পাটনা: বিহারের বিধানসভা নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে, কিন্তু কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর (Rahul Gandhi) দেখা নেই রাজ্যের ভোটমঞ্চে। এই অনুপস্থিতিকেই হাতিয়ার করে কটাক্ষে শান দিয়েছেন বিজেপির আইটি সেল প্রধান অমিত মালব্য। তিনি এক্স (X)-এ একটি ‘মিসিং রাহুল গান্ধী’ গ্রাফিক পোস্ট করে লেখেন, “প্রায় দুই মাস হয়ে গেল রাহুল গান্ধী বিহারে আসেননি। কলম্বিয়ায় ছুটি কাটানো আর ভিডিও ব্লগে মেতে থেকে তিনি রাজ্যের ভোটারদের কথা ভাবার সময়ই পাননি।”
অমিত মালব্যর দাবি, “রাহুল গান্ধীর এই অনুপস্থিতিই প্রমাণ করছে, কংগ্রেস এখন মহাজোটের প্রান্তিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে। বিহারের মানুষ জানেন, কংগ্রেস-আরজেডি মানেই এমন শাসন যেখানে দুর্নীতি আর আত্মস্বার্থই মুখ্য।”
বিহারে আগামী সপ্তাহেই প্রথম দফার ভোট। কিন্তু তার আগেই মহাজোটে (INDIA Bloc) চলছে চরম টানাপোড়েন। এখনও পর্যন্ত কংগ্রেস, রাজদ, সিপিআই ও অন্যান্য শরিক দলগুলোর মধ্যে স্পষ্ট আসন ভাগ হয়নি। ইতিমধ্যেই আরজেডি ১৪৩ আসনে ও কংগ্রেস ৬১ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে, কিন্তু কোনও আনুষ্ঠানিক চুক্তি হয়নি।
কংগ্রেসের একাংশের অভিযোগ— রাহুল গান্ধীর অনুপস্থিতি ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের উদাসীনতার জন্যই বিহারে দলের সংগঠন দুর্বল হয়ে পড়ছে। বহু নেতা টিকিট বণ্টনে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলেছেন।
উল্লেখ্য, গত ১ সেপ্টেম্বর রাহুল গান্ধী শেষবার বিহারে জনসভা করেন— সেই সময় পাটনার গান্ধী ময়দানে তাঁর ‘ভোটার অধিকারের যাত্রা’-র সমাপ্তি সভা হয়েছিল। এই যাত্রা কংগ্রেসের পক্ষ থেকে চালু করা হয়েছিল ভোটার তালিকা সংশোধন প্রক্রিয়ায় অনিয়মের প্রতিবাদে। এরপর থেকে রাহুল আর রাজ্যে ফেরেননি। ফলে বিজেপি নেতৃত্ব তাঁর ‘নিষ্ক্রিয়তা’কে কেন্দ্র করে আক্রমণ জোরদার করেছে।
মালব্য বলেন, “রাহুল গান্ধীর মতো নেতারাই প্রমাণ করছেন কেন কংগ্রেস আজ প্রান্তিক দলে পরিণত। তারা জনগণের সমস্যার চেয়ে নিজেদের প্রচারে বেশি মনোযোগী। বিহারের মানুষ উন্নয়ন চায়, কংগ্রেস নয়।”
তিনি আরও যোগ করেন, “লালু পরিবারের শাসনে বিহার পিছিয়ে পড়েছিল, এখন কংগ্রেস-রাজদ জোট সেই পুরনো দুর্নীতির রাজনীতি ফিরিয়ে আনতে চায়। কিন্তু মানুষ এবার তাদের প্রত্যাখ্যান করবে।”
যদিও রাহুল গান্ধী এক্স-এ সম্প্রতি লিখেছেন, “বিহারের ট্রেনগুলোতে ভিড় অমানবিক, টিকিট পাওয়া অসম্ভব। এই পরিস্থিতি এনডিএ সরকারের ব্যর্থ নীতির ফল।” তিনি আরও জানান, “বিহারের তরুণদের সঙ্গে কথা বলে বুঝেছি— শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থানে ভয়াবহ সংকট তৈরি হয়েছে, আর এর দায় বিজেপি-জেডিইউ সরকারের।”
প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাহুল গান্ধী ও তেজস্বী যাদব বুধবার যৌথভাবে মুজফফরপুর ও দরভঙ্গায় সভা করবেন, যাতে মহাজোটে ‘ভাঙন’-এর গুজবের অবসান হয়। ২ নভেম্বর খগারিয়ায় তাঁর আরও একটি সভার সম্ভাবনাও রয়েছে।
তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এত দীর্ঘ অনুপস্থিতি ইতিমধ্যেই কংগ্রেসের ভাবমূর্তিতে ধাক্কা দিয়েছে। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ ও এনডিএ নেতৃত্ব লাগাতার প্রচার চালিয়ে ভোট-পরিস্থিতি নিজেদের পক্ষে টানার চেষ্টা করছে।


