আকাশবানী ক্যান্টিন থেকে পচা খাবারের নমুনা সংগ্রহ খাদ্য নিয়ামক সংস্থার

মুম্বইয়ের আকাশবাণী এমএলএ গেস্ট হাউসের ক্যান্টিনে (Akashvani Canteen) খাবারের নিম্নমানের অভিযোগে শিবসেনা (শিন্ডে গোষ্ঠী) এমএলএ সঞ্জয় গায়কওয়াড় এক ক্যান্টিন কর্মচারীকে মারধর করায় ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি…

Akashvani Canteen food

মুম্বইয়ের আকাশবাণী এমএলএ গেস্ট হাউসের ক্যান্টিনে (Akashvani Canteen) খাবারের নিম্নমানের অভিযোগে শিবসেনা (শিন্ডে গোষ্ঠী) এমএলএ সঞ্জয় গায়কওয়াড় এক ক্যান্টিন কর্মচারীকে মারধর করায় ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ) কর্তৃপক্ষ আজ ক্যান্টিন থেকে খাবারের নমুনা সংগ্রহ করেছে।

এফডিএ-র এক (Akashvani Canteen) আধিকারিক জানিয়েছেন, “পনির, সেজওয়ান চাটনি, তেল এবং তুর ডালের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এগুলো পরীক্ষাগারে পাঠানো হবে এবং ১৪ দিনের মধ্যে রিপোর্ট পাওয়া যাবে।” এই ঘটনা মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে এবং জনপ্রতিনিধিদের আচরণ ও ক্যান্টিনের খাবারের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

   

ঘটনার বিবরণ

গতকাল রাতে মুম্বইয়ের আকাশবাণী এমএলএ হোস্টেলের ক্যান্টিনে (Akashvani Canteen) এই ঘটনা ঘটে। বুলধানা থেকে নির্বাচিত শিবসেনা এমএলএ সঞ্জয় গায়কওয়াড় ক্যান্টিন থেকে খাবার অর্ডার করেন। তিনি অভিযোগ করেন, তাঁকে দেওয়া ডাল ও ভাত পচা এবং দুর্গন্ধযুক্ত ছিল। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি ক্যান্টিনে গিয়ে ম্যানেজারের সঙ্গে তর্কে জড়ান এবং এক কর্মচারীকে চড়-থাপ্পড় মারেন।

ঘটনাটির একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, যেখানে গায়কওয়াড়কে কর্মচারীর উপর হামলা করতে এবং অন্যদের বিল না দেওয়ার নির্দেশ দিতে দেখা যায়। তিনি দাবি করেন, “আমি প্রথম কামড়ে খাবারে টক স্বাদ পাই “। দ্বিতীয় কামড়ে আমার বমি হয়ে গেছে। খাবারের গন্ধ নিয়ে দেখি, খাবার পচে গেছিল।”

গায়কওয়াড় (Akashvani Canteen) আরও বলেন, তিনি গত ৩০ বছর ধরে এই ক্যান্টিনে খাবার খাচ্ছেন এবং গত ৫.৫ বছর ধরে এখানে থাকছেন। তিনি বারবার খাবারের গুণমান নিয়ে অভিযোগ করেছেন, কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, “ডিম ১৫ দিনের পুরনো, নন-ভেজ খাবার ১৫-২০ দিনের পুরনো, সবজি ২-৪ দিনের পুরনো।

এখানে ৫,০০০-১০,০০০ মানুষ খান। কেউ একটা টিকটিকি পায়, কেউ ইঁদুর বা দড়ি।” তিনি তাঁর আচরণকে ‘শিবসেনা স্টাইল’ বলে সমর্থন করে বলেন, “যদি কেউ হিন্দি, মারাঠি বা ইংরেজিতে না বোঝে, তবে আমার এই পদক্ষেপ নিতে হয়েছে।”

এফডিএ-র পদক্ষেপ (Akashvani Canteen)

ঘটনার পর এফডিএ কর্মকর্তারা দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে ক্যান্টিন (Akashvani Canteen)থেকে খাবারের নমুনা সংগ্রহ করেছেন। এফডিএ-র এক আধিকারিক জানান, পনির, সেজওয়ান চাটনি, তেল এবং তুর ডালের নমুনা পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে।

এই নমুনাগুলোর রিপোর্ট আগামী ১৪ দিনের মধ্যে পাওয়া যাবে, যা থেকে খাবারের গুণমান সম্পর্কে স্পষ্ট তথ্য পাওয়া যাবে। গায়কওয়াড় এফডিএ-র এই তদন্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, তিনি মহারাষ্ট্র বিধানসভার চলমান মৌসুমী অধিবেশনে এই বিষয়টি উত্থাপন করবেন।

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া

এই ঘটনা রাজনৈতিক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। শিবসেনা (ইউবিটি) সাংসদ প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী গায়কওয়াড়ের আচরণের তীব্র নিন্দা করে এক্স-এ লিখেছেন, “শাহ সেনার এমএলএ সঞ্জয় গায়কওয়াড় গত বছর রাহুল গান্ধীর জিহ্বা কাটার জন্য ১১ লাখ টাকার পুরস্কার ঘোষণা করেছিলেন। এখন তিনি একজন গরিব, অসহায় ক্যান্টিন কর্মচারীকে মারধর করছেন।

Advertisements

কিন্তু বিজেপির বন্ধু হওয়ায় (Akashvani Canteen) এটি মিডিয়ায় হৈচৈ হচ্ছে না।” কংগ্রেস নেতা নানা পটোলে বলেন, “এই লোকেরা ক্ষমতার অপব্যবহার করছে। আইন তাদের পক্ষে থাকলেও তারা কেন হাত তুললেন? এই গরিব মানুষটি দিনমজুর, যিনি নিজের পরিবার চালান।”

মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিস এই ঘটনার নিন্দা করে বলেছেন, “এই ধরনের আচরণ কারও জন্য শোভনীয় নয়। এটি বিধানসভার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করে। খাবারের সমস্যা থাকলে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করা যেতে পারে।”

তিনি আরও বলেন, (Akashvani Canteen)এই ঘটনা জনপ্রতিনিধিদের ক্ষমতার অপব্যবহারের ভুল বার্তা দেয়। শিবসেনা (শিন্ডে গোষ্ঠী) নেতা মনীষা কায়ান্দে গায়কওয়াড়কে সমর্থন করে বলেন, “তিনি একজন সংবেদনশীল এমএলএ। তবে ঠিকাদারের নিম্নমানের খাবারের বিষয়টি তদন্ত করা উচিত।”

সামাজিক মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া

সামাজিক মাধ্যমে (Akashvani Canteen)এই ঘটনা ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করেছে। এক্স-এ একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, “খাবারের গুণমান নিয়ে অভিযোগ থাকতে পারে, কিন্তু এভাবে মারধর করা অগ্রহণযোগ্য।” আরেকজন লিখেছেন, “এফডিএ-র তদন্তের ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করা উচিত।”

Kanchan Mullick: চিকিৎসককে মারধরের অভিযোগে ফের শিরোনামে অভিনেতা-বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিক

আকাশবাণী এমএলএ ক্যান্টিনে (Akashvani Canteen)শিবসেনা এমএলএ সঞ্জয় গায়কওয়াড়ের হামলার ঘটনা এবং এফডিএ-র নমুনা সংগ্রহ মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। এফডিএ-র রিপোর্ট এই ঘটনার সত্যতা প্রকাশ করবে এবং ক্যান্টিনের খাবারের গুণমান নিয়ে প্রশ্নের জবাব দেবে। তবে জনপ্রতিনিধির এই আচরণ ক্ষমতার অপব্যবহার এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে।