মহিলাদের সম্মানরক্ষায় ভারতের জেলে থাকতেও রাজি বাংলাদেশি হিন্দুরা

বাংলাদেশে (Bangladesh) হিন্দুদের উপর নির্যাতন এবং ধর্মীয় বৈষম্যের ঘটনা নতুন নয়। প্রতিবেশী দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে অত্যাচারের শিকার হয়ে বহু হিন্দু পরিবার তাদের ঘর-বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে…

Bangladeshi Hindus Willing to Stay in Indian Jails to Protect Bangladesh Women's Honor

বাংলাদেশে (Bangladesh) হিন্দুদের উপর নির্যাতন এবং ধর্মীয় বৈষম্যের ঘটনা নতুন নয়। প্রতিবেশী দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে অত্যাচারের শিকার হয়ে বহু হিন্দু পরিবার তাদের ঘর-বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে এসেছে। সম্প্রতি, বাংলাদেশে অত্যাচারিত হয়ে একটি পরিবার তাদের প্রিয়জনদের নিয়ে ভারত চলে আসে। একটি বিশেষ ঘটনা থেকে জানা গেছে, কিশোরগঞ্জ জেলার এক হিন্দু পরিবার যারা দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হচ্ছিল, শেষ পর্যন্ত তাঁরা আশ্রয়ের জন্য ভারতে পালিয়ে এসেছে।

   

এই পরিবারটি যারা বাংলাদেশে শোষণ এবং অত্যাচারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করছিল তারা পরিবারসহ ভারতে প্রবেশ করেছে। তাদের মধ্যে ছিল মা, বাবা, ভাই-বোন এবং ছোট সন্তানরা। বাংলাদেশে ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হয়ে তারা কোনোভাবে নিজেদের জীবন রক্ষা করতে পারছিল না। তাদের মধ্যে এক মা, যিনি নিজের সন্তানদের নিয়ে বিপদের মধ্যে ছিলেন তিনি জানিয়েছেন, “আমি জানি না আমার সন্তানদের ভবিষ্যৎ কী হবে। আমার দেশ থেকে পালিয়ে আসা ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না। এদেশে আশ্রয় পেলে অন্তত আমাদের সম্মান রক্ষা হবে।”

জহরের জায়গায় রাজ্যসভায় তৃণমূলের নতুন সাংসদ ঋতব্রত

জানা গেছে, এই পরিবারটি ত্রিপুরার কমলপুর সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছে। তবে সীমান্ত পেরিয়ে যখন তারা আমবাসা রেল স্টেশন পৌঁছায়, তখন তাদের আটক করে রেল পুলিশ। কিছু সময় পর তাদের আমবাসা থানার হাতে তুলে দেওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছেন, তাদের উদ্দেশ্য ছিল শিলচর যাওয়া। সেখানে তারা কিছু নিরাপত্তা জায়গা খুঁজছিলেন। এটা পরিষ্কার যে, বাংলাদেশে এই পরিবারটি এমন এক পরিস্থিতির মধ্যে ছিল যেখানে তারা আর কোনোভাবেই নিজের জীবন এবং পরিবারকে নিয়ে নিরাপদে থাকতে পারছিল না।

ধর্মীয় সহিংসতা এবং অন্যান্য কারণে নির্যাতিত হয়ে তারা প্রায় নিরুপায় হয়ে ভারতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়। বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর অত্যাচারের ঘটনা প্রায়ই উঠে আসে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে। অনেক সময়, ধর্মীয় সহিংসতা, জমি দখল, মন্দির ভাঙচুর, এবং অন্যান্য অত্যাচারের খবর প্রকাশ পায়। সে সময় অনেক হিন্দু পরিবারই তাদের দেশে নিজেদের জীবন বিপন্ন দেখে প্রতিবেশী দেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়। এ ধরনের ঘটনা বাংলাদেশে ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা দেশটির বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, এবং ধর্মীয় পরিপ্রেক্ষিতে এক বিপজ্জনক পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে।

পশ্চিমবঙ্গে কেরোসিন খরচে বিস্ময়কর বৃদ্ধি, অপব্যবহারের প্রসঙ্গ তুলে রাজ্যকে চিঠি কেন্দ্রের

বাংলাদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য প্রতিনিয়ত নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ সামনে আসছে। তাদের জন্য বাংলাদেশে নিরাপদ জীবনযাপন করা দিন দিন কঠিন হয়ে উঠেছে। একদিকে সরকারীভাবে বলা হয় যে, সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষা করা হচ্ছে কিন্তু বাস্তবে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। স্থানীয় প্রশাসন এবং বিভিন্ন ইসলামিক গোষ্ঠী সংখ্যালঘুদের ওপর অব্যাহত নিপীড়ন চালাচ্ছে। এক্ষেত্রে ভারত তাদের জন্য একটি আশ্রয়স্থল হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বিশেষ করে ত্রিপুরা এবং পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে অনেক বাংলাদেশি হিন্দু পরিবার ঢুকতে পারছে। ভারত সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের মাধ্যমে তাদের কিছুটা স্বস্তি মিললেও সীমান্ত পার হওয়ার পর অনেকেই আটক হচ্ছে এবং আইনি প্রক্রিয়ায় জড়িয়ে পড়ছে। তবে অধিকাংশ পরিবার বাংলাদেশে এইরকম পরিস্থিতির পর ভারতে আশ্রয়ের জন্য চরম ঝুঁকি নিচ্ছে। তারা জানে যে, তাদের দেশে ফিরে গেলে তাদের জীবন ও সম্মান নিরাপদ নয়।

‘ইন্ডিয়া’র রাশ মমতার হাতে? পাশে সপা, মানতে নারাজ কংগ্রেস

বাংলাদেশের হিন্দুদের জন্য ভারতের মধ্যে আশ্রয় লাভ একটি বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। সেখানে তারা ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং নিরাপত্তা অনুভব করতে পারে। তবে সীমান্ত পেরিয়ে আসা এসব শরণার্থীদের জন্য নানা ধরনের আইনি এবং প্রশাসনিক চ্যালেঞ্জও রয়েছে। অনেক সময় তারা বৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করতে পারেন না, যার ফলে তাদেরকে আটক করা হয় এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়। এই প্রেক্ষাপটে, ভারতের রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে অবশ্যই আরও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে যেন ধর্মীয় নিপীড়ন থেকে বাঁচতে আসা এসব শরণার্থীদের নিরাপত্তা এবং সম্মান রক্ষা করা যায়।

ভারতে আশ্রয় নেওয়া এসব পরিবারগুলো নানা সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক সমস্যার মুখোমুখি হয়। তাদের নতুন জীবনে একরকম অজানা অনিশ্চয়তা থাকে, তবে তারা অন্তত পক্ষে সম্মান ও নিরাপত্তা আশা করে। একটি সুস্থ ও সমৃদ্ধ সমাজ গড়ে তোলার জন্য, প্রতিটি মানুষকে তার মৌলিক অধিকার, তার সম্মান এবং নিরাপত্তা রক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি। বাংলাদেশে অত্যাচারের শিকার হয়ে ভারতে আসা এই পরিবারটির মতো হাজারো পরিবার প্রতিনিয়ত সীমান্ত পেরিয়ে আশ্রয় নিচ্ছে।

পাক-জঙ্গি ইন্ধনে চলছে ইউনূস! ভারতের সঙ্গে ব্যান্ডউইথ ট্রানসিট চুক্তি প্রত্যাহার বাংলাদেশের

তবে তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয় রয়ে গেছে। কারণ রাজনৈতিক ও আইনগত কারণে অনেক সময় তাদের আশ্রয়ের জন্য কোনো স্থায়ী সমাধান পাওয়া যায় না। তবে শুধু ভারত নয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কেও এ ধরনের শরণার্থীদের জন্য সহানুভূতি ও সহায়তা প্রদানে উদ্যোগী হতে হবে। যেন তারা এক স্বাভাবিক ও শান্তিপূর্ণ জীবন যাপন করতে পারে।

Bangladesh: Incidents of persecution and religious discrimination against Hindus in Bangladesh are not new. Many Hindu families have fled their homes due to abuse in various regions of the country. Recently, a Hindu family from Kishoreganj, who had long been victims of religious oppression, sought refuge in India. This family, after enduring constant persecution, crossed into India for safety and security. https://ekolkata24.com/