সাইবার প্রতারকদের জালে ফের লক্ষাধিক অর্থ খোয়ালেন এক বৃদ্ধা। তবে এবার প্রতারণার অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হল “পহেলগাম জঙ্গি হানা”! সাইবার প্রতারকদের মুখ্য “টার্গেট”-ই হলেন বয়োজ্যেষ্ঠয় মানুষেরা। নয়ডা-নিবাসী ৭৬ বছর বয়সী এক বৃদ্ধাকে “পহেলগাম হামলার ষড়যন্ত্রকারীরা তাঁর নম্বর ব্যবহার করেছে” বলে ভয় দেখিয়ে বৃদ্ধার কাছ থেকে ৪৩ লক্ষ টাকা হাতানো হয়েছে।
জানা গিয়েছে, নয়ডার ৪১ নং সেক্টরের বাসিন্দা সরলা দেবীর কাছে একটি ফোন আসে। ওপার থেকে “পুলিশ” বলে নিজের পরিচয় দেয় ওই প্রতারক। বৃদ্ধাকে সে বলে, মুম্বই-এ তাঁর তথ্য ব্যবহার করে একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। যার মাধ্যমে জুয়া, হাওয়ালার পাশাপাশি সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলিকেও ফান্ডিং পাঠানো হয়েছে। সেইসঙ্গে, গত ২১ এপ্রিল পহেলগাম হামলার জন্য জঙ্গিরা সরলাদেবীর ফোন নম্বরও ব্যবহার করেছে বলে জানায় ওই প্রতারক।
এরপর প্রতারকরা সরলা দেবীকে জানায়, যে তাঁর নামে গ্রেফতারির পরোয়ানা জারি হয়েছে। তৎক্ষণাৎ জামিনের টাকা জমা না করলে গ্রেফতার হতে হবে বলে সরলা দেবীকে ভয় দেখায় তাঁরা। সেইসঙ্গে বলে, তদন্ত শেষ হয়ে গেলেই ওই টাকা ফেরত দেওয়া হবে। স্বাভাবিকভাবেই ভয় পেয়ে গিয়ে প্রতারকদের ফাঁদে পা দেন সরলা দেবী। এরপর একাধিক QR কোড পাঠিয়ে গত ২০ জুলাই থেকে ১৩ আগস্টের মধ্যে বৃদ্ধার কাছ থেকে প্রায় ৪৩.৭ লক্ষ টাকার প্রতারণা করে তাঁরা।
প্রথমবার ৭০ হাজার এবং সর্বাধিক ১১ লক্ষ টাকা বিভিন্ন নামের অ্যাকাউন্টে বৃদ্ধা জমা করেন বলে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন। এরপর ১৫ লাখ টাকার জন্য বৃদ্ধাকে গ্রেফতারির ভয় দেখিয়ে জোরাজুরি করতে শুরু করে প্রতারকরা। তখনই বৃদ্ধার সন্দেহ হয়। একজন আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে সরলা দেবী জানতে পারেন বিশাল এক ডিজিটাল ফ্রডের শিকার হয়েছেন তিনি। এরপর সরাসরি পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন সরলা দেবী।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পর আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন তিনি। সেইসঙ্গে প্রতারকদের কঠোর শাস্তি দিয়ে তাঁর টাকা উদ্ধারের জন্য পুলিশের কাছে আর্জি জানিয়েছেন তিনি। অভিযোগ দায়ের করে তদন্তে নেমেছে নয়ডা পুলিশের সাইবার উইং। বস্তুত, বর্তমানের ব্যস্ত-প্রযুক্তির দুনিয়ায় অধিকাংশ সময়ই বাড়িতে একা থাকেন বয়স্ক মানুষেরা। মোবাইল, ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ড ব্যবহার সম্বন্ধে এইসব বয়োজ্যেষ্ঠয় মানুষদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তাঁদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা গায়েব করে দিতে কুণ্ঠাবোধ করে না এই প্রতারকরা।