দিল্লি ক্রাইম ব্রাঞ্চের জালে ছিনতাই চক্রের মূল পান্ডা আফতাব

দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ (Crime Branch) একটি সক্রিয় ছিনতাই চক্রের পতন ঘটিয়ে রোহিণীর সেক্টর ১০/১১ এলাকার জাপানিজ পার্কের কাছে একটি নাবালক (চাইল্ড ইন কনফ্লিক্ট উইথ…

Crime Branch arrest gang

দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ (Crime Branch) একটি সক্রিয় ছিনতাই চক্রের পতন ঘটিয়ে রোহিণীর সেক্টর ১০/১১ এলাকার জাপানিজ পার্কের কাছে একটি নাবালক (চাইল্ড ইন কনফ্লিক্ট উইথ ল, সিসিএল) এবং ২২ বছর বয়সী আফতাব ওরফে সুখাকে গ্রেফতার করেছে। এই দুই অভিযুক্ত ব্যক্তি একাধিক চুরি, মোবাইল ফোন চুরি এবং অন্যান্য অনুরূপ অপরাধে জড়িত ছিলেন।

ক্রাইম ব্রাঞ্চের নর্দার্ন রেঞ্জ-১-এর একটি দল তাদের ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (বিএনএসএস)-এর ধারা ৩৫(১)(সি) এবং ১০৬-এর অধীনে গ্রেপ্তার করেছে। জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্তরা জানিয়েছেন, তারা চিরাগ দিল্লি, সাকেত, মেহরৌলি এবং দ্বারকা এলাকায় একাধিক চুরি ও ডাকাতির ঘটনা ঘটিয়েছে।

   

তাদের কাছ থেকে ৫৩টি উচ্চমানের মোবাইল ফোন (Crime Branch) উদ্ধার করা হয়েছে, যার মধ্যে ৩০টি এখন পর্যন্ত দিল্লি-এনসিআর-এর এফআইআর, ই-এফআইআর এবং হারানো রিপোর্টের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছে।

অপরাধের ধরন ও তদন্ত

দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ (Crime Branch) গোপন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে রোহিণীর জাপানিজ পার্কের কাছে অভিযান চালায়। এই অভিযানে আফতাব ওরফে সুখা এবং একজন নাবালককে হাতেনাতে ধরা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করেছে যে, তারা দীর্ঘদিন ধরে দিল্লি-এনসিআর-এর বিভিন্ন এলাকায় চুরি ও ডাকাতির ঘটনায় জড়িত ছিল।

তাদের প্রধান লক্ষ্য ছিল বাড়ি, দোকান এবং ব্যক্তিগত সম্পত্তি থেকে মোবাইল ফোন, নগদ অর্থ এবং অন্যান্য মূল্যবান জিনিস চুরি করা। অভিযুক্তরা চিরাগ দিল্লি, সাকেত, মেহরৌলি এবং দ্বারকার মতো পশ্চিম ও দক্ষিণ দিল্লির এলাকাগুলিতে তাদের অপরাধমূলক কার্যকলাপ চালিয়েছে।

তদন্তের অগ্রগতি

অভিযুক্তদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া ৫৩টি মোবাইল ফোনের মধ্যে ৩০টি ইতিমধ্যে দিল্লি-এনসিআর-এর বিভিন্ন থানায় দায়ের করা এফআইআর, ই-এফআইআর এবং হারানো রিপোর্টের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছে। এই ফোনগুলির মধ্যে বেশিরভাগই উচ্চমানের এবং ব্যয়বহুল ব্র্যান্ডের, যা চুরির পর অবৈধভাবে বিক্রির উদ্দেশ্যে সংগ্রহ করা হয়েছিল।

পুলিশ জানিয়েছে, বাকি ফোনগুলির সঙ্গে সম্পর্কিত মামলাগুলি শনাক্ত করার জন্য তদন্ত চলছে। এই অভিযান দিল্লি-এনসিআর-এ (Crime Branch) বাড়তে থাকা মোবাইল চুরি ও ডাকাতির ঘটনা নিয়ন্ত্রণে একটি বড় সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

অভিযুক্তদের পটভূমি

২২ বছর বয়সী আফতাব ওরফে সুখা এবং নাবালক অভিযুক্ত (সিসিএল) দিল্লির রোহিণী এলাকার বাসিন্দা। জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে, তারা একটি সংঘবদ্ধ চক্রের অংশ হিসেবে কাজ করত। এই চক্রটি পরিকল্পিতভাবে বাড়ি ও দোকানে ডাকাতি এবং রাস্তায় মোবাইল ফোন ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটাত।

অভিযুক্তরা (Crime Branch)  তাদের অপরাধের জন্য বিশেষ কৌশল ব্যবহার করত, যেমন ভিড়ের মধ্যে দ্রুত চুরি করে পালিয়ে যাওয়া এবং চুরি করা মোবাইল ফোনগুলি কম দামে অবৈধ বাজারে বিক্রি করা। নাবালক অভিযুক্তের জড়িত থাকার বিষয়টি বিশেষ উদ্বেগের কারণ, কারণ এটি শিশু অপরাধের ক্রমবর্ধমান প্রবণতার দিকে ইঙ্গিত করে।

আইনি ব্যবস্থা

আফতাব ওরফে সুখা এবং নাবালক অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (বিএনএসএস)-এর ধারা ৩৫(১)(সি) এবং ১০৬-এর অধীনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ধারা ৩৫(১)(সি) চুরি এবং সম্পর্কিত অপরাধের জন্য শাস্তির বিধান করে, যেখানে ধারা ১০৬ সংঘবদ্ধ অপরাধের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।

Advertisements

নাবালক অভিযুক্তের (Crime Branch) ক্ষেত্রে কিশোর ন্যায় আইনের অধীনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, এবং তাকে জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের সামনে হাজির করা হবে। পুলিশ জানিয়েছে, এই চক্রের অন্যান্য সদস্যদের শনাক্ত করতে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

দিল্লি-এনসিআর-এ চুরি ও ডাকাতির প্রেক্ষাপট

দিল্লি-এনসিআর-এ মোবাইল ফোন চুরি এবং ডাকাতির ঘটনা গত কয়েক বছরে উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। উচ্চমানের স্মারটফোনের চাহিদা এবং অবৈধ বাজারে এর সহজ বিক্রয় এই ধরনের অপরাধ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। চিরাগ দিল্লি, সাকেত, মেহরৌলি এবং দ্বারকার মতো এলাকাগুলি এই ধরনের অপরাধের জন্য কুখ্যাত হয়ে উঠেছে।

দিল্লি (Crime Branch) পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ এই ধরনের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০২৫ সালের জুলাই মাসে নয়ডায় একটি অনুরূপ চোর চক্র ভেঙে দেওয়া হয়েছিল, যেখানে তিনজন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তাদের বিরুদ্ধে ৬০টিরও বেশি মামলা ছিল।

সামাজিক ও আইনি প্রভাব (Crime Branch) 

এই গ্রেপ্তারি দিল্লি-এনসিআর-এর নাগরিকদের মধ্যে নিরাপত্তার অনুভূতি ফিরিয়ে আনতে সহায়ক হবে। তবে, একজন নাবালকের এই ধরনের অপরাধে জড়িত থাকা শিশু অপরাধের ক্রমবর্ধমান প্রবণতার দিকে ইঙ্গিত করে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, শিশুদের অপরাধে জড়িয়ে পড়া রোধে সামাজিক সচেতনতা, শিক্ষা এবং পুনর্বাসন কর্মসূচির প্রয়োজন। দিল্লি পুলিশ এই ধরনের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে জনসাধারণের সহযোগিতা চেয়েছে এবং হারানো মোবাইল ফোনের রিপোর্ট দ্রুত দায়ের করার জন্য উৎসাহিত করছে।

পুলিশের ভূমিকা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চের (Crime Branch) এই সাফল্য তাদের সক্রিয় তদন্ত ও অভিযানের ফল। পুলিশ জানিয়েছে, তারা এই চক্রের অন্যান্য সদস্যদের শনাক্ত করতে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করছে এবং অবৈধ মোবাইল ফোন বাজারের বিরুদ্ধে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া, জনসাধারণের নিরাপত্তা বাড়াতে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন এবং রাত্রিকালীন টহল জোরদার করা হচ্ছে।

দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চের এই অভিযান দিল্লি-এনসিআর-এর ক্রমবর্ধমান চুরি ও ডাকাতির ঘটনা নিয়ন্ত্রণে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। আফতাব ওরফে সুখা এবং একজন নাবালকের গ্রেপ্তারি এবং ৫৩টি মোবাইল ফোন উদ্ধার এই অঞ্চলের নাগরিকদের জন্য স্বস্তির বিষয়।

তবে, শিশু অপরাধের প্রবণতা এবং অবৈধ মোবাইল বাজারের বিস্তার রোধে আরও ব্যাপক পদক্ষেপের প্রয়োজন। দিল্লি পুলিশের এই সাফল্য জনগণের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনবে এবং ভবিষ্যতে এই ধরনের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আরও কার্যকর ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।