রামমন্দিরে হামলার পরিকল্পনা! ফরিদাবাদ থেকে গ্রেপ্তার আইএস জঙ্গি

অযোধ্যার রামমন্দিরে বিস্ফোরণ ঘটানোর পরিকল্পনা ছিল পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই এবং জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এর সঙ্গে সম্পর্কিত এক সন্দেহভাজন জঙ্গির। গুজরাট ও হরিয়ানা এসটিএফের…

Ayodhya's Ram Mandir Terror Plot Foiled, Suspect Arrested with Grenades

short-samachar

অযোধ্যার রামমন্দিরে বিস্ফোরণ ঘটানোর পরিকল্পনা ছিল পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই এবং জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এর সঙ্গে সম্পর্কিত এক সন্দেহভাজন জঙ্গির। গুজরাট ও হরিয়ানা এসটিএফের যৌথ অভিযানে ফরিদাবাদ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১৯ বছর বয়সী আবদুল রহমান নামে এক যুবককে। তদন্তকারীদের দাবি, অভিযুক্তের কাছ থেকে দুটি হ্যান্ড গ্রেনেড বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে, যা ওই হামলার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ব্যবহার হওয়ার কথা ছিল।

   

গ্রেপ্তারকৃত আবদুল রহমান মিল্কিপুরের বাসিন্দা, যে ব্যক্তিগতভাবে ইসলামিক স্টেট খুরাসান প্রোভিন্স (আইএসকেপি)-এ যোগ দিয়েছিল এবং সেখানে অনলাইনে ট্রেনিংও নিয়েছিল। তার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর। সিপিএম-এ শিরোনামে চলে আসা এই ঘটনা রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা দৃষ্টিকোণ থেকে একটি বড় উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।

তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, আবদুল রহমান এবং তার সংগঠন রামমন্দির ও গুজরাটের সোমনাথ মন্দিরে বিস্ফোরণ ঘটানোর ছক করেছিল। যদিও অভিযুক্তের সঙ্গে সরাসরি হামলা চালানোর উদ্দেশ্য ছিল না, কিন্তু সন্ত্রাসী কার্যক্রমে যুক্ত থাকার কারণে তার পরিকল্পনা ছিল ভয়াবহ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রহমান রামমন্দিরে রেইকি করতে গিয়েছিল এবং মন্দিরের ছবিও তার মোবাইল ফোনে পাওয়া গেছে। সে একাধিকবার সেখানকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছিল।

রামমন্দিরে বিস্ফোরণ ঘটানোর পরিকল্পনা চালানোর আগে আবদুল রহমান সম্প্রতি দিল্লি যাওয়ার নাম করে ফরিদাবাদ গিয়েছিল। সেখানে একটি হোটেলে “শংকর” নাম নিয়ে অবস্থান করে সে। সেখানে এক হ্যান্ডেলারের মাধ্যমে একটি হ্যান্ড গ্রেনেড সংগ্রহ করে এবং এটি তার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ব্যবহার করার জন্য প্রস্তুত ছিল। এর পরেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে আবদুল রহমান স্বীকার করেছে যে, সে আইএসের সঙ্গে যুক্ত ছিল এবং রামমন্দিরে হামলার পরিকল্পনা করার পাশাপাশি গুজরাটের সোমনাথ মন্দিরেও বিস্ফোরণ ঘটানোর ছক ছিল তার। তার মোবাইল ফোন থেকে পাওয়া গিয়েছে, দেশের বিভিন্ন ধর্মীয় স্থানের ছবি ও ভিডিও, যা সন্ত্রাসী কার্যক্রমের জন্য ব্যবহৃত হতে পারে।

তদন্তকারীরা জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, রহমানের পরিকল্পনা ছিল বড় আক্রমণ ঘটানোর। হামলা সংঘটিত হলে তা সারা দেশে তীব্র অশান্তি সৃষ্টি করতে পারত। তদন্তকারীদের দাবি, এই নাশকতামূলক পরিকল্পনার পেছনে বড় ধরনের আন্তর্জাতিক যোগসাজশ থাকতে পারে। এরই মধ্যে আবদুল রহমানের বাড়িতে তল্লাশি চালানো হচ্ছে এবং গোয়েন্দা বাহিনী পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।

এমনকি এনআইএ (ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি) এবং আইবি (ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো) থেকেও এই বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, এই ধরনের ঘটনা দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য একটি বড় সতর্কবার্তা। যদি পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হতো, তাহলে তা শুধুমাত্র দেশীয় নিরাপত্তার জন্য নয়, ধর্মীয় স্থাপনাগুলির নিরাপত্তা নিয়েও বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করত।

এখনও পর্যন্ত তদন্তকারীরা আবদুল রহমানের সাথে তার অন্যান্য সহযোগীদের সম্পর্ক এবং আইএস ও আইএসআইয়ের সাথে তার যোগাযোগের বিষয়টি বিস্তারিতভাবে যাচাই করছেন। গোয়েন্দা সংস্থাগুলি মনে করছে, এটি একটি বড় আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী ষড়যন্ত্রের অংশ হতে পারে, যার লক্ষ্য ছিল ভারতের ধর্মীয় স্থাপনাগুলির বিরুদ্ধে হামলা চালানো।

এখন দেখা যাক, এই তদন্তের পর আরও কী তথ্য বেরিয়ে আসে এবং দেশের নিরাপত্তা বাহিনী এই ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেয়।