সমালোচিত সারাজীবনের প্রবীণ সমাজবাদী নেতা আজম খান ও তাঁর ছেলে আবদুল্লাহ আজম খান উভয়েই প্যান কার্ড (PAN card conviction) কেলেঙ্কারির এক মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে সাত বছরের কারাদণ্ড পেলেন। এই রায় স্রেফ একটি আইনগত ঘটনা নয়, রাজনৈতিক এবং সামাজিক প্রভাবে শক্তিশালী হুমকি হিসেবে দেখা দিচ্ছে।
আদালতের এই সিদ্ধান্ত এসেছে MP/MLA বিশেষ আদালতে। অভিযোগ অনুযায়ী, আবদুল্লাহ আজম দুটি PAN কার্ড করেছিলেন তার বয়স বাড়িয়ে দেখানোর জন্য, যাতে তিনি নির্বাচনে যোগ্যতা অর্জন করতে পারেন। আর আজম খান, তাঁর বাবা হিসেবে, এই পরিকল্পনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন বলেই আদালতে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়েছিল।
গ্যাস সিলিন্ডার কি সস্তা হবে? আমেরিকার সঙ্গে ভারতের ঐতিহাসিক এলপিজি চুক্তি স্বাক্ষর
এই রায় ঘোষণার পর, বাবা ও ছেলেকে আদালত থেকেই জোরপূর্বক শ্রীঘরে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনা জন্ম দিয়েছে রাজনৈতিক উত্তেজনা, কারণ আজম খান দীর্ঘ দিন ধরে উত্তর প্রদেশ প্রদেশ রাজনীতিতে প্রভাবশালী নেতা হিসেবে পরিচিত। তার দণ্ড আসলেই শুধু আইনগত বিষয় নয়, এমনকি দলের অভ্যন্তরীণ সংঘাত ও ভোটবাজারেও বড় প্রভাব ফেলতে পারে বলেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মন্তব্য করছেন।
আদালতে দায় প্রমাণিত হওয়ার মূল তথ্য হল আবদুল্লাহর জন্মসনদ সংশ্লেষণ। রামপুর পৌরসভার দেয়া প্রথম জন্মসনদে তার জন্ম তারিখ উল্লেখ ছিল ১ জানুয়ারি, ১৯৯৩। কিন্তু দ্বিতীয় একটি সনদে, যা লখনউ পৌরসভার দেওয়া, তার জন্ম তারিখ প্রদর্শন করা হয় ৩০ সেপ্টেম্বর, ১৯৯০।
এই ভিন্নতার ফলে আইনগতভাবে আবদুল্লাহর ভোটদানে যোগ্যতা বাড়ানোর সুযোগ তৈরি হয়েছিল বলে প্রসিকিউশন দাবি করেছে। আদালত তাদের বিরুদ্ধে IPC এর বিভিন্ন ধারায় দোষী সাব্যস্ত করেছে, যার মধ্যে রয়েছে জালিয়াতি ও দস্তাবেজ forging, প্রতারণা এবং ষড়যন্ত্র।
এই রায়ের পর তাদেরকে জেল হাজতে পাঠানো হয়, এবং আদালতে আপিল করার সম্ভাবনাও রাখা হয়েছে। প্রতিক্রিয়া হিসাবে, সমাজবাদী পার্টি (SP) থেকে তাদের সমর্থকরা বলছেন, আজম খান ও তাঁর পরিবারকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার করা হচ্ছে। SP সভাপতি অখিলেশ যাদব এক সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন, “আজম খানকে লক্ষ্য করে একটি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র চালানো হয়েছে।”
তবে আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ঘটনা শুধু পার্টির রাজনৈতিক অন্তর্কলহ নয়, বরং আইনগত স্বচ্ছতার পক্ষেও গুরুত্ব বহন করে। তাদের মতে, যদি রাজনীতিকদের বিরুদ্ধে আইনগত দণ্ডন বিষয়টি সাধারণ নিয়মে গড়ে ওঠে, তাহলে ভবিষ্যতে নির্বাচনী স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়াতে এটি মাইলফলক হতে পারে।
সামাজিক প্রভাবও কম নয়। রামপুর ও আশপাশের এলাকায় আজম খানকে সমর্থন করা এক বড় জনসংখ্যা রয়েছে, এবং এই রায় তাদের মধ্যে হতাশা ও উদ্বেগ বাড়াতে পারে। অনেক সমর্থককে উদ্বিগ্ন করতে পারে, “যদি ক্ষমতাসীন বিরোধী দলগুলোর রাজনৈতিক নেতা আজমের মতো ঘটনা ভোগ করে, তাহলে সাধারণ কর্মী–নেতারাও কি কখনও নিরাপদ?” অন্যদিকে, বিরোধীরা এই রায়কে একটি বিজয় হিসেবে দেখছেন আইন প্রয়োগে কোনো ভেদাভেদ নেই এবং ক্ষমতাধারীদের আচরণেও জবাবদিহিতা আসে।
এখন দৃষ্টির দিকে রয়েছে আগামী আইনগত ধাপ ও যে প্রভাব এই রায় SP–র রাজনীতিতে ফেলবে। আপিল আদালতে তারা রায় চ্যালেঞ্জ করতে পারে, বা রাজনৈতিক মনোবল গঠন করে দীর্ঘ মেয়াদে ফিরে আসার পরিকল্পনা করতে পারে।
সত্যিই, রামপুর PAN কার্ড কেলেঙ্কারির এই ঘটনা শুধু এক বিচারিক রায়ই নয় এটি রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংবিধানিক প্রশ্নগুলোর জটিল জাল বুনি দিয়েছে, যা উত্তর প্রদেশের ভবিষ্যত রাজনীতিতে নতুন বিস্তার গড়তে পারে।


