বিখ্যাত চলচিত্র তারকা-রাজনীতিবিদের বিরুদ্ধে মারধরের মামলা

তামিল সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেতা ও তামিলাগা ভেট্ট্রি কাঝাগাম (Politician) দলের প্রধান থালাপতি বিজয় এবং তাঁর নিরাপত্তারক্ষীদের বিরুদ্ধে মাদুরাইয়ে একটি রাজনৈতিক সমাবেশে মারধরের অভিযোগে মামলা দায়ের…

Politician vijay

তামিল সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেতা ও তামিলাগা ভেট্ট্রি কাঝাগাম (Politician) দলের প্রধান থালাপতি বিজয় এবং তাঁর নিরাপত্তারক্ষীদের বিরুদ্ধে মাদুরাইয়ে একটি রাজনৈতিক সমাবেশে মারধরের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। কুন্নম থানায় দায়ের করা এই মামলার ভিত্তি হল পেরাম্বলুরের বাসিন্দা শরৎকুমারের একটি অভিযোগ।

তিনি দাবি করেছেন, গত ২১ আগস্ট মাদুরাইয়ের পারাপাথিতে টিভিকে-র দ্বিতীয় রাজ্য সম্মেলনে বিজয়ের নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁকে মারধর করেছে। এই ঘটনায় বিজয় এবং তাঁর ১০ জন নিরাপত্তারক্ষীর বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার (বিএনএস) তিনটি ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।

   

এই ঘটনা তামিলনাড়ুর রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে, কারণ বিজয় ২০২৬ সালের তামিলনাড়ু বিধানসভা নির্বাচনের জন্য নিজেকে শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করছেন।

অভিযোগকারী শরৎকুমার জানিয়েছেন, মাদুরাইয়ের সমাবেশে তিনি বিজয়ের কাছাকাছি যাওয়ার জন্য একটি ৩০০ মিটার লম্বা র‌্যাম্পে উঠতে চেষ্টা করেছিলেন। এই সময় বিজয়ের নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁকে ধাক্কা দিয়ে নীচে ফেলে দেয়, যার ফলে তাঁর বুকে আঘাত লাগে। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, শরৎকুমার র‌্যাম্প থেকে পড়ে যাওয়ার সময় একটি রেলিং ধরে ঝুলে থাকার চেষ্টা করছেন।

কিন্তু শেষ পর্যন্ত পড়ে যান। তিনি বলেন, “আমি বিজয় স্যারকে কাছ থেকে দেখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু নিরাপত্তারক্ষীরা আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়, যার ফলে আমি আহত হয়েছি।” এই ঘটনার পর তিনি পেরাম্বলুর জেলা পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন।

এই ঘটনা তামিলনাড়ুর রাজনৈতিক মহলে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। বিজেপি নেতা ও প্রাক্তন রাজ্যপাল তামিলিসাই সাউন্দররাজন বিজয়ের আচরণের সমালোচনা করে বলেছেন, “এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। বিজয় যদি রাজনীতিতে প্রবেশ করেছেন, তবে তাঁকে রাজনীতিবিদের মতো আচরণ করতে হবে।

অভিনেতার মতো নয়। নেতা ও কর্মীদের মধ্যে পারস্পরিক সম্মান থাকা উচিত। সমর্থকদের শুধুমাত্র ভক্ত হিসেবে বিবেচনা করা ঠিক নয়।” তিনি এই ঘটনাকে নিন্দনীয় বলে অভিহিত করেছেন।

Advertisements

অন্যদিকে, বিজয়ের ভক্ত ও টিভিকে সমর্থকদের একাংশ দাবি করেছেন, এই অভিযোগ রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের ফল। তারা বলছেন, মাদুরাই সমাবেশে বিজয়ের জনপ্রিয়তা ও জনসমর্থন দেখে ক্ষমতাসীন দ্রাবিড় মুনেত্র কাঝাগাম (ডিএমকে) সরকার অস্বস্তিতে পড়েছে। তারা বিজয়ের দলকে বাধা দেওয়ার জন্য এই ধরনের অভিযোগ উত্থাপন করছে বলে মনে করেন।

যাত্রা২০২৪ সালে টিভিকে প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিজয় তামিলনাড়ুর রাজনীতিতে শক্তিশালী প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছেন। তিনি মাদুরাই পূর্ব থেকে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা করেছেন। সমাবেশে তিনি ডিএমকে-কে তাঁর প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী এবং বিজেপিকে তাঁর ‘একমাত্র মতাদর্শগত শত্রু’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

তিনি বলেন, “টিভিকে কোনো রাজনৈতিক খেলা নয়, এটি একটি মতাদর্শ। ২০২৬ সালের নির্বাচন টিভিকে ও ডিএমকে-র মধ্যে লড়াই।” তিনি কাচ্চাতীভু দ্বীপকে শ্রীলঙ্কার কাছ থেকে ফিরিয়ে আনার এবং তামিলনাড়ুর মৎস্যজীবীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন।

পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনার তদন্ত চলছে। শরৎকুমারের অভিযোগের ভিত্তিতে বিজয় এবং তাঁর নিরাপত্তারক্ষীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হলেও এখনও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। তবে এই ঘটনা বিজয়ের রাজনৈতিক যাত্রায় প্রথম আইনি বাধা হিসেবে দেখা দিয়েছে।

এক্সপ্রেস ট্রেনও এবার থামবে বাড়তি কয়েকটি স্টেশনে, ঘোষণা রেলের

টিভিকে-র মাদুরাই সমাবেশে বিজয়ের জনপ্রিয়তা এবং জনসমর্থন স্পষ্ট হয়েছে, কিন্তু এই মারধরের অভিযোগ তাঁর রাজনৈতিক ইমেজের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। বিজয়ের ভক্তরা এই ঘটনাকে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র বলে দাবি করলেও, সমালোচকরা বলছেন, তাঁর নিরাপত্তারক্ষীদের আচরণ তাঁর নেতৃত্বের দুর্বলতা প্রকাশ করেছে। আগামী দিনে এই মামলার তদন্ত কোন দিকে যায়, তা বিজয়ের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে।

আমাদের Google News এ ফলো করুন

২৪ ঘণ্টার বাংলা নিউজ, ব্রেকিং আপডেট আর এক্সক্লুসিভ স্টোরি সবার আগে পেতে ফলো করুন।

Google News Follow on Google News