এয়ার ইন্ডিয়ার ৬ ঘণ্টা আগে বিমানবন্দরে পৌঁছানোর নির্দেশ

এয়ার ইন্ডিয়া (air-india) আজ একটি জরুরি ট্রাভেল অ্যাডভাইজরি জারি করে যাত্রীদের ৬ ঘণ্টা আগে বিমানবন্দরে পৌঁছানোর নির্দেশ দিয়েছে, বিশেষ করে উত্তর ভারতের বিমানবন্দরগুলোতে। এই নির্দেশ অপারেশন সিঁদুরের পর ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার প্রেক্ষিতে জারি করা হয়েছে, যার ফলে জম্মু, শ্রীনগর, লেহ,

জোধপুর, আমৃতসর, ভুজ, জামনগর, চণ্ডীগড় এবং রাজকোটের বিমানবন্দরগুলো ১০ মে সকাল ৫:২৯ পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে এয়ার ইন্ডিয়া এবং অন্যান্য বিমান সংস্থা এই রুটে সমস্ত ফ্লাইট বাতিল করেছে। এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে, যাত্রীদের জন্য রিশিডিউলিং চার্জে এককালীন ছাড় বা পূর্ণ রিফান্ডের ব্যবস্থা করা হবে। এই ঘটনা উত্তর ভারতের বিমান চলাচলে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে।

এয়ার ইন্ডিয়ার নির্দেশের বিবরণ (air-india)

এয়ার ইন্ডিয়ার (air-india) অফিসিয়াল ট্রাভেল অ্যাডভাইজরি অনুযায়ী, যাত্রীদের তাদের ফ্লাইটের নির্ধারিত সময়ের কমপক্ষে ৬ ঘণ্টা আগে বিমানবন্দরে পৌঁছাতে হবে। এই নির্দেশ কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং অতিরিক্ত চেকিং প্রক্রিয়ার কারণে জারি করা হয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীরে জঙ্গি হামলা এবং পাকিস্তানের পাল্টা ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রেক্ষিতে বিমানবন্দরগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

শ্রীনগর বিমানবন্দরে (air-india) উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে, এবং বিমান প্রতিরক্ষা ব্যাটারি সক্রিয় করা হয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সতর্ক করে জানিয়েছে, পাকিস্তান সমর্থিত সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ড্রোন ব্যবহার করে শ্রীনগর বিমানবন্দরে হামলার পরিকল্পনা করতে পারে।

এয়ার ইন্ডিয়া (air-india) এক্স-এ একটি পোস্টে জানিয়েছে, “জম্মু, শ্রীনগর, লেহ, জোধপুর, আমৃতসর, ভুজ, জামনগর, চণ্ডীগড় এবং রাজকোট থেকে এবং এই গন্তব্যে যাওয়া এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইটগুলো ১০ মে সকাল ৫:২৯ পর্যন্ত বাতিল করা হয়েছে। যাত্রীদের জন্য আমরা রিশিডিউলিং বা রিফান্ডের সুবিধা প্রদান করছি।

অপারেশন সিন্দুর ও পাকিস্তানের হামলা

এই উত্তেজনার পটভূমি হল অপারেশন সিন্দুর, যেখানে ৭ মে ভোরে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী পাকিস্তান ও পাকিস্তান-অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরে নয়টি জঙ্গি ঘাঁটিতে নির্ভুল ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়।(air-india)  এই অভিযান পহেলগাঁও ২২ এপ্রিলের জঙ্গি হামলার প্রতিশোধ হিসেবে পরিচালিত হয়, যেখানে ২৬ জন নিরীহ মানুষ নিহত হয়। অপারেশনে জইশ-ই-মোহাম্মদ এবং লস্কর-ই-তৈয়বার ঘাঁটি ধ্বংস করা হয়, এবং ১০০ জনেরও বেশি জঙ্গি  নিহত হয়।

পাকিস্তান এই হামলার জবাবে ৭-৮ মে রাতে জম্মু, শ্রীনগর, আমৃতসর, জলন্ধর, লুধিয়ানা, জয়সলমের, পোখরানসহ ১৫টি শহরে সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলার চেষ্টা করে। ভারতের এস-৪০০ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এই হামলা প্রতিহত করে।

পাকিস্তান বিমান বাহিনীর একটি এডব্লিউএসিএস বিমান পাঞ্জাব প্রদেশে ভূপাতিত হয়, এবং পোখরানে পাকিস্তানের একটি ক্ষেপণাস্ত্র নিষ্ক্রিয় করা হয়। ভারত পাল্টা হামলায় লাহোরে পাকিস্তানের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিষ্ক্রিয় করে।

আকাশে পাক বিপর্যয়! ভারতের হামলায় উড়ে গেল নজরদারি এয়ারক্রাফট

জম্মু ও কাশ্মীরে জঙ্গি কার্যকলাপ

গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, পাকিস্তানের আইএসআই জম্মু ও কাশ্মীরে জঙ্গি ঘাঁটি সক্রিয় করেছে। আনন্তনাগের খুন্দ্রুতে অস্ত্রাগারের কাছে ছয়টি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে, যা জঙ্গিদের হামলার অংশ বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। সন্ত্রাসীদের ভারতীয় সেনা ঘাঁটি এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ) এবং জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।

যাত্রীদের উপর প্রভাব

এয়ার ইন্ডিয়ার (air-india) ফ্লাইট বাতিল এবং বিমানবন্দর বন্ধের কারণে যাত্রীরা ব্যাপক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। শ্রীনগর, জম্মু এবং আমৃতসরের মতো শহরে বেসামরিক উড়ান বন্ধ রয়েছে। দিল্লি বিমানবন্দরে ১৪০টি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। যাত্রীদের বিকল্প ফ্লাইট বা রিফান্ডের জন্য এয়ার ইন্ডিয়ার কন্টাক্ট সেন্টারে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।

নিরাপত্তা ব্যবস্থা

জম্মু ও কাশ্মীর, পাঞ্জাব এবং রাজস্থানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। ভারতীয় বিমান বাহিনী এবং সেনাবাহিনী সীমান্তে সতর্ক রয়েছে। শ্রীনগর বিমানবন্দরে বিমান প্রতিরক্ষা ব্যাটারি সক্রিয় করা হয়েছে। সীমান্তে অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন, যুক্তরাজ্য এবং জাতিসংঘ উভয় দেশকে সংযমের আহ্বান জানিয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন বলে জানিয়েছেন। লাহোরে মার্কিন কনস্যুলেট তাদের কর্মীদের নিরাপদ স্থানে থাকার নির্দেশ দিয়েছে।

এয়ার ইন্ডিয়ার ৬ ঘণ্টা আগে বিমানবন্দরে পৌঁছানোর নির্দেশ এবং ফ্লাইট বাতিল উত্তর ভারতের বিমান চলাচলে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। অপারেশন সিঁদুর এবং পাকিস্তানের পাল্টা হামলার ফলে উত্তেজনা তুঙ্গে। শান্তি প্রতিষ্ঠায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যস্থতা এবং উভয় দেশের সংযম অত্যন্ত জরুরি।