নয়াদিল্লি: দিল্লির বিধানসভা ভোটে বিপর্যয়ের মুখে আপ৷ হেরে গিয়েছেন খোদ আম আদমি পার্টি (আপ)-র প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল। আপ-এর ফলাফল দেখার পরই ‘শিষ্য’কে নিয়ে আক্ষেপের সুর শোনা গেল সমাজকর্মী আন্না হজারের গলায়। তিনি জানান, নির্বাচনে সাফল্য পেতে কোনটা করণীয়, সে বিষয়ে অতীতে বহু বার কেজরিকে বুঝিয়েছেন তিনি। কিন্তু তাঁর কথায় আমল দেননি আপ সুপ্রিমো। উল্টে ধনদৌলতের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছেন৷ আচ্ছন্ন থেকেছেন অর্থের আবেশে৷
দুর্নীতির বিরুদ্ধে অনশন মঞ্চ থেকেই জন্ম হয়েছিল আম আদমি পার্টির৷ আর দেড় দশক আগে সেই দলের প্রধান হিসেবে রাজনীতিতে আবির্ভাব ঘটেছিল অরবিন্দ কেজরিওয়ালের। বাকিটা ইতিহাস৷ তবে ইতিহাস যেমন শাসকের উত্থান মনে রাখে, তেমন পতনও মনে রাখে। অরবিন্দ কেজরিওয়ালের ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম ঘটল না৷
কেজরির ব্যর্থতা প্রসঙ্গে আন্না আরও বলেন, “আমি আগে থেকেই বলে আসছি, নির্বাচনের সময়ে প্রার্থীর আচরণ এবং ভাবনাচিন্তা শুদ্ধ থাকা উচিত। নির্বাচনে দাঁড়ানোর জন্য কোনও প্রার্থীর জীবন নিষ্কলঙ্ক হওয়াটাও অত্যন্ত জরুরি। তাঁর জীবনে ত্যাগ থাকতে হবে। কারও মধ্যে এই গুণগুলি থাকলে তবেই ভোটারদের মনে তাঁর প্রতি বিশ্বাস জন্মায়। আমি এই কথাগুলো বার বার বলেছি। কিন্তু ওঁর (কেজরির) মাথায় সে সব প্রবেশ করেনি। তিনি বেশি গুরুত্ব দেন মদের উপর। তিনি ধনদৌলতের মধ্যেই আটকে গিয়েছিলেন। মদের জন্যেই বদনাম হয়ে গেলেন। আর মানুষও এটা ভাবল যে, যিনি ভাবমূর্তির কথা বলেন, তিনিই মদের দোকান বাড়ান!’’
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে আবগারি নীতি নিয়ে বিরোধীরা সরব হওয়ার পরই ভাবশিষ্যকে চিঠি লিখেছিলেন আন্না৷ সেখানে তিনি লিখেছিলেন, ‘‘তুমি মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর এই প্রথম তোমাকে চিঠি লিখছি। কেননা তোমার সরকারের আবগারি নীতি নিয়ে যে খবর সামনে আসছে, তাতে আমি ব্যথিত৷ মদের মতো টাকাও নেশাচ্ছন্ন করে তোলে। ক্ষমতা তোমাকে মাতাল করেছে।’’
আন্নার কথায়, ‘‘রাজনীতিতে অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগের পর্ব চলতেই থাকে৷ কিন্তু, সেইসব অভিযোগকে ভুল প্রমাণ করে দেখানোও জরুরি। নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে হয়৷ জনগণে বোঝাতে হয় যে আমি মিথ্যা অভিযোগের শিকার। প্রমাণ করতে পারলে, কেউ কিচ্ছু করতে পারবে না। কারণ যাহা সত্য, তাহা সত্যই, যাহা মিথ্যা, তাহা মিথ্যা।’’ যদিও দুর্নীতির অভিযোগ এখনও প্রমাণিত হয়নি৷ কিন্তু নিজেকে নির্দোষও প্রমাণ করতে পারেননি কেজরিওয়াল৷