“ক্ষমতা দ্যাখাইতাস, তোমাদের ফ্যালাইয়া ফেরত যামু”, আগ্রাসী মানিকে উল্লসিত সুশান্ত, বঙ্গ বামে হেঁচকি

আগরতলা ও কলকাতা: এ কোন মানিক! যার প্রতিটা বাক্য থাকে সংযত সেই বর্ষিয়ান সিপিআইএম নেতা, ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার (Manik Sarkar) রাস্তায় নেমে সরকারপক্ষ…

Manik Sarkar EX Cm Tripura

আগরতলা ও কলকাতা: এ কোন মানিক! যার প্রতিটা বাক্য থাকে সংযত সেই বর্ষিয়ান সিপিআইএম নেতা, ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার (Manik Sarkar) রাস্তায় নেমে সরকারপক্ষ বিজেপির উত্তেজিত সমর্থকদের ধমকে ঠান্ডা করছেন। ভাইরাল ভিডিওতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে মানিক সরকার কে আক্রমনাত্মক ভঙ্গীমায়। তিনি বলছেন, “ক্ষমতা দ্যাখাইতাস, তোমাদের ফ্যালাইয়া ফেরত যামু”।

ত্রিপুরার বর্তমান বিরোধী নেতা মানিক সরকারের এমন রূপ কেউ আগে দেখেইনি। বাম মহলে হই হই রব।পশ্চিমবঙ্গের বাম নেতারা রীতিমতো চমকে গেছেন তাঁদের ত্রিপুরার নেতা মানিক সরকারের আগ্রাসী রূপ দেখে। সিপিআইএম মহলে তীব্র আলোচিত হচ্ছে মানিক সরকারের অবস্থান।

Manik Sarkar

বঙ্গ বামেদের মুখ চুন। জেলা মহকুমার সমর্থকরা পর্যন্ত নেতাদের মুন্ডপাত করছেন। অনেকেরই যুক্তি বুদ্ধবাবুর নরম মুখ দিয়ে দলকে শূন্যতে নামানো ছাড়া কিছুই হয়নি। অথচ ত্রিপুরাতেও দল সরকারে নেই। তবে বিরোধী নেতা মানিক সরকার যেভাবে হামলাকারীদের দিকে তেড়ে গেছেন তা নজিরবিহিন ঘটনা। পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে এমন কেন করেনা নেতারা, প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

সূত্রের খবর, মানিক সরকারের রূদ্র রূপ দেখে প্রবল উল্লসিত সিপিআইএমের আগ্রাসী নেতা সুশান্ত ঘোষ। ২০১১ সালে বাম সরকার পতনের পর বেনাচাপড়া কঙ্কাল কাণ্ডে জড়িয়ে জেলে গিয়েছিলেন সুশান্তবাবু। তবে তিনি আইনি জটিলতা কাটিয়ে ফের পশ্চিম মেদিনীপুরে ফিরেছেন। দল চাঙ্গা হলেও ভোটে সুশান্তবাবু হেরেছেন। সূত্রের খবর,আসন্ন দলীয় রাজ্য সম্মেলনে সুশান্তবাবুর হামলা হবে বুদ্ধদেব ঘনিষ্ট ‘নরম’নেতাদের উপর। আগেই ‘বামফ্রন্ট জমানার শেষ দশবছর’ বইতে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের দূর্বল প্রশাসনিক কাজের প্রবল সমালোচনা করেছেন সুশান্ত ঘোষ।

ঘটনা সোমবারের। ত্রিপুরার বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার নিজের কেন্দ্র ধনপুরে সভা করতে গিয়েছিলেন। তাঁর কনভয় আটকে দেয় বিজেপি। শুরু হয় হামলা। গাড়ি থেকে নেমে মানিক সরকার পুলিশ ও নিরাপত্তাকর্মীদের বারবার বলেন পরিস্থিতি সামাল দিতে। অভিযোগ, পুলিশ নীরব ভূমিকা নেয়। এর পরেই মানিকবাবু সরাসরি হামলাকারীদের দিকে আঙুল তুলে শাসানি দেন।

পাক্কা স্থানীয় বাচনে( সিলেটি উচ্চারণ ) মানিক সরকার বিজেপি সমর্থকদের বেশি বাড়াবাড়ি না করার হুঁশিয়ারি দেন। এদিকে মানিকবাবুকে ঘিরে রাখে বিজেপি সমর্থক ও পুলিশ। তাদের মাঝখান থেকে নেতাকে ছিনিয়ে আনেন বাম সমর্থকরা। মানিক সরকারের রুদ্র রূপ দেখে উত্তেজিত সিপিআইএম কর্মীরা দলীয় ঝাণ্ডার বাঁশ নিয়ে তেড়ে যান। সেই হামলায় বিজেপি সমর্থকরা জখম হন। বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের পর ঘেরাও কেটে মানিক সরকারকে নিয়ে টানা ৫ কিলোমিটার মিছিল করে সিপিআইএম।

ধনপুরের সভা থেকে রাজ্য সরকার, বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন মানিকবাবু। তিনি চারবারের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। সেই প্রসঙ্গ টেনে এনে বলেন, রাজ্যে গণতন্ত্র ধ্বংস হয়েছে। মানিকবাবুর অভিযোগ, কেউ একজন ফোন করে পুলিশকে নির্বিকার থাকার নির্দেশ দিয়েছে। তাঁর লক্ষ্য সরকারের দুই শীর্ষ মন্ত্রীর দিকে তা স্পষ্ট।

মানিক সরকারের এমন রূপ দেখে পশ্চিমবঙ্গের সিপিআইএম মহলে প্রায় হেঁচকি তোলা পরিস্থিতি। তৃণমূলের বিরুদ্ধে এমন ভূমিকা কেন যে রাজ্যের প্রাক্তন বাম মুখ্যমন্ত্রী নেননি তাও সমালোচনায় উঠে আসছে। রাজ্য বাম শিবিরে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে হতাশার কয়েকটি বাক্য- ইস বাংলায় একজন মানিক সরকার নেই।