ভারতীয় উপমহাদেশে আল-কায়েদার সহযোগী সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিম জঙ্গি গোষ্ঠীর কয়েকজন সদস্য শিলিগুড়ি করিডোর (Siliguri Corridor) বিচ্ছিন্ন করার পরিকল্পনা করেছিল বলে জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের (WB Police)। দার্জিলিং জেলার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই সঙ্কীর্ণ স্থানটি উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলিকে দেশের বাকি অংশের সাথে সংযুক্ত করেছে। পুলিশের দাবি, নাশকতার ছক বানচাল হয়েছে। (Bangladeshi militant group plans attack in Siliguri corridor)
বাংলাদেশে এবিটি জঙ্গি গোষ্ঠীর লক্ষ্য
এবিটি জঙ্গি গোষ্ঠী বাংলাদেশে আনসার আল ইসলাম নামে পরিচিত। এই সংগঠন বাংলাদেশে একাধিক নাস্তিক-যুক্তিবাদী লেখক ও বিজ্ঞান বিষয়ক লেখকদের খুনে জড়িত।
শিলিগুড়ি করিডোর বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ এলাকা (Bangladeshi militant group plans attack in Siliguri corridor)
শিলিগুড়ি করিডোর যেটিয়ে ‘চিকেনস নেক’ নামেও সুপরিচিত। প্রায় 20 কিলোমিটার প্রস্থ এবং 60 কিলোমিটার দৈর্ঘ্য সহ এই অঞ্চলটি নেপাল, ভুটান, চিন ও বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক সীমান্তের অতি নিকটে অবস্থিত।
শিলিগুড়ি করিডোরের কৌশলগত গুরুত্বের কারণে আসাম, মেঘালয় এবং ত্রিপুরা সহ উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলির কর্তৃপক্ষগুলি উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। নাশকতা ঘটিয়ে শিলিগুড়ি করিডোর বিচ্ছিন্ন করে অসম, মেঘালয়, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, মণিপুর, ত্রিপুরা, অরুণাচল প্রদেশ ও সিকিমে নাশকতা ছড়ানোর বার্তা ছড়ানো হয়েছে সামাজিক মাধ্যমে।একইসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের তিনটি জেলা দার্জিলিং, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারে চলছে বিশেষ নজরদারি।
India Today জানিয়েছে, কেরল, অসম এবং পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে চলে অভিযান। বাংলাদেশি জঙ্গি সংগঠনটির আট সদস্যকে গ্রেফতার করে অসম পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)। এই সংগঠনটি ভারত, বাংলাদেশ, ব্রিটেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
অসম এবং পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ) এর যৌথ অভিযানে গত 18 ডিসেম্বর মুর্শিদাবাদ জেলা থেকে গ্রেফতার হয় দুজন সন্দেহভাজন। সেই সূত্র ধরে বাকিরা ধৃত। এই চক্রের জঙ্গি ফারহান ইশরাতের নির্দেশে সাদ রাদি নামে আরও এক জঙ্গি বাংলাদেশ থেকে ভারতে নান্নার জাল ছড়ায়। এই ব্যক্তি কেরল, অসম এবং পশ্চিমবঙ্গ ঘুরে নাশকতার পরিকল্পনা করেছিল।
মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়া থেকে মিনারুল শেখ (৪৮) এবং মহম্মদ আব্বাস আলি (২৯) নামে দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মিনারুল শেখ একজন পাম্প মেকানিক ও আব্বাসের বিরুদ্ধে POCSO আইনের অধীনে অপহরণ এবং যৌন নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে।
অসম পুলিশের দাবি, ধৃতদের কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত করা একাধিক মোবাইল ফোন, নথি এবং একটি 16GB পেনড্রাইভ রয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গ এসটিএফ-এর ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজি) গৌরব শর্মা বলেছেন স্লিপার সেলের লক্ষ্য স্থানীয় যুবকদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক এবং অর্থনৈতিক দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের শক্তি বাড়িয়ে নেওয়া।
পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তা তথা অতিরিক্ত মহাপরিচালক, দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতিম সরকার বলেছেন এদের “উদ্দেশ্যটি পরিষ্কার ছিল শিলিগুড়ি করিডোরকে জঙ্গি কর্মকাণ্ডের ঘাঁটি হিসাবে সক্রিয় করা”।
এবিটি জঙ্গিদের ভারতে ছড়ানো জাল (Bangladeshi militant group plans attack in Siliguri corridor)
বাংলাদেশের নিষিদ্ধ সংগঠন আনসার আল ইসলাম (পূর্বতন আহসারুল্লাহ বাংলা টিম) নেটওয়ার্কের একাধিক সদস্য ধৃত বাংলাদেশ ও ভারতে। দুই দেশেই তদন্তে উঠে এসেছে, জঙ্গি সংগঠনটির ‘আস-শাহাদাত’ গ্রুপ বিশেষ সক্রিয়। এই জঙ্গি গ্রুপ তৈরি করে নতুন সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এই গ্রুপটি পার্শ্ববর্তী একটি দেশ হতে পরিচালিত হচ্ছে এবং এই সংগঠনের সদস্য সংখ্যা আনুমানিক ৮৫ থেকে ১০০ জন।
পানাগড় সামরিক ছাউনি এলাকায় সক্রিয় ছিল বাংলাদেশি জঙ্গি সংগঠন
সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব বর্ধমান জেলার মানকর কলেজের কম্পিউটার সায়েন্সের ছাত্র হারেজ শেখ জঙ্গি সংযোগ অভিযোগে ধরা পড়ে। ধৃতের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সে আনসার আল ইসলাম সংগঠনের সদস্য। পশ্চিমবঙ্গ এসটিএফের তদন্তে উঠে আসে ওই ছাত্র ‘শাহাদাত’ সংশ্লিষ্ট। সামরিক ঘাঁটি পানাগড়েই জঙ্গি জাল ছড়ায় বাংলাদেশের আল ইসলাম। এই জঙ্গি সংগঠনটি বাংলাদেশে একাধিক মুক্তমনা লেখক খুনে জড়িত। সংঠনটির বেশ কিছু সদস্য আগেও পশ্চিমবঙ্গে ধরা পড়ে।
Several members of the banned Bangladeshi organization Ansar Al Islam (formerly Ahsarullah Bangla Team) network have been arrested in Bangladesh and India. Investigations in both countries have revealed that the militant organization’s ‘As-Shahadat’ group is particularly active. This militant group is conducting recruitment activities by creating new members. This group is being operated from a neighboring country and the number of members of this organization is estimated to be 85 to 100.