প্রথমবার জাতি অন্তর্ভুক্ত করে ২০২৭ সালের জনগণনার দিন নির্ধারিত

কেন্দ্রীয় সরকার সোমবার (১৬ জুন ২০২৫) একটি গেজেট বিজ্ঞপ্তি জারি করে ঘোষণা করেছে যে, ২০২৭ সালে ভারতের জনগণনা (census) পরিচালিত হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের জারি করা…

census date announced

কেন্দ্রীয় সরকার সোমবার (১৬ জুন ২০২৫) একটি গেজেট বিজ্ঞপ্তি জারি করে ঘোষণা করেছে যে, ২০২৭ সালে ভারতের জনগণনা (census) পরিচালিত হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের জারি করা এই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “১৯৪৮ সালের জনগণনা (census)আইনের তৃতীয় ধারার অধীনে প্রদত্ত ক্ষমতা প্রয়োগ করে এবং ২৬ মার্চ ২০১৮ তারিখে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের জারি করা বিজ্ঞপ্তি বাতিল করে কেন্দ্রীয় সরকার ঘোষণা করছে যে, ২০২৭ সালে ১ মার্চ ভারতের জনগণনা পরিচালিত হবে।”

এই জনগণনার (census)রেফারেন্স তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ১ মার্চ ২০২৭, তবে লাদাখ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল এবং জম্মু ও কাশ্মীর কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের তুষারাবৃত অ-সিঙ্ক্রোনাস এলাকা এবং হিমাচল প্রদেশ ও উত্তরাখণ্ড রাজ্যের জন্য রেফারেন্স তারিখ হবে ১ অক্টোবর ২০২৬। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ গত ১৫ জুন নয়াদিল্লিতে একটি বৈঠকে আসন্ন জনগণনার প্রস্তুতি পর্যালোচনা করেছেন।

   

এই বৈঠকে স্বরাষ্ট্র সচিব, রেজিস্ট্রার জেনারেল এবং ভারতের জনগণনা কমিশনার (আরজি অ্যান্ড সিসিআই) এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অমিত শাহ এক্স-এ একটি পোস্টে বিস্তারিত জানিয়ে বলেছেন, “আমি ১৬তম জনগণনার প্রস্তুতি পর্যালোচনা করেছি।

আগামীকাল জনগণনার (census) গেজেট বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে। এই জনগণনায় প্রথমবারের মতো জাতি গণনাও অন্তর্ভুক্ত হবে। প্রায় ৩৪ লক্ষ গণনাকারী ও সুপারভাইজার এবং প্রায় ১.৩ লক্ষ জনগণনা কর্মী অত্যাধুনিক মোবাইল ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে এই কাজ সম্পন্ন করবেন।”

জনগণনার দুটি পর্যায় (census)

জনগণনা (census) দুটি পর্যায়ে পরিচালিত হবে। প্রথম পর্যায়ে, হাউস লিস্টিং অপারেশন (এইচএলও) এর মাধ্যমে প্রতিটি পরিবারের আবাসন পরিস্থিতি, সম্পদ এবং সুযোগ-সুবিধার তথ্য সংগ্রহ করা হবে। দ্বিতীয় পর্যায়ে, পপুলেশন এনুমারেশন (পিই) এর মাধ্যমে প্রতিটি পরিবারের প্রত্যেক ব্যক্তির জনসংখ্যাগত, সামাজিক-অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং অন্যান্য বিবরণ সংগ্রহ করা হবে। এই জনগণনায় জাতি গণনাও অন্তর্ভুক্ত হবে, যা ভারতের জনগণনার ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ।

এই কাজে প্রায় ৩৪ লক্ষ গণনাকারী ও সুপারভাইজার এবং ১.৩ লক্ষ জনগণনা কর্মী নিয়োজিত হবেন। এটি ভারতের ১৬তম জনগণনা এবং স্বাধীনতার পর ৮ম জনগণনা। এই জনগণনা সম্পূর্ণ ডিজিটাল পদ্ধতিতে পরিচালিত হবে, যেখানে মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করা হবে। এছাড়াও, জনগণকে স্ব-গণনার সুযোগ দেওয়া হবে, যা এই প্রক্রিয়াকে আরও সুবিধাজনক করবে। তথ্য সংগ্রহ, প্রেরণ এবং সংরক্ষণের সময় কঠোর তথ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে।

জনগণনার তাৎপর্য

ভারতের জনগণনা (census) একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া, যা দেশের জনসংখ্যা, সামাজিক-অর্থনৈতিক অবস্থা, শিক্ষা, কর্মসংস্থান এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশ করে। এই তথ্য সরকারের নীতি প্রণয়ন, পরিকল্পনা এবং উন্নয়নমূলক কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এবারের জনগণনায় (census) জাতি গণনা অন্তর্ভুক্ত করা একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত। এটি বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রদান করবে, যা সরকারের জন্য আরও ন্যায়সঙ্গত নীতি প্রণয়নে সহায়ক হবে।

বিশেষ অঞ্চলের জন্য রেফারেন্স তারিখ

জনগণনার (census) রেফারেন্স তারিখ সাধারণত ১ মার্চ ২০২৭ নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে, লাদাখ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল এবং জম্মু ও কাশ্মীর, হিমাচল প্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডের তুষারাবৃত অ-সিঙ্ক্রোনাস এলাকাগুলোর জন্য রেফারেন্স তারিখ হবে ১ অক্টোবর ২০২৬। এই অঞ্চলগুলোতে প্রতিকূল আবহাওয়া এবং ভৌগোলিক জটিলতার কারণে জনগণনার কাজ আগেই শুরু করা হবে। এই পদক্ষেপ নিশ্চিত করবে যে, এই অঞ্চলগুলোর তথ্যও সঠিকভাবে সংগ্রহ করা যায়।

Advertisements

ডিজিটাল জনগণনা ও স্ব-গণনা

এই জনগণনা (census) সম্পূর্ণ ডিজিটাল পদ্ধতিতে পরিচালিত হবে, যা ভারতের জনগণনার ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। গণনাকারীরা অত্যাধুনিক মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে তথ্য সংগ্রহ করবেন। এছাড়াও, জনগণকে স্ব-গণনার সুযোগ দেওয়া হবে, যার মাধ্যমে তারা নিজেরাই তাদের তথ্য প্রদান করতে পারবেন। এই ব্যবস্থা জনগণনা প্রক্রিয়াকে আরও দ্রুত এবং সুবিধাজনক করবে। তবে, তথ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তথ্য সংগ্রহ, প্রেরণ এবং সংরক্ষণের সময় উন্নত নিরাপত্তা প্রোটোকল অনুসরণ করা হবে।

জনগণনার প্রস্তুতি

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নেতৃত্বে জনগণনার প্রস্তুতি পর্যালোচনা করা হয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় ৩৪ লক্ষ গণনাকারী ও সুপারভাইজার এবং ১.৩ লক্ষ জনগণনা কর্মী নিয়োজিত হবেন। এই বিশাল কর্মীবাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে এবং তাদের অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিত করানো হবে। এই জনগণনা ভারতের জনসংখ্যার সঠিক চিত্র তুলে ধরবে এবং সরকারের উন্নয়নমূলক পরিকল্পনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

জাতি গণনার তাৎপর্য

এই জনগণনায় (census) জাতি গণনা অন্তর্ভুক্ত করা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি ভারতের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং শিক্ষাগত অবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রদান করবে। এই তথ্য সরকারকে আরও ন্যায়সঙ্গত এবং সমতাভিত্তিক নীতি প্রণয়নে সহায়তা করবে। তবে, জাতি গণনার বিষয়টি বিতর্কেরও জন্ম দিতে পারে, কারণ এটি সংবেদনশীল বিষয়। তাই, এই প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

How to Apply for a Business Loan: A Step-by-Step Guide

ভবিষ্যৎ প্রভাব

এই জনগণনা (census) ভারতের জনসংখ্যাগত ও সামাজিক-অর্থনৈতিক চিত্র তুলে ধরবে, যা সরকারের পরিকল্পনা ও উন্নয়নমূলক কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। ডিজিটাল পদ্ধতি এবং স্ব-গণনার সুযোগ এই প্রক্রিয়াকে আরও দক্ষ করবে। তবে, তথ্য নিরাপত্তা এবং গোপনীয়তা নিশ্চিত করা সরকারের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হবে।

এই জনগণনা ভারতের উন্নয়নের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হবে। জাতি গণনা সহ এই প্রক্রিয়া দেশের সামাজিক কাঠামোর একটি বিস্তৃত চিত্র তুলে ধরবে এবং ভবিষ্যৎ নীতি প্রণয়নে সহায়ক হবে।