মোদী রাজ্যে এটিএসের জালে আলকায়দা প্রধান

গুজরাট অ্যান্টি-টেররিস্ট স্কোয়াড (ATS) একটি বড় অভিযানে বেঙ্গালুরু থেকে ৩০ বছর বয়সী শামা পারভিন (Al-Qaeda) নামে এক মহিলাকে গ্রেফতার করেছে, যিনি আল-কায়েদা ইন দ্য ইন্ডিয়ান…

Al-Qaeda chief arrested from Gujrat

গুজরাট অ্যান্টি-টেররিস্ট স্কোয়াড (ATS) একটি বড় অভিযানে বেঙ্গালুরু থেকে ৩০ বছর বয়সী শামা পারভিন (Al-Qaeda) নামে এক মহিলাকে গ্রেফতার করেছে, যিনি আল-কায়েদা ইন দ্য ইন্ডিয়ান সাবকন্টিনেন্ট (AQIS)-এর একটি জঙ্গি মডিউলের মূল নেত্রী হিসেবে অভিযুক্ত। এই গ্রেফতারি ভারতের সন্ত্রাসবাদ বিরোধী অভিযানে একটি উল্লেখযোগ্য সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

শামা পারভিন, যিনি ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা, বেঙ্গালুরুর মনোরযনপাল্য এলাকায় তার ভাইয়ের সঙ্গে থাকতেন। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, তিনি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম, বিশেষ করে ইনস্টাগ্রামের মাধ্যমে একিউআইএস-এর মতাদর্শ প্রচার করতেন এবং তরুণদের সন্ত্রাসবাদে উৎসাহিত করতেন।

   

২০২৫ সালের ৩০ জুলাই, গুজরাট এটিএস বেঙ্গালুরু পুলিশের সহযোগিতায় শামা পারভিনকে তার বাসভবন থেকে গ্রেফতার করে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শামা গত তিন বছর ধরে বেঙ্গালুরুতে তার ভাই, একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে বসবাস করছিলেন। তিনি স্নাতক ডিগ্রিধারী এবং একিউআইএস-এর প্রচার শাখার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

তিনি ইনস্টাগ্রামে আল-কায়েদার একজন শীর্ষ নেতার ভিডিও শেয়ার করতেন এবং তরুণদের জঙ্গি কার্যকলাপে যোগ দেওয়ার জন্য উৎসাহিত করতেন। গ্রেফতারির সময় তার কাছ থেকে ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন এবং অন্যান্য ডিজিটাল সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে। গুজরাট এটিএস তাকে আদালতে হাজির করে ট্রানজিট ওয়ারেন্ট সংগ্রহের পর গুজরাটে নিয়ে গেছে।

এই গ্রেফতারির পটভূমিতে রয়েছে গত ২৩ জুলাই গুজরাট, দিল্লি এবং নয়ডায় চারজন জঙ্গি সন্দেহভাজন ব্যক্তির গ্রেফতারি। এই চারজন—মোহাম্মদ ফারদিন শেখ, সেফুল্লাহ কুরেশি, জিশান আলি এবং মোহাম্মদ ফাইক—একিউআইএস-এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে সংযোগ রক্ষা করতেন।

তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শামা পারভিনের নাম উঠে আসে, যিনি এই মডিউলের প্রধান সমন্বয়কারী হিসেবে কাজ করছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, এই গ্রুপটি ভারতের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সমন্বিত হামলার পরিকল্পনা করছিল এবং বিদেশি হ্যান্ডলারদের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ ছিল।

গুজরাট এটিএস-এর এই অভিযান ভারতের সন্ত্রাসবাদ বিরোধী লড়াইয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। শামা পারভিনের গ্রেফতারি প্রমাণ করে যে জঙ্গি সংগঠনগুলো এখন সোশ্যাল মিডিয়াকে তাদের প্রচার এবং নিয়োগের জন্য ব্যবহার করছে। গুজরাট এটিএস-এর ডিআইজি সুনীল জোশী জানিয়েছেন, “আমরা পাঁচটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টের উপর নজর রাখছিলাম, যারা আল-কায়েদার মতাদর্শ প্রচার করছিল।

এই অ্যাকাউন্টগুলোর মাধ্যমে আমরা শামা পারভিনের কাছে পৌঁছাই।” তিনি আরও বলেন, এই মডিউলটি ভারতে ‘শরিয়া’ প্রতিষ্ঠার জন্য সশস্ত্র বিদ্রোহের পরিকল্পনা করছিল।

Advertisements

এই গ্রেফতারি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। এক্স-এ পোস্টে অনেকে গুজরাট এটিএস-এর প্রশংসা করেছেন, বলেছেন, “শামা পারভিনের মতো জঙ্গি সাধারণ নাগরিকের ছদ্মবেশে আমাদের মধ্যে বসবাস করছিল। এটিএস-এর এই অভিযান জাতীয় নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।”

তবে, কেউ কেউ এই ঘটনায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে টার্গেট করার অভিযোগ তুলেছেন, যা নিয়ে বিতর্ক চলছে।নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারশামা পারভিনের গ্রেফতারির পর বেঙ্গালুরুতে গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এই মডিউলের সঙ্গে আরও ব্যক্তি যুক্ত থাকতে পারেন, এবং তদন্ত চলছে। এছাড়া, গত বছর জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ) বেঙ্গালুরুর কেম্পে গৌড়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে একজন জঙ্গি সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করেছিল, যা এই অঞ্চলে জঙ্গি কার্যকলাপের উপস্থিতি নির্দেশ করে।

শামা পারভিনের গ্রেফতারি ভারতের সন্ত্রাসবাদ বিরোধী লড়াইয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। এটি দেখায় যে সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো এখন প্রযুক্তি ও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে তাদের কার্যকলাপ পরিচালনা করছে।

যুব সমাজে সস্তার নেশার ভয়াল থাবা, ট্রামাডল–ডাইসাইক্লোমিন কম্বিনেশন নিষিদ্ধ করল কেন্দ্র

গুজরাট এটিএস-এর এই অভিযান জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে গোয়েন্দা তৎপরতা ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দক্ষতার প্রমাণ। তবে, এই ঘটনা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর নজরদারি ও সচেতনতার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে।