পাটনা: বিহারের রাজনৈতিক মঞ্চে ফের গরম হাওয়া। রাজ্যজুড়ে জোর প্রস্তুতি আগামী বিধানসভা নির্বাচনের৷ ভোট হবে দু’দফায়- ৬ ও ১১ নভেম্বর। নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা হবে ১৪ নভেম্বর৷ বর্তমান বিধানসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২২ নভেম্বর। অর্থাৎ, ক্ষমতার হাল কার হাতে থাকবে—তার নির্ণায়ক সময় এসে গিয়েছে।
আসন ভাগ
সূত্রের খবর, এবার বিজেপি ও জনতা দল (ইউনাইটেড) বা জেডিইউ প্রায় সমান সংখ্যক আসনে লড়বে। মোট ২০৫টি আসন দুই শরিক দলের মধ্যে ভাগ হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। যদিও আসন ভাগাভাগির চূড়ান্ত সূত্র এখনো স্থির হয়নি। বাকি ৩৮টি আসন যাবে এনডিএ-র ছোট শরিকদের ঝুলিতে— লোক জনশক্তি পার্টি (এলজেপি), হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চা (এইচএএম) এবং রাষ্ট্রীয় লোক সমতা পার্টি (আরএলএম)-এর মধ্যে।
সূত্রের দাবি, চিরাগ পাসওয়ানের এলজেপিকে ২৫টি, জিতন রাম মাঁঝির এইচএএম-কে ৭টি, আর উপেন্দ্র কুশওয়ারার আরএলএম-কে ৬টি আসন অফার করেছে বিজেপি। তবে চূড়ান্ত চিত্র এখনো পরিষ্কার নয়। জানা যাচ্ছে, চিরাগ পাসওয়ান তাঁর দলের নেতাদের জন্য পছন্দসই আসন দাবি করেছেন। তাঁর আসনসংখ্যা বাড়লে, মাঁঝি ও কুশওয়ারার ভাগে কিছুটা কাটছাঁট হতে পারে। যদি ছোট শরিকদের সিট কমে, তাহলে তাদের রাজ্যসভা বা বিধান পরিষদে আসনের প্রস্তাব দিয়ে ক্ষতিপূরণের চেষ্টা করতে পারে বিজেপি।
৭ কোটিরও বেশি ভোটার Bihar Election NDA Seats
এবারের ভোটে ৭ কোটিরও বেশি ভোটার, যার মধ্যে প্রায় ১৪ লক্ষ প্রথমবারের ভোটার। প্রথম দফায় ভোট হবে মধ্য বিহারের ১২১টি কেন্দ্রে — প্রধানত গ্রামীণ ও বন্যাপ্রবণ এলাকায়। দ্বিতীয় দফায় ভোট ১২২টি আসনে, যা মূলত সীমান্তবর্তী অঞ্চলজুড়ে।
রাজ্যে ক্ষমতাসীন নিতীশ কুমারের নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট ফের ক্ষমতায় ফিরতে মরিয়া, অন্যদিকে রাজদ-কংগ্রেস-বামফ্রন্টের মহাগঠবন্ধন শক্ত চ্যালেঞ্জ ছুড়ছে। একই সঙ্গে আম আদমি পার্টি (আপ) প্রথমবারের মতো বিহারে ২৪৩টি আসনেই প্রার্থী দিচ্ছে, যা এক নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরি করেছে।
এই নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে তিনটি বড় বিষয় —
- ৩৩ শতাংশ ‘এক্সট্রিমলি ব্যাকওয়ার্ড ক্লাস’ (EBC) ভোটব্যাংক, যা এতদিন এনডিএ-র ঘাঁটি ছিল, এখন মহাগঠবন্ধনেরও লক্ষ্য।
- মহিলাদের ক্রমবর্ধমান ভোটার উপস্থিতি, যা বিহারের রাজনীতিতে নতুন ভারসাম্য আনছে।
- এবং উত্তর বিহারের পরিকাঠামোগত উন্নয়ন, যা নির্বাচন কমিশনের ধাপে ধাপে ভোটসূচি তৈরিতে প্রভাব ফেলেছে।
সব মিলিয়ে, নিতীশ-চিরাগ-শাহ ত্রয়ীর কৌশল বনাম তেজস্বী-প্রিয়াঙ্কা জোটের চ্যালেঞ্জ—এই সমীকরণেই নির্ধারিত হবে বিহারের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক দিকনির্দেশ।