকে আশঙ্কা করছেন, মারাঠা সম্প্রদায়ের কিছু সদস্য কুনবি শংসাপত্রের মাধ্যমে ওবিসি কোটার সুবিধা নিতে পারেন, যা ওবিসি সম্প্রদায়ের জন্য নির্ধারিত সংরক্ষণের পরিমাণ কমিয়ে দেবে।বাওয়ানকুলে স্পষ্ট করে বলেছেন, “ওবিসিদের প্রতি কোনো অবিচার হবে না। কুনবি শংসাপত্র শুধুমাত্র তাদেরই দেওয়া হবে, যাদের কাছে প্রকৃত এবং যাচাইযোগ্য রেকর্ড রয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে।”

তিনি আরও বলেন, সরকার মারাঠা এবং ওবিসি উভয় সম্প্রদায়ের স্বার্থ রক্ষার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কুনবি শংসাপত্রের জন্য আবেদনকারীদের নথি, যেমন পৈতৃক রেকর্ড, জন্ম শংসাপত্র এবং অন্যান্য প্রমাণপত্র, কঠোরভাবে যাচাই করা হবে। এই প্রক্রিয়ার জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে, যারা মারাঠা কোটা এবং ওবিসি সংরক্ষণের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখবে।

মহারাষ্ট্রে মারাঠা কোটার ইস্যু রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত স্পর্শকাতর। মারাঠা সম্প্রদায় রাজ্যের জনসংখ্যার প্রায় ৩০% গঠন করে এবং তাদের রাজনৈতিক প্রভাব উল্লেখযোগ্য। অন্যদিকে, ওবিসি সম্প্রদায়ও রাজ্যের একটি বড় অংশ এবং তারা তাদের সংরক্ষণের অধিকার রক্ষার জন্য সোচ্চার। মারাঠা ক্রান্তি মোর্চার মতো সংগঠনগুলো কোটার দাবিতে একাধিক আন্দোলন করেছে, যার মধ্যে ২০১৮-১৯ সালে ব্যাপক বিক্ষোভ উল্লেখযোগ্য।

তবে, ওবিসি নেতারা বারবার সতর্ক করে বলেছেন, মারাঠা কোটা তাদের সংরক্ষণের অধিকারে হস্তক্ষেপ করলে তারা রাস্তায় নামবেন।বাওয়ানকুলের এই ঘোষণা এই দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা কমানোর একটি প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

Advertisements

তিনি বলেন, “সরকার সব সম্প্রদায়ের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে। কেউ যাতে অন্যের অধিকার কেড়ে না নেয়, সেদিকে আমরা কঠোর নজর রাখছি।” তবে, ওবিসি নেতারা এই ঘোষণার পরেও সতর্ক রয়েছেন। ওবিসি ফেডারেশনের এক নেতা বলেন, “আমরা সরকারের প্রতিশ্রুতি পর্যবেক্ষণ করব।

যদি কুনবি শংসাপত্রের অপব্যবহার হয়, তাহলে আমরা আন্দোলনে নামব।”এই ঘটনা মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে মারাঠা এবং ওবিসি সম্প্রদায়ের ভোটের গুরুত্ব বিবেচনা করে বিজেপি, শিবসেনা এবং এনসিপি-র শাসক জোট এই ইস্যুতে সতর্কতার সঙ্গে এগোচ্ছে।

বিরোধী দলগুলো, বিশেষ করে কংগ্রেস এবং শরদ পাওয়ারের এনসিপি (এসপি), এই বিষয়ে সরকারের ব্যর্থতার সমালোচনা করছে। তারা দাবি করেছে, সরকার মারাঠা এবং ওবিসি সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করছে।এই ঘোষণার পর সামাজিক মাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।

ফের বাংলাদেশী দুষ্কৃতীদের হাতে আটক বাংলার কৃষক

মারাঠা সম্প্রদায়ের একাংশ বাওয়ানকুলের বক্তব্যকে স্বাগত জানালেও, ওবিসি সম্প্রদায়ের মধ্যে সংশয় রয়ে গেছে। আগামী দিনে সরকার কীভাবে এই যাচাই প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন করে এবং দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখে, তা নিয়ে সবার দৃষ্টি রয়েছে।