ভয়াবহ পরিস্থিতি। ফের হিমালয়ে বিপর্যয়। ধসে চাপা পড়ে জম্মু-কাশ্মীরের বৈষ্ণোদেবী যাত্রী নিহত।
৫ জন নিহত, ১৪ জন আহত বৈষ্ণো দেবী মন্দিরের পথে ভূমিধসে
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আধকুয়ারিতে ইন্দ্রপ্রস্থ ভোজনালয়ের কাছে উদ্ধার অভিযান চলছে। কাটরা থেকে পাহাড়চূড়ার মন্দির পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার আঁকাবাঁকা পথে প্রায় মাঝামাঝি জায়গায় এই ভূমিধস ঘটে।
অবিরাম ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে ত্রিকুট পর্বতের উপরে অবস্থিত মাতা বৈষ্ণো দেবী মন্দিরে যাওয়ার পথে ভয়াবহ ভূমিধস ঘটে। এতে কমপক্ষে ৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন এবং ১৪ জন আহত হয়েছেন বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, আরও কয়েকজন ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়েছেন।
জম্মু ও কাশ্মীরের রেয়াসি জেলায় অবস্থিত এই জনপ্রিয় তীর্থস্থানে যাত্রা সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। পাহাড়ের একটি বড় অংশ ধসে পড়ে, এবং দুপুর ৩টার দিকে হঠাৎ করে পাথর, গাছ ও শিলাখণ্ড বয়ে এসে যাত্রীদের ওপর আছড়ে পড়ে, ফলে অনেকে বুঝে ওঠার আগেই আক্রান্ত হন।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আধকুয়ারিতে ইন্দ্রপ্রস্থ ভোজনালয়ের কাছে উদ্ধার অভিযান চলছে। এই ভূমিধসটি কাত্রা থেকে মন্দিরের উদ্দেশে যাওয়া ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ পাহাড়ি যাত্রাপথের প্রায় মাঝামাঝি স্থানে ঘটে।
মন্দিরে যাওয়ার দুটি পথ রয়েছে— একটি হিমকোটি ট্রেক রুট, যা সকাল থেকেই বন্ধ ছিল; আরেকটি পুরনো রুট, যা দুপুর ১:৩০ পর্যন্ত খোলা ছিল। তবে প্রবল বৃষ্টির কারণে সেটিও পরে বন্ধ করে দেওয়া হয়।
শ্রী মাতা বৈষ্ণো দেবী মন্দির বোর্ড এক্স-এ জানিয়েছে:
“আধকুয়ারিতে এক দুঃখজনক ভূমিধসে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ১৪ জন আহত হয়েছেন। উদ্ধার অভিযান চলছে।”
পাঞ্জাবের মোহালির বাসিন্দা কিরণ এই দুর্ঘটনায় আহতদের একজন। তিনি বলেন, “আমি দর্শন করে পাহাড় থেকে নিচে নামছিলাম, তখন লোকজন চিৎকার শুরু করে। দেখলাম ওপর থেকে পাথর পড়ছে। আমি দৌড়ে নিরাপদ স্থানে যেতে চেষ্টা করি, কিন্তু ততক্ষণে আহত হই।”
রাতভর বৃষ্টিপাতের ফলে এই ভূমিধসের সৃষ্টি হয়, যার পরিপ্রেক্ষিতে তীর্থযাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থে শ্রী মাতা বৈষ্ণো দেবী মন্দির বোর্ড অস্থায়ীভাবে যাত্রা স্থগিত করেছে। ভারতের আবহাওয়া বিভাগ (IMD) জম্মু ও কাশ্মীরের একাধিক জেলায় ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করেছে, পাশাপাশি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলিতে বন্যা সতর্কতাও জারি করা হয়েছে। পুরো অঞ্চলের নদীগুলো বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে, যার ফলে আরও ভূমিধস ও আকস্মিক বন্যার আশঙ্কা বেড়ে গেছে।
যদিও ইতিমধ্যে কয়েকজনের মৃত্যুর খবর ও বহু আহতের তথ্য সামনে এসেছে, তবে এখনো পর্যন্ত প্রশাসনের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক নিশ্চিতকরণ আসেনি। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলিতে উদ্ধার ও তল্লাশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।