Uttar Pradesh: বিজেপি নেতার মৃত্যুর পেছনে কি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র? উত্তাল রাজনীতি

গত সোমবার উত্তরপ্রদেশের সম্ভল জেলা একটি চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের সাক্ষী হয়ে ওঠে। বিজেপির শীর্ষ নেতা গুলফাম সিং যাদবকে বিষাক্ত ইঞ্জেকশন প্রয়োগ করে হত্যা করা হয়। এই…

BJP Leader Gulfam Singh Yadav Poisoned to Death in Uttar Pradesh

short-samachar

গত সোমবার উত্তরপ্রদেশের সম্ভল জেলা একটি চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের সাক্ষী হয়ে ওঠে। বিজেপির শীর্ষ নেতা গুলফাম সিং যাদবকে বিষাক্ত ইঞ্জেকশন প্রয়োগ করে হত্যা করা হয়। এই ঘটনা শুধু জেলা নয়, পুরো রাজ্যেই আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। গুলফাম সিং যাদব ছিলেন পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের অন্যতম প্রভাবশালী বিজেপি নেতা এবং দলের সহ-সভাপতি। তাঁর মৃত্যুতে রাজনৈতিক অঙ্গনে এক নতুন শোরগোল শুরু হয়েছে।

   

গুলফাম সিং যাদবের মৃত্যু একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সোমবার দুপুরের দিকে তিন অজ্ঞাত যুবক গুলফামের বাড়িতে এসে তাঁর সঙ্গে কিছুক্ষণ গল্প করে। এরপর, এক যুবক তাঁর কাছে জল চেয়ে পান করতে থাকে। ঠিক তখনই সেই যুবক গুলফামের পেটে বিষাক্ত ইঞ্জেকশন ফুটিয়ে দিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

গুলফামের শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটতে থাকে। পরিবারের লোকজন তাঁকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু চিকিৎসায় তেমন উন্নতি না হওয়ায় তাঁকে আলিগড় মেডিক্যাল কলেজে রেফার করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

গুলফাম সিং যাদব এক সময় সমাজবাদী পার্টির (সপা) নেতা ছিলেন এবং ২০০৪ সালে তৎকালীন সপা প্রধান মুলায়ম সিং যাদবের বিরুদ্ধে গুন্নর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তবে রাজনৈতিক কৌশলে তিনি বিজেপি তে যোগ দেন এবং দলের এক গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত হন। তিনি পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের বিজেপির পূর্বাঞ্চলের সহ-সভাপতি ছিলেন। তাঁর রাজনৈতিক জীবনে একাধিক সফলতা এবং অমিমাংসিত রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। কিন্তু তাঁর মৃত্যু রাজনৈতিক এবং সামাজিক ক্ষেত্রে একটি বড় শূন্যতার সৃষ্টি করেছে।

গুলফাম সিং যাদবের মৃত্যু নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক মহলে নানা আলোচনা চলছে। তাঁর রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল সমাজবাদী পার্টি (সপা), যার সঙ্গে তাঁর বহু বছর ধরে সম্পর্ক ছিল। বিশেষত মুলায়ম সিং যাদবের সঙ্গে তাঁর একাধিক রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব এবং সপা-বিজেপি মধ্যে চলতে থাকা তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা গুলফামের হত্যাকাণ্ডের কারণ হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

যদিও পুলিশের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোন স্থায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি, তবে প্রাথমিক তদন্তে হত্যার পরিকল্পনা অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে সাজানো হয়েছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।

এই ঘটনায় উত্তরপ্রদেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। গুলফাম সিং যাদবের মতো একজন শীর্ষ নেতা যদি এত সহজে হত্যার শিকার হতে পারেন, তাহলে রাজ্যের অন্যান্য নেতাদের নিরাপত্তা কোথায়? বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, রাজনৈতিক হত্যা এমন একটা বিষয় যা কোনওভাবেই এককভাবে দেখা যায় না, বরং এটি একটি বৃহত্তর রাজনৈতিক চক্রান্তের অংশ হতে পারে।

গুলফাম সিং যাদবের হত্যাকাণ্ড কেবলমাত্র একটি ব্যক্তিগত শত্রুতার ফল হতে পারে না। এটি রাজনীতির অন্ধকার দিকের একটি চরম উদাহরণ, যেখানে ব্যক্তিগত স্বার্থ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা কখনও কখনও রাজনীতির গণ্ডি অতিক্রম করে ব্যক্তিগত আক্রমণের রূপ নেয়। এই ঘটনার পর, উত্তরপ্রদেশে রাজনৈতিক হিংসার আবহ আবারও প্রকট হয়ে উঠেছে, যা রাজ্যবাসীর জন্য এক দুশ্চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।