পাটনা: বিহারের মহিলাদের আর্থিক স্বনির্ভরতা ও কর্মসংস্থানের পথে এক নতুন অধ্যায় সূচিত হল। শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করলেন ‘মুখ্যমন্ত্রী মহিলা রোজগার যোজনা’৷ যার মাধ্যমে প্রায় ৭৫ লক্ষ মহিলার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সরাসরি পৌঁছবে ১০,০০০ টাকা। প্রকল্পটির মোট আর্থিক পরিমাণ ৭,৫০০ কোটি টাকা।
ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নয়া দিল্লি থেকে এই প্রকল্প চালু করেন প্রধানমন্ত্রী। পাটনা থেকে অনুষ্ঠানে যোগ দেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার, উপমুখ্যমন্ত্রী সম্রাট চৌধুরী এবং অন্যান্য মন্ত্রীরা। মোদী এই উদ্যোগকে “বিহারের নারীর ক্ষমতায়নের পথে এক ঐতিহাসিক মাইলফলক” বলে অভিহিত করেন।
কীভাবে কাজ করবে প্রকল্পটি?
প্রথম ধাপে প্রতিটি যোগ্য পরিবারের এক মহিলাকে ১০,০০০ টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।
ভবিষ্যতে উদ্যোগের অগ্রগতির উপর নির্ভর করে সর্বাধিক ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত সহায়তা পেতে পারেন মহিলারা।
কৃষি ও সংশ্লিষ্ট খাত (দুগ্ধ, পোলট্রি, মৎস্য), হস্তশিল্প, তাঁতশিল্প, সেলাই-অলঙ্কার, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ এবং ক্ষুদ্র বাণিজ্যের মতো ক্ষেত্রে উদ্যোগ চালাতে পারবেন উপভোক্তারা।
স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ভূমিকা Bihar Mahila Rozgar Yojana
রাজ্য সরকার জানিয়েছে, আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি প্রকল্পটিতে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে কমিউনিটি-ভিত্তিক মডেলের ওপর। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর (SHG) সঙ্গে যুক্ত মহিলারা প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ পাবেন ‘কমিউনিটি রিসোর্স পার্সন’-দের কাছ থেকে। পাশাপাশি গ্রামীণ হাট ও বাজারগুলিকে আরও উন্নত করা হবে, যাতে মহিলাদের উৎপাদিত পণ্য ও পরিষেবার বিক্রি টেকসই আয়ের পথ খুলে দেয়।
রাজনৈতিক তাৎপর্য
উপমুখ্যমন্ত্রী সম্রাট চৌধুরী একে “বিহারের মহিলাদের জন্য ঐতিহাসিক দিন” বলে মন্তব্য করেন। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, “এটি কেবল আর্থিক সহায়তা নয়—এটি আমাদের কন্যা ও বোনেদের আত্মনির্ভরতা ও ক্ষমতায়নের দিকে এক বড় পদক্ষেপ।”
শুক্রবার রাজ্য জুড়ে জেলা, ব্লক, ক্লাস্টার ও গ্রাম স্তরে একযোগে কর্মসূচি পালিত হয়। সরকারি অনুমান, ১ কোটিরও বেশি মহিলা প্রত্যক্ষ বা ভার্চুয়াল মাধ্যমে এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সাক্ষী হয়েছেন।
পর্যবেক্ষকদের মতে, এটি যেমন একটি কল্যাণমূলক প্রকল্প, তেমনি আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে এনডিএ-র জন্য একটি কৌশলগত পদক্ষেপও বটে। পরিবারে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে মহিলাদের ভূমিকা সরাসরি টার্গেট করে রাজনৈতিকভাবে গ্রামীণ ভোটারদের কাছে পৌঁছনোই এই উদ্যোগের অন্যতম লক্ষ্য।
সমাজ ও অর্থনীতিতে সম্ভাব্য প্রভাব
অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তি, উদ্যোক্তা সৃষ্টির সহায়তা এবং কমিউনিটি-ভিত্তিক অংশগ্রহণ—সব মিলিয়ে ‘মুখ্যমন্ত্রী মহিলা রোজগার যোজনা’কে বিহারের সামাজিক-অর্থনৈতিক পরিসরে এক রূপান্তরমূলক হস্তক্ষেপ হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে।

আমাদের Google News এ ফলো করুন
২৪ ঘণ্টার বাংলা নিউজ, ব্রেকিং আপডেট আর এক্সক্লুসিভ স্টোরি সবার আগে পেতে ফলো করুন।
