হরিয়ানা: হরিয়ানার রোহতকে ফের রহস্যজনক আত্মহত্যা ঘিরে তীব্র আলোড়ন। সাইবার সেলে কর্মরত সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) সন্দীপ কুমারকে মঙ্গলবার মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় রোহতক–পানিপত সড়কের ধারে একটি টিউবওয়েলের পাশ থেকে। অকুস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছে তিন পাতার একটি সিউসাইট নোট এবং একটি ভিডিও বার্তা— যেখানে প্রয়াত আইপিএস কর্মকর্তা ওয়াই পুরন কুমারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন তিনি।
ওয়াই পুরন কুমারের নামে বিস্ফোরক অভিযোগ
চিঠিতে সন্দীপ কুমার লিখেছেন, “ওয়াই পুরন কুমার ছিলেন এক দুর্নীতিগ্রস্ত অফিসার। তাঁর বিরুদ্ধে বিপুল প্রমাণ রয়েছে।” একইসঙ্গে জানিয়েছেন, চলমান তদন্তে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছিলেন এবং মৃত্যুর আগে “দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যবস্থার মুখোশ উন্মোচন করতেই” আত্মাহুতির পথ বেছে নিয়েছেন তিনি।
চিঠির আরও এক অংশে তাঁর বক্তব্য, “আমি নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানাতে নিজের জীবন উৎসর্গ করছি। এই দুর্নীতিগ্রস্ত পরিবারকে রেহাই দেওয়া উচিত নয়।” সন্দীপের অভিযোগ, প্রয়াত আইপিএস পুরন কুমার জাতিগত রাজনীতির প্রভাবে গোটা প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ফেলেছিলেন।
সূত্রের খবর, এএসআই সন্দীপ কুমার ছিলেন সেই তদন্তদলের সদস্য, যারা ওয়াই পুরন কুমারের বন্দুকধারী সুশীল কুমারকে ঘিরে মামলার অনুসন্ধান করছিলেন। যদিও তিনি সরাসরি তদন্তকারী অফিসার ছিলেন না।
আইপিএস কর্মকর্তার মৃত্যু ASI Suicide IPS Corruption
উল্লেখ্য, ৭ অক্টোবর চণ্ডীগড়ের সেক্টর ১১-এ নিজের সরকারি বাসভবনে মৃত অবস্থায় উদ্ধার হয় ৫২ বছর বয়সি আইপিএস কর্মকর্তা ওয়াই পুরন কুমারের দেহ। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাঁর দেহ উদ্ধারের পর প্রাথমিক তদন্তে আত্মহত্যার ইঙ্গিত মিলেছিল। তখন তিনি রোহতকের সুনারিয়া পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের ইন্সপেক্টর জেনারেল পদে কর্মরত ছিলেন।
মৃত্যুর আগে নিজের আত্মহত্যার চিঠিতে পুরন কুমার আটজন সিনিয়র আইপিএস আধিকারিকের নাম উল্লেখ করেন, তাঁদের মধ্যে ছিলেন হরিয়ানার ডিরেক্টর জেনারেল অফ পুলিশ শত্রুজিৎ কপূর এবং প্রাক্তন রোহতক এসপি নরেন্দ্র বিজারনিয়া। অভিযোগ করেন, তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে তাঁকে মানসিকভাবে নিপীড়ন ও জাতিগত বৈষম্যের শিকার করেছেন।
নতুন জটিলতা
রোহতকের পুলিশ সুপার সুরেন্দ্র সিং ভোরিয়া জানান, “সন্দীপ কুমার অত্যন্ত সৎ ও পরিশ্রমী অফিসার ছিলেন। তাঁর দেহ উদ্ধার হয়েছে। ফরেনসিক টিম ঘটনাস্থলে তদন্ত করছে।”
ওয়াই পুরন কুমারের আত্মহত্যাকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া তদন্তে এএসআই সন্দীপ কুমারের মৃত্যুর পর নতুন জটিলতা দেখা দিয়েছে। একের পর এক মৃত্যুর ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে হরিয়ানার পুলিশ প্রশাসনের ভিত নিয়েও।