বিশ্বের ভবিষ্যৎ নিয়ে বিপর্যয়ের বার্তা দিলেন নীতীশ কুমার!

বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার (Nitish Kumar) সম্প্রতি একটি চাঞ্চল্যকর মন্তব্য করেছেন, যা রাজনীতির পাশাপাশি প্রযুক্তির দিকেও আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। তিনি দাবি করেছেন, “আগামী ১০ বছরের…

Bihar CM Nitish Kumar Demands Mobile Ban, Claims Earth Will Be Destroyed in 10 Years

বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার (Nitish Kumar) সম্প্রতি একটি চাঞ্চল্যকর মন্তব্য করেছেন, যা রাজনীতির পাশাপাশি প্রযুক্তির দিকেও আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। তিনি দাবি করেছেন, “আগামী ১০ বছরের মধ্যে পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে,” এবং এর জন্য তিনি ফোন ব্যবহারের বৃদ্ধি এবং প্রযুক্তির প্রতি মানুষের নির্ভরতাকে দায়ী করেছেন। নীতীশ কুমারের (Nitish Kumar) এই মন্তব্য বিহার রাজনীতি এবং প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি করেছে।

ঘটনাটি ঘটে বিহার বিধানসভায় যখন সুদয় যাদব বিধানসভার প্রশ্নোত্তর পর্বের সময় তাঁর মোবাইল ফোনে কিছু দেখছিলেন। নীতীশ কুমার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “হাউসে মোবাইল ব্যবহার নিষিদ্ধ। আমি আপনাকে (স্পিকার) অনুরোধ করছি যে, মোবাইল নিয়ে যেই আসবে, তাকে বাইরে ছুঁড়ে ফেলা হোক।” এরপর তিনি বলেন, “মোবাইল ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। ৫-৬ বছর আগে মোবাইল ব্যবহার শুরু হয়েছে, আর এই মোবাইলের কারণেই আগামী ১০ বছরের মধ্যে পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে।”

   

নীতীশ কুমারের (Nitish Kumar) এই মন্তব্য রাজনৈতিক মহলে এক নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। বিরোধী দলগুলোও তীব্র প্রতিক্রিয়া জানাতে শুরু করেছে। আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব, যিনি বিহার বিধানসভার বিরোধী দলনেতা, তিনি কটাক্ষ করে বলেন, “নীতীশ কুমার প্রযুক্তির বিরুদ্ধে আক্রমণ করছেন। এখন সবকিছুই ডিজিটাল হচ্ছে। বিধানসভা পেপারলেস হচ্ছে, সদস্যরা অনলাইনে প্রশ্ন করছেন। যদি কোনও অনুসাঙ্গিক প্রশ্ন করতে হয়, তবে মোবাইল বা ট্যাবলেট দরকার হবে।”

তেজস্বী আরও বলেন, “নীতীশ কুমার এমন এক মুখ্যমন্ত্রী, যিনি প্রযুক্তি এবং যুব সমাজের প্রতি বিরোধিতা করেন। তিনি মনে করেন, প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে পৃথিবী ধ্বংস হবে। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক।” তাঁর এই মন্তব্য থেকে স্পষ্ট যে, তেজস্বী মনে করেন, নীতীশ কুমারের এই ধরনের মন্তব্য আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রতি বিরোধিতা এবং প্রযুক্তিগত অগ্রগতির পথে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।

নীতীশ কুমারের এই মন্তব্যকে কিছু বিশেষজ্ঞরা ভবিষ্যৎবাণী হিসেবে দেখতে পারেন, তবে প্রযুক্তির উন্নতি এবং এর সাথে মানুষের সম্পর্কের গুরুত্বও অস্বীকার করা সম্ভব নয়। যেখানে একদিকে প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সমাজে দ্রুত পরিবর্তন আনা সম্ভব হচ্ছে, অন্যদিকে এই প্রযুক্তি ব্যবহারের কিছু নেতিবাচক প্রভাবও দেখা যাচ্ছে, যেমন অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, পরিবেশগত ক্ষতি এবং মানুষের মধ্যে এক ধরনের প্রযুক্তিগত নির্ভরতা।

এদিকে, নীতীশ কুমারের বক্তব্যের পর সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ নানা ধরনের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। কিছু মানুষ তাঁর মন্তব্যকে গুরুত্ব দিয়ে ভেবেছেন, তবে অধিকাংশই মনে করছেন এটি এক ধরনের অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া মাত্র। প্রযুক্তির উন্নতি থেমে থাকবে না, এবং পৃথিবী ধ্বংস হওয়ার কথা যে তিনি বলছেন, তা সাধারণ মানুষের কাছে এক ধরনের অযৌক্তিক ভবিষ্যদ্বাণী বলেই মনে হচ্ছে।

নীতীশ কুমারের এই বিতর্কিত মন্তব্য শুধু বিহারের রাজনীতি নয়, বরং ভারতীয় রাজনীতি এবং প্রযুক্তি ব্যবহারের ভবিষ্যৎকেও এক নতুন আলোকে নিয়ে এসেছে। এটা স্পষ্ট যে, ভবিষ্যতের প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে আরও সজাগ এবং সতর্ক হতে হবে, যাতে তা মানবতা এবং পরিবেশের প্রতি কোনও ক্ষতি না করে।