আফগান সংকটমোচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত মিলছে

নিউজ ডেস্ক: এক সময় আফগানিস্তান থেকে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ দূর করতেই তালিবান জঙ্গিদের জন্ম দিয়েছিল আমেরিকা৷ সেই তালিবানের সঙ্গে নিয়েই আমেরিকার ট্যুইন টাওয়ার ধ্বংস করেছিল ওসামা…

russian army kazakhstan

নিউজ ডেস্ক: এক সময় আফগানিস্তান থেকে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ দূর করতেই তালিবান জঙ্গিদের জন্ম দিয়েছিল আমেরিকা৷ সেই তালিবানের সঙ্গে নিয়েই আমেরিকার ট্যুইন টাওয়ার ধ্বংস করেছিল ওসামা বিন লাদেনের আল কায়দা৷ তাই লাদেনের আশ্রয়দাতা আফগানিস্তান থেকে তালিবান উৎখাতে কার্যত যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ৷ ২০ বছরের যুদ্ধ শেষে কার্যত পরাস্ত আমেরিকা সেনা প্রত্যাহার করেছে আফগানিস্তান থেকে৷ বাইডেনের নির্দেশে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের মাত্র একমাসের মধ্যে আফগানে ফের তালিবান শাসক কায়েম হল৷

সেই সেই আফগানিস্তানকে বাঁচাতে ত্রাতার ভূমিকা নিতে চলেছে প্রাক্তন কেজিবি প্রধান তথা রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন৷ রবিবার তালিবানরা কাবুলের প্রেসিডেন্ট ভবনের দখল নেওয়ার পরেই নড়েচড়ে বসেছেন ক্রেমলিনের কর্তারা৷ আফগানিস্তানের পরিস্থিতি আলোচনার জন্য রাশিয়া জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের একটি জরুরি বৈঠক ডাকার পরিকল্পনা করছে। বিদেশ নীতি বিষয়ে রুশ সংসদের একজন মুখপাত্র বলেছেন, মানবিক বিপর্যয় রোধ করা এখন খুবই জরুরি। মনে করা হচ্ছে, আফগানিস্তানকে তালিবান শাসন মুক্ত করতে ঘুঁটি সাজাচ্ছে ক্রেমলিন৷ ইতিমধ্যে সাবেক সোভিয়েত আফগান সীমান্ত যেটি এখন তাজিকিস্তানের অধীনে পড়ে, সেখানেই বিপুল পরিমান রুশ সেনা, সাঁজোয়া গাড়ি, ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন শুরু করেছে রাশিয়া সরকার। তাদের সঙ্গে রয়েছে তাজিক সেনা ও আফগানিস্তান থেকে পালিয়ে আসা সেনাকর্মীরা।

Russian intervention in resolving the Afghan crisis

নব্বই দশকে সোভিয়েত ইউনিয়ন অবলুপ্ত হয়। তখনই তাজিকিস্তান স্বাধীন দেশ হিসেবে নিজেকে ঘোষণা করে। এর পরেও তাজিকিস্তানে রুশ সেনার সবথেকে বড় সেনা ঘাঁটি রয়েছে। ক্রেমলিন কোনওদিনই আফগান সীমান্তকে অবহেলা করেনি। এবার তা করবে না বলেই মনে করা হচ্ছে৷

ইইউর একজন মুখপাত্র সংবাদ সংস্থা বিবিসিকে বলেছেন, আফগানিস্তানে মানবাধিকার লংঘন হচ্ছে কিনা এবং মহিলাদের অধিকার মেনে চলা হচ্ছে কিনা, তার ওপর নির্ভর করবে মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখা হবে কিনা।
অন্যদিকে ভ্যাটিকানে পোপ ফ্রান্সিস বলেছেন, একমাত্র আলোচনার মাধ্যমেই আফগানিস্তানে দীর্ঘমেয়াদে শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা সম্ভব।

অন্যদিকে, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ব্রিটিশ সংসদে গ্রীষ্মকালীন ছুটির মধ্যে এই সংকট নিয়ে আলোচনার জন্য বুধবার সংসদের জরুরি অধিবেশন ডেকেছেন।

আশির দশকে আফগানিস্তানের গৃহযুদ্ধের সুযোগে সে দেশে ঢুকেছিল ততকালীন সোভিয়েত লাল ফৌজ। তাদের সঙ্গে আফগান ধর্মীয় সংগঠনগুলির সংঘর্ষ হয়। তবে আফগানিস্তানের নিমন্ত্রণ নেয় সোভিয়েত ইউনিয়ন।নব্বই দশকে সোভিয়েত পতনের পর আফগানিস্তান থেকে সরে যায় লাল ফৌজ। দেশটির দখল নিতে ধর্মীয় গেরিলা সংগঠনগুলি থেকে জন্ম নেয় তালিবান। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মদতে আফগানিস্তানে তাদের জয় হয়, এটি প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে।

তালিবান জঙ্গি সরকার আফগানিস্তানের ক্ষমতায় আসা, আমেরিকার টুইন টাওয়ার ধংস, আল কায়েদা সংগঠনের প্রধান লাদেনের আফগানিস্তানে আত্মগোপন সবমিলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সেনা পাঠায় এ দেশে। সম্প্রতি সেই সেনা সরতে শুরু করেছে। সেই সঙ্গে তালিবান ফের হামলা চালাচ্ছে। প্রায় অরক্ষিত আফগানিস্তানে এবার কি তালিবান নিধনে রুশ সেনা ঢুকবে?