৫ জুলাই মুক্তি পেয়েছে স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় (Swastika Mukherjee) অভিনীত ওয়েব সিরিজ ‘বিজয়া’ (Bijoya)। সিরিজে অভিনয়ের জন্য ইতিমধ্যেই ভূয়সী প্রশংসা পাচ্ছেন অভিনেত্রী। এই সবের মাঝে, মঙ্গলবার তাঁর সহ-অভিনেতা দেবদত্ত রাহাকে (Debdutta Raha) নিয়ে একটি আবেকঘন পোস্ট করেছেন অভিনেত্রী। সিরিজে বিজয়ের একমাত্র ছেলে নীলাঞ্জন বসুর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন দেবদত্ত।
সোমবার তাঁর সহ অভিনেতা দেবদত্তর (Debdutta Raha) সঙ্গে দুটি ছবি পোস্ট করেছেন স্বস্তিকা (Swastika Mukherjee)। স্বস্তিকা সিরিজের শুটিং সম্পর্কে বলেছেন যেহেতু অধিকাংশ সময় তাদের গুরুগম্ভীর দৃশ্যের জন্য অভিনয় করতে হতো, তাই সবসময় দেবদত্ত এবং স্বস্তিকা দুজেনের কেউই দুজনের সঙ্গে হাসি-ঠাট্টা বা গল্প করার সময় পাননি। এই কারণে তিনি জানান যে তাঁদের ভাল কোনো ছবিও নেই। এছাড়া স্বস্তিকা জানিয়েছেন যে শুটিংয়ের কারণে ঠিক থাকে খাওয়া দাওয়াও করে ওঠা হয়নি তাঁর।
পোস্টের শুরুতে স্বস্তিকা লিখেছেন, “না আমাদের কোনও ভাল ছবি নেই। সবসময়ই আমি মর্মাহত হয়ে ছিলাম। ছেলেটাও মন মরা হয়েই ছিল। তাও নিজেদের জন্য ছবি তুলেছিলাম। অন্য অনেক শুটিং এ, বেশির ভাগ শুটিং এই আমরা হাসি ঠাট্টা করি, সেলফি তুলি, খাবার দাবার খাই, অবসর সময় গান শুনি, গল্প করি। এই কাজটায় এর কোনটাই করা হয়নি। কখনও হেসেছি বলে মনে পরে না। অর্ধেক দিন লান্চ করিনি, রাতেও খাইনি। সবাই সারাক্ষন মন খারাপ করে কাজ করেছি।”
নিঝুম অবসরে চার হাত এক হল! শোভন চুম্বন এঁকে দিল সোহিনীর কপালে
সিরিজের মূল গল্প নদিয়াবাসী এক পড়ুয়া নীলাঞ্জন বসুকে কেন্দ্র করে। এই ভূমিকায় অভিনয় করছেন দেবদত্ত রাহা (Debdutta Raha) । কলকাতার নামী এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়তে এসে র্যাগিংয়ের শিকার হয় সে। এরপর হঠাৎই তার মা, বিজয়ার (Swastika Mukherjee) কাছে ফোন আসে যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাদ থেকে পরে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে তার। ছেলের বিচারের জন্য লড়তে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হন বিজয়া। যাদবপুরের (Jadavpur University) স্বপ্নদ্বীপ কুন্ডুর (Swapnadip Kundu) মৃত্যুর সিঘটনার সঙ্গে সাদৃশ্য রয়েছে সিরিজের।
পোস্টে স্বস্তিকা যোগ করেছেন যে কলেজের দৃশ্যগুলি শুটিং করাকালীন দেবদত্তর অভিনয় তাঁর মন ছুঁয়ে গেছে। এর আগে একটি সাক্ষাৎকারে স্বস্তিকা জানিয়েছিলেন যে তাঁর ব্যক্তিগত জীবনে ঘটে কিছু ঘটনা তাঁকে সিরিজের ঘটে ঘটনার সঙ্গে একাত্মবোধ করতে সাহায্য করে। তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের সঙ্গে মিলিয়ে অভিনেত্রী বলেন যে তাঁর মা এবং বাবা চলে যাওয়ার পর তাঁর মেয়ে যখন ২০২১-২০২২ সালে বাইরে পড়তে যায় , প্রথম তিন-চারটে মাস তাঁকে খুবই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছিল। একা বাড়িতে থাকা কালীন তাঁকে থেরাপিও নিতে হয়েছিল বলে জানান অভিনেত্রী।
ব্যক্তিগত জীবনে স্বস্তিকাও একজন মা তাই সিরিজে সন্তানকে বাসে তুলে দেওয়ার অনুভূতি থেকে শুরু করে সন্তান হারানোর যন্ত্রনা অনুভব করতে পেরেছেন তিনি। তাই পোস্টে তিনি লেখেন, “জানি ও অভিনেতা তাও ওর মুখটা দেখলেই মায়া হয়, চোখে জল আসে, ভাবি আহারে আরেকটু জড়িয়ে ধরে আগলে রাখি, আহারে বাস টা চলে গেলে তো আর কোনওদিন মা বলে ডাকবে না। জানিনা সন্তান চলে গেলে বাপ মায়েরা কি করে বেঁচে থাকে, আসলে ওটা মরে থাকা। হ্রদয় নাই, শুধু যন্ত্রটুকু অকেজো হয়ে যাওয়ার অপেক্ষা। “
স্বস্তিকা সর্বশেষে পোস্টে লিখেছেন যে তিনি আর দেবদত্তর সঙ্গে কাজ না করলেও তাঁকে নিজের ছেলের মতনই দেখবেন তিনি। সিরিজে তাঁকে এবং দেবদত্তকে মা ছেলের ভূমিকায় কাস্ট করার পরিচালক সায়ন্তন ঘোষালকে জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন অভিনেত্রী। সিরিজটি দর্শককে দেখার অনুরোধ জানিয়ে পোস্টি শেষ করেছেন স্বস্তিকা।