শুভম কুমার, অররিয়া: বিহারের অররিয়া জেলায় পুলিশ (Araria Police) এবং বিশেষ টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)-এর যৌথ অভিযানে দুই কুখ্যাত অপরাধী, যারা জেলার শীর্ষ দশ অপরাধীর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত, মোহাম্মদ সরফরাজ এবং আশিস পাসোয়ানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই সাফল্য অররিয়া পুলিশের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। দুজনকে পৃথক পৃথক অভিযানে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তাঁদের জেলে পাঠানো হয়েছে।
Read Hindi: एसटीएफ और पुलिस ने दो कुख्यात अपराधी पकड़े
প্রথম ঘটনায়, অররিয়া পুলিশ সুপার অঞ্জনী কুমারের কাছে গোপন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ফারবিসগঞ্জ বাজার সমিতিতে গত ফেব্রুয়ারি মাসে সংঘটিত একটি ডাকাতির ঘটনায় জড়িত মোহাম্মদ সরফরাজকে তার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসডিপিও মুকেশ কুমার সাহ এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানান, মোহাম্মদ সরফরাজ এই ডাকাতির ঘটনায় মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে ভূমিকা পালন করেছিলেন। ঘটনার পরপরই এই মামলায় তিনজন অভিযুক্তকে দুটি দেশী পিস্তল এবং ১১ রাউন্ড গুলি সহ গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এছাড়াও, রানীগঞ্জ, সিমরাহা এবং নরপতগঞ্জ থানার পুলিশ অভিযানে অন্যান্য অভিযুক্তদের অবৈধ অস্ত্র এবং ডাকাতির টাকা সহ গ্রেপ্তার করা হয়। এই মামলায় এখন পর্যন্ত মোট নয়জন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠানো হয়েছে।
দ্বিতীয় ঘটনায়, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অররিয়া জেলার আরেক শীর্ষ অপরাধী আশিস পাসোয়ানকে কলেজ চৌকের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। আশিস পাসোয়ান রঙদাহা মুসহরির কাছে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে এক ব্যক্তির কাছ থেকে লুটের চেষ্টা করেছিলেন এবং ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। এই ঘটনায় একজন অপরাধীকে অবৈধ দেশী পিস্তল এবং গুলি সহ গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। উভয় অভিযুক্তই অররিয়ার বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলায় জড়িত এবং পুলিশের কাছে দীর্ঘদিন ধরে পলাতক ছিলেন।
অভিযানে অংশ নেওয়া দলের মধ্যে ছিলেন ফারবিসগঞ্জ থানার প্রভারী রাঘবেন্দ্র কুমার সিং, আদিত্য কিরণ, রাজনন্দিনী সিনহা, অমিত রাজ, দীপক কুমার-সহ অন্যান্য পুলিশ কর্মী। পুলিশ এই গ্রেপ্তারির মাধ্যমে জেলার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আরও এক ধাপ এগিয়েছে বলে মনে করছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, অররিয়া জেলায় ডাকাতি, লুটপাট এবং অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে অপরাধ বৃদ্ধি পাচ্ছিল, যা সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছিল। এই দুই কুখ্যাত অপরাধীর গ্রেপ্তারির ফলে এলাকায় নিরাপত্তার পরিবেশ ফিরে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে, স্থানীয়রা মনে করছেন, শুধু গ্রেপ্তারই নয়, অপরাধ নিয়ন্ত্রণে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা এবং নিয়মিত পুলিশি টহলের প্রয়োজন।
এসডিপিও মুকেশ কুমার সাহ বলেন, “আমরা অপরাধীদের ধরতে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছি। মোহাম্মদ সরফরাজ এবং আশিস পাসোয়ানের গ্রেপ্তারি আমাদের জন্য বড় সাফল্য। আমরা নিশ্চিত করব যে অররিয়ায় অপরাধের মাত্রা কমে।” তিনি আরও জানান, পুলিশ এবং এসটিএফ-এর যৌথ অভিযান অব্যাহত থাকবে এবং অন্যান্য পলাতক অপরাধীদেরও শীঘ্রই গ্রেপ্তার করা হবে।
এই ঘটনা অররিয়ার সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা রমেশ সিং বলেন, “এই ধরনের অপরাধীরা এলাকায় আতঙ্ক ছড়ায়। পুলিশের এই পদক্ষেপ আমাদের জন্য আশার আলো।” তবে, তিনি সড়ক নিরাপত্তা এবং অপরাধ প্রতিরোধে আরও কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানান।
অররিয়া পুলিশ এবং এসটিএফ-এর এই সাফল্য জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে, এলাকাবাসীর প্রত্যাশা, ভবিষ্যতে এমন অপরাধ রোধে প্রশাসন আরও তৎপর হবে। এই অভিযানের ফলে অররিয়ায় শান্তি ও নিরাপত্তা ফিরে আসার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।