হায়দরাবাদের বাঙালি সম্প্রদায় আবারও মেতে উঠতে চলেছে বছরের অন্যতম প্রতীক্ষিত সাংস্কৃতিক উৎসবে—‘উত্তরায়ণ’-এর আয়োজিত ৪৭তম বর্ষের কালীপুজোতে (Kali Puja)। প্রায় পাঁচ দশকের ঐতিহ্য বহন করে চলা এই পুজো আজ শহরের অন্যতম বৃহৎ ও প্রাণবন্ত বাঙালি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। প্রতিবছর হাজার হাজার মানুষ এই উৎসবে অংশ নেন।
চলতি বছর কালীপুজো অনুষ্ঠিত হবে ১৯, ২০ ও ২১ অক্টোবর, হায়দরাবাদের আমীরপেটের এমসিএইচ গ্রাউন্ডে। তিন দিনের এই উৎসবে থাকবে মহা আড়ম্বরে পুজো-আর্চা, মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, নানা রকমের খাদ্য স্টল এবং শিল্পকলার প্রদর্শনী।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন তেলেঙ্গানা সরকারের পর্যটন, সংস্কৃতি ও প্রত্নতত্ত্ব মন্ত্রী জুপল্লি কৃষ্ণা রাও এবং পরিবহন দফতরের মুখ্য সচিব বিকাশ রাজ (আইএএস)। তাঁদের উপস্থিতি হায়দরাবাদের বহুসাংস্কৃতিক ঐক্য ও সম্প্রীতির প্রতীক বলেই মনে করছে আয়োজকরা।
কালীপুজো বাঙালিদের কাছে শক্তি ও শুভশক্তির বিজয়ের প্রতীক। আলোর উৎসব দীপাবলির সঙ্গে একসূত্রে গাঁথা এই পূজা হায়দরাবাদে বাঙালিদের অন্যতম গর্বের অনুষ্ঠান। প্রায় ৪৭ বছর আগে কয়েকজন বাঙালি অভিবাসীর উদ্যোগে শুরু হওয়া এই পুজো এখন প্রতিদিন ১০ হাজারেরও বেশি দর্শনার্থীর সমাগম ঘটায়।
বিশেষত্বের মধ্যে অন্যতম—‘উত্তরায়ণ’-এর এই কালীপুজোয় দক্ষিণাকালীর পূজা সম্পূর্ণভাবে সংগঠনের মহিলারা পরিচালনা করেন। প্রণপ্রতিষ্ঠা থেকে ভোগ রান্না ও বিতরণ পর্যন্ত প্রতিটি পর্যায়ে তাঁদের সক্রিয় অংশগ্রহণ দেখা যায়।
উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ সাংস্কৃতিক পর্ব—যেখানে অনুষ্ঠিত হবে আনন্দমেলা, কুইজ প্রতিযোগিতা, শিশুদের জন্য শিল্প ও হস্তশিল্প প্রতিযোগিতা এবং সঙ্গীতানুষ্ঠান। এবছর বিশিষ্ট শিল্পী অঙ্কিতা বসু ও আদ্রিজ ঘোষের গান পরিবেশনা বিশেষ মাত্রা যোগ করবে উৎসবে।
প্রতি বছর ‘উত্তরায়ণ’ সমাজে বিশেষ অবদান রাখা ব্যক্তিদের “সেরা বাঙালি” ও “সেরা মেধা” পুরস্কারে সম্মানিত করে। পাশাপাশি, সংস্থাটি বছর জুড়ে সমাজসেবামূলক কাজ যেমন অনাথ আশ্রম ও বৃদ্ধাশ্রমে সহায়তা করে থাকে।
‘উত্তরায়ণ’-এর কালীপুজো এখন হায়দরাবাদের বহুসাংস্কৃতিক মেলবন্ধনের এক উজ্জ্বল প্রতীক—যেখানে ধর্ম, সংস্কৃতি ও আনন্দ মিলেমিশে একাকার হয়।