চিনের সঙ্গে গোপন সম্পর্কের দাবি তুলে গান্ধী ফাউন্ডেশন কে নিশানা অমিত শাহের

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এবং রাজীব গান্ধী ফাউন্ডেশনের (RGF) বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলে ভারতের রাজনৈতিক মহলে ঝড় তুলেছেন। তিনি দাবি…

Amit Shah alleges rahul gandhi

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এবং রাজীব গান্ধী ফাউন্ডেশনের (RGF) বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলে ভারতের রাজনৈতিক মহলে ঝড় তুলেছেন। তিনি দাবি করেছেন, রাজীব গান্ধী ফাউন্ডেশন চিনের কাছ থেকে অর্থ সাহায্য গ্রহণ করছিল, যার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার এর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

এছাড়াও, তিনি অভিযোগ করেছেন, ২০১৭ সালে ডোকলাম সংঘাতের সময়, যখন ভারতীয় সেনারা চিনের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িত ছিল, তখন রাহুল গান্ধী গোপনে চিনা রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন। এই অভিযোগগুলো ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা এবং কংগ্রেসের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে তীব্র বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

   

অমিত শাহ একটি জনসভায় বলেন, “রাজীব গান্ধী ফাউন্ডেশন চিনা সরকারের কাছ থেকে অনুদান গ্রহণ করছিল, যা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি। এই কারণে আমরা ফাউন্ডেশনের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছি।” ২০২০ সালে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক রাজীব গান্ধী ফাউন্ডেশনের ফরেন কন্ট্রিবিউশন রেগুলেশন অ্যাক্ট (এফসিআরএ) লাইসেন্স বাতিল করে এবং এর আর্থিক কার্যকলাপের তদন্ত শুরু করে।

বিজেপির অভিযোগ, এই ফাউন্ডেশন চিনা সরকার-সমর্থিত সংস্থার কাছ থেকে তহবিল গ্রহণ করছিল, যা ভারতের স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করতে পারে। শাহ আরও বলেন, “কংগ্রেসের এই ধরনের কাজ ভারতের সার্বভৌমত্বের উপর প্রশ্ন তুলেছে।”অমিত শাহ আরও অভিযোগ করেছেন, ২০১৭ সালে ডোকলামে ভারত-চিন সংঘাতের সময় রাহুল গান্ধী চিনা রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে গোপন বৈঠক করেছিলেন।

তিনি বলেন, “যখন আমাদের সেনারা সীমান্তে চিনের বিরুদ্ধে লড়াই করছিল, তখন রাহুল গান্ধী চিনা রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে গোপনে সাক্ষাৎ করছিলেন। এটা কি জাতীয় স্বার্থের বিরুদ্ধে নয়?” ২০১৭ সালে ডোকলামে ভারত ও চিনের মধ্যে ৭৩ দিনের সামরিক সংঘাত হয়েছিল, যখন চিন ভুটানের নিকটবর্তী ভারতীয় সীমান্তে রাস্তা নির্মাণের চেষ্টা করেছিল।

এই সময় রাহুল গান্ধীর চিনা রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সাক্ষাতের খবর প্রকাশ্যে আসার পর তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছিল কংগ্রেস। বিজেপি এই বৈঠককে ‘জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে আপস’ বলে অভিহিত করেছে। এই অভিযোগ রাজনৈতিক মহলে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। বিজেপি নেতা সুকান্ত মজুমদার বলেন, “রাহুল গান্ধী এবং কংগ্রেসের চিনের সঙ্গে সম্পর্ক জাতীয় নিরাপত্তার জন্য বিপজ্জনক।

তাদের ফাউন্ডেশন চিনা অর্থে চলছিল, এবং ডোকলামের সময় তাদের গোপন বৈঠক এটাই প্রমাণ করে।” অন্যদিকে, কংগ্রেস এই অভিযোগকে ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে। কংগ্রেস মুখপাত্র জয়রাম রমেশ বলেন, “বিজেপি তাদের ব্যর্থতা ঢাকতে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছে।

Advertisements

রাজীব গান্ধী ফাউন্ডেশন একটি স্বচ্ছ সংস্থা, এবং ডোকলামে রাহুল গান্ধীর বৈঠক ছিল সাধারণ কূটনৈতিক আলোচনা।”জনগণের প্রতিক্রিয়াএক্স-এ প্রকাশিত পোস্টে এই অভিযোগ নিয়ে জনগণের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, “যদি রাহুল গান্ধী সত্যিই চিনা রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে গোপনে বৈঠক করেন, তবে এটি জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে আপস।

তদন্ত হওয়া উচিত।” আরেকজন লিখেছেন, “বিজেপি কংগ্রেসকে টার্গেট করার জন্য এই ধরনের অভিযোগ তুলছে। এটা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ছাড়া কিছুই নয়।” এই অভিযোগের প্রেক্ষাপটে পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পূর্ববর্তী মন্তব্য উল্লেখযোগ্য, যেখানে তিনি মোদী সরকারকে আমেরিকার ‘রিমোট কন্ট্রোল’ দ্বারা পরিচালিত বলে কটাক্ষ করেছিলেন।

অমিত শাহের এই অভিযোগ বিজেপির চিন-বিরোধী অবস্থানকে আরও জোরালো করেছে এবং কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তাদের আক্রমণকে তীক্ষ্ণ করেছে। এছাড়াও, পশ্চিমবঙ্গে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের ভোটার তালিকায় নাম তোলার অভিযোগের প্রেক্ষিতে এই ঘটনা আরও জটিলতা যোগ করেছে।

সাংবাদিকতার স্বাধীনতায় আঘাত, ডিপিডিপি আইনের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ

অমিত শাহের রাহুল গান্ধী এবং রাজীব গান্ধী ফাউন্ডেশনের বিরুদ্ধে চিনের সঙ্গে সম্পর্কের অভিযোগ ভারতের রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক পরিস্থিতিতে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। ফাউন্ডেশনের উপর নিষেধাজ্ঞা এবং ডোকলাম সংঘাতের সময় রাহুলের কথিত গোপন বৈঠক জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নে গুরুতর উদ্বেগ তৈরি করেছে। এই অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে স্বচ্ছ তদন্তের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে, এবং এটি ভারতের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের উপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে পারে।