আহমেদাবাদ বিমান দুর্ঘটনায় বড় রায় শীর্ষ আদালতের

ahmedabad-air-india-crash-supreme-court-clears-pilot

নয়াদিল্লি: আহমেদাবাদে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় দোষারোপের ভার থেকে অবশেষে মুক্তি পেলেন নিহত পাইলটের পরিবার। সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট জানিয়েছে, এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার বিমানের এই দুর্ঘটনার জন্য পাইলট-ইন-কমান্ড ক্যাপ্টেন সুমিত সভারওয়ালকে কোনোভাবেই দায়ী করা যাবে না।

Advertisements

শুক্রবার বিচারপতি সুর্যকান্তের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এই পর্যবেক্ষণ দেয়। ৯১ বছর বয়সী পিতা পুষ্করাজ সভারওয়াল আদালতের সামনে দাঁড়িয়ে তাঁর ছেলের নাম পরিষ্কার করার আবেদন জানান। তিনি বলেন, “আমার ছেলে পেশায় অত্যন্ত দক্ষ ও সৎ পাইলট ছিল।

   

কিছুক্ষনের মধ্যে ২২ গজে ভারত-পাক মহারণ, কোথায় দেখবেন ম্যাচ?

তার মৃত্যু তো বেদনাদায়ক, কিন্তু তার উপর মিথ্যা দোষ চাপানো আরও কষ্টের।” বিচারপতি সুর্যকান্ত তাঁকে সান্ত্বনা দিয়ে বলেন, “এই দুর্ঘটনা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। কিন্তু আপনি যেন এই বোঝা বয়ে না বেড়ান যে আপনার ছেলে কোনো ভুল করেছে। আপনার ছেলে দোষী নয়।”

এই মামলায় কেন্দ্রীয় সরকার এবং বেসামরিক বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিজিসিএ (DGCA)-কে নোটিস পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে আদালত বলেছে, পুরো তদন্ত প্রক্রিয়া যেন স্বচ্ছভাবে সম্পন্ন হয় এবং নিহত পাইলটদের মর্যাদা রক্ষা করা হয়।

উল্লেখ্য, এয়ার ইন্ডিয়া বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার বিমানটি চলতি বছরের জুন মাসে আহমেদাবাদ বিমানবন্দরের কাছাকাছি ভয়াবহ দুর্ঘটনার শিকার হয়। বিমানে থাকা ২৬০ জনের সবাই প্রাণ হারান। দুর্ঘটনার প্রাথমিক তদন্তে বিমান চলাচল দুর্ঘটনা অনুসন্ধান ব্যুরো (AAIB) জানায়, উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই বিমানের দুই ইঞ্জিনেই জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।

Advertisements

তদন্তে উঠে আসে, বিমানের দুইটি ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচ হঠাৎ “কাট অফ” অবস্থায় চলে গিয়েছিল, সম্ভবত ভুলবশত। যদিও প্রায় ১০ সেকেন্ড পরে সুইচগুলো আবার চালু করা হয়, ততক্ষণে ইঞ্জিন সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে পড়ে, এবং বিমানটি মাটিতে আছড়ে পড়ে।

এই রিপোর্ট প্রকাশের পর থেকেই পাইলটদের সংগঠন Federation of Indian Pilots (FIP) ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানায়। তাদের বক্তব্য, এটি স্পষ্টতই একটি সিস্টেম ফেইলিওর বা যান্ত্রিক ত্রুটি, এবং এটি পাইলটদের মানবিক ভুল হিসেবে চিহ্নিত করা অন্যায়।

আজ আদালতে এফআইপি-এর পক্ষ থেকেও আবেদন করা হয় যে, দুর্ঘটনার সমস্ত প্রযুক্তিগত তথ্য প্রকাশ্যে আনা হোক। বিচারপতি সুর্যকান্ত বলেন, “যখন জীবন-মৃত্যুর প্রশ্ন, তখন প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণই সত্য প্রকাশ করতে পারে। আমরা সত্য জানতে চাই, দোষারোপ নয়।”

এই রায়ে পাইলট সমাজে স্বস্তির হাওয়া বইছে। বিশেষ করে পাইলট সুমিত সভারওয়ালের পরিবারে গভীর বেদনার মাঝেও কিছুটা শান্তি ফিরেছে। বৃদ্ধ পিতা আদালত চত্বর ছাড়ার আগে সাংবাদিকদের বলেন, “আজ আমার ছেলের আত্মা শান্তি পাবে। আমি জানতাম, সে দোষী নয়।”