Atique Ashraf Murder: ‘মিট্টি মে মিলা দুঙ্গা’ অপারেশনের অংশ? ‍‘জীবন্ত‍’ হত্যাকাণ্ড নিয়ে ৫ প্রশ্ন

শনিবার গভীর রাতে উত্তরপ্রদেশের কুখ্যাত মাফিয়া ডন আতিক আহমেদ (Notorious gangster-turned-politician Atique Ahmed)ও তার ভয়ঙ্কর ভাই খালিদ ওরফে আশরাফকে খুন করা হয়।

Atiq Ashraf lying on the ground after being shot in a public space

শনিবার গভীর রাতে উত্তরপ্রদেশের কুখ্যাত মাফিয়া ডন আতিক আহমেদ (Notorious gangster-turned-politician Atique Ahmed)ও তার ভয়ঙ্কর ভাই খালিদ ওরফে আশরাফকে খুন করা হয়। আতিকের আশেপাশে মিডিয়ার ক্যামেরা বসানোর সময় এ ঘটনা ঘটে। সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছিল। আতিকের নিরাপত্তায় আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত ১৭ পুলিশ সদস্যের একটি দলও ছিল। এরপরও সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে তিন দুর্বৃত্ত এসে গুলি করে ঘটনাটি ঘটায়। এরপর ঘটনাস্থলেই পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করে দুর্বৃত্তরা।

এখন পুলিশ দাবি করছে, দুর্বৃত্তরা সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বাইট নেওয়ার অজুহাতে আতিকের কাছাকাছি এসেছিল। কিন্তু এই ঘটনার পরিস্থিতি এবং পুলিশের প্রতিক্রিয়া দেখে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এখন এসব প্রশ্নের উত্তর দিতে পুলিশ বিরত রয়েছে। এখানে আমরা এরকম পাঁচটি প্রশ্নের মাধ্যমে পুরো ঘটনাটি জানার চেষ্টা করব। এতে আমরা বলার চেষ্টা করব, এই বিষয়টি অপারেশন ‘মিট্টি মে মিলা দুঙ্গা’-এর একটি অংশ, নাকি এটি নিরাপত্তার ত্রুটি।

প্রশ্ন ১: দুর্বৃত্তরা কিভাবে আতিকের কাছে পৌঁছেছিল?
এই ঘটনায় প্রথম এবং প্রধান প্রশ্ন হল আতিকের জীবনের বিপদের আশঙ্কা ছিল। সেজন্য কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর পরও কীভাবে অস্ত্রধারী দুর্বৃত্তরা আতিকের কাছেই আসেনি, পিস্তল বের করে সবার সামনে তাকে হত্যা করেছে। প্রশ্নটাও এ কারণে যে, এটা যদি গ্যাং ওয়ারের ঘটনা হতো, তাহলে দূরে বসে থাকা স্নাইপার দিয়ে হামলা করত দুর্বৃত্তরা। সাধারণত কোনো গ্যাং পুলিশ সদস্যদের মাঝে ঢুকে অপরাধ করার সাহস পায় না।

প্রশ্ন ২: নিরাপত্তার এত বড় ত্রুটি কিভাবে?
প্রয়াগরাজে মাফিয়া ডন আতিক আহমেদ এবং তার ভাই আশরাফের অনেক শত্রু রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে তার জীবন বিপন্ন। পুলিশও বিষয়টি অবগত ছিল। এতদসত্ত্বেও তার নিরাপত্তায় এত বড় ত্রুটি কীভাবে হতে পারে? কেন পুলিশ আতিকের সাথে এমন ঘটনার ইনপুট আগে থেকেই পায়নি, অথচ স্থানীয় গোয়েন্দা ইউনিট ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকেই সক্রিয় হয়েছিল। প্রতি মুহূর্তের রিপোর্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হচ্ছিল। এর পরে দ্বিতীয় প্রশ্নটি হল, দুর্বৃত্তরা যখন পিস্তল বের করে, তখন পুলিশ সদস্যরা কেন তাদের বাধা দেয়নি? পুলিশ সদস্যরা আতিক ও আশরাফ দুজনের হাত ধরে হাঁটছিলেন।

প্রশ্ন ৩: মিডিয়া ট্রায়াল কেন?
আতিক আহমেদ একজন সাজাপ্রাপ্ত বন্দী, আর আশরাফ একজন বিচারাধীন। দুজনই বিচার বিভাগীয় হেফাজতে থেকে পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। আইন অনুসারে, এমন পরিস্থিতিতে মিডিয়া ট্রায়ালের কথাই বলা যাক, এমনকি তাদের পরিবারের সদস্যদের আদালতের বাইরে দেখা করতে দেওয়া যাবে না। এমতাবস্থায় মাঝপথে পুলিশ কেন মিডিয়া ট্রায়াল করল, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলা দরকার। কেন মিডিয়াকে আতিক ও আশরাফের কাছে আসতে দেওয়া হলো।

প্রশ্ন ৪: রাতে ডাক্তারি পরীক্ষা কেন?
আতিক আহমেদের রিমান্ড এখনো শেষ হয়নি। তিন দিন আগে সবরমতি জেল থেকে এনে আদালতে পেশ করার আগে তার ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়। আদালতে তার প্রতিবেদনও দেওয়া হয়। আইন অনুযায়ী রিমান্ডের মেয়াদ শেষ হলে তার ডাক্তারি পরীক্ষা করার কথা ছিল। কিন্তু এর মধ্যে হঠাৎ কি হলো যে পুলিশ আতিক ও আশরাফকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যায়। বিশেষ পরিস্থিতি ছাড়া দিনের বেলায় কেন এই মেডিকেল টেস্ট করা হয়, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

প্রশ্ন ৫: দুর্বৃত্তরা হঠাৎ কোথা থেকে এল?
যে তিন দুর্বৃত্ত আতিক আহমেদ ও আশরাফ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তাদের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। খোদ পুলিশও মনে করছে এই তিন দুষ্কৃতী বাইরে থেকে এসেছিল। এমতাবস্থায় হঠাৎ কোথা থেকে এই তিন দুর্বৃত্ত এলো প্রশ্ন উঠতে বাধ্য। এ থেকে দ্বিতীয় প্রশ্ন জাগে, এই দুর্বৃত্তরা কীভাবে জানল যে পুলিশ এই দুর্বৃত্তদের নিয়ে হাসপাতালে আসতে চলেছে। এই ঘটনার এফআইআরে পাঁচ অভিযুক্তের কথা বলেছে পুলিশ। এর মধ্যে ঘটনাস্থল থেকে ধরা পড়া তিন দুর্বৃত্তের নাম পাওয়া গেছে। এমতাবস্থায় বাকি দুই দুর্বৃত্ত কারা তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।