ভারত ২৮ সেপ্টেম্বর: পহেলগাঁও, জম্মু ও কাশ্মীরের (Pahalgam attack) একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র, গত কয়েক মাস ধরে এক অন্ধকার সময়ের মধ্য দিয়ে গেছে। ২০২৩ সালের মে মাসে, এই অঞ্চলে ঘটে এক ভয়াবহ জঙ্গি হামলা, যা শুধু পর্যটকদের জীবনের জন্যই হুমকি হয়ে ওঠেনি, বরং স্থানীয় অর্থনীতি ও পর্যটন শিল্পকেও বিপর্যস্ত করেছে।
প্রায় ৫০টি পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল নিরাপত্তা জনিত কারণে, ফলে গোটা পহেলগাঁও এলাকা এবং এর আশেপাশে থাকা দর্শনীয় স্থানগুলো জনশূন্য হয়ে পড়েছিল। তবে, ৫ মাস পর, পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসায় এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও দৃঢ় হওয়ায় এবার গুঞ্জন উঠেছে সুখবরের।
গতকাল জম্মু ও কাশ্মীরের উপরাজ্যপাল মনোজ সিনহা নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক শেষে ঘোষণা করেছেন যে, পহেলগাঁওয়ের ১২টি পর্যটন কেন্দ্র সোমবার থেকে আবার খুলে দেওয়া হবে। এর মাধ্যমে পহেলগাঁওয়ের পর্যটন শিল্পে নতুন আশা দেখা দিয়েছে। এই পদক্ষেপটি পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি জম্মু ও কাশ্মীরের অর্থনীতির জন্যও একটি বড় ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করবে।
পহেলগাঁওয়ের পর্যটন কেন্দ্রগুলো পুনরায় খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে জম্মু ও কাশ্মীরের প্রশাসন ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। একটি উপযুক্ত নিরাপত্তা প্ল্যান তৈরি করা হয়েছে, যেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং স্থানীয় পুলিশ বাহিনী যৌথভাবে পর্যটন কেন্দ্রগুলোর আশেপাশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করবে।
নিরাপত্তা বাহিনীর তত্ত্বাবধানে পর্যটন কেন্দ্রগুলো আবার খুলে দেওয়া হবে, যাতে পর্যটকরা নিরাপদে এই এলাকাগুলোতে ভ্রমণ করতে পারেন। সরকারও এ বিষয়ে আশাবাদী, কারণ তারা মনে করেন, পর্যটকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার মাধ্যমে পহেলগাঁওকে পুনরায় তার আগের মতো একটি জনপ্রিয় গন্তব্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব হবে।
জঙ্গি হামলার পর পহেলগাঁওয়ে পর্যটন শিল্পে ব্যাপক সংকট তৈরি হয়েছিল। বন্ধ হয়ে গিয়েছিল গুমরু, সোনমার্গ, গুলমার্গ, পান্থাল, আঙ্গারা, ওয়ারওয়ানি, বরনপাওল, এবং নানান প্রাকৃতিক সৌন্দর্যপূর্ণ স্থান। এই অঞ্চলের প্রায় ৫০টি পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এলাকাটিতে পর্যটকদের আগমন প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এছাড়া, প্রায় হাজার হাজার হোটেল, গেস্ট হাউস, এবং পর্যটন সেবা প্রদানকারী ব্যবসায়ীদের আয় কমে গিয়েছিল।
পর্যটন কেন্দ্রগুলোর পুনরায় খোলার সিদ্ধান্ত পর্যটন ব্যবসায়ীদের মধ্যে এক নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে। অনেকেই আশা করছেন, এতে করে এই অঞ্চলের পর্যটন শিল্প দ্রুত পুনরুদ্ধার হবে এবং স্থানীয় মানুষের কর্মসংস্থানও বৃদ্ধি পাবে।
পহেলগাঁওয়ের পর্যটন কেন্দ্রগুলো খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তের পর, প্রশাসন আরও একধাপ এগিয়ে গিয়ে এই এলাকার পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে প্রবেশের জন্য কিছু নতুন গাইডলাইন প্রকাশ করেছে। সেখানে পর্যটকদের জন্য বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। যথাযথ পরিচিতি, আইডি প্রমাণপত্র এবং গন্তব্যে যাওয়ার আগে প্রশাসনের অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক হবে। এছাড়া, প্রশাসন অঞ্চলগুলির সীমানায় বিশেষ নজরদারি টিম নিয়োগ করেছে, যাতে সব পর্যটক সুরক্ষিত থাকতে পারেন।