মুম্বই: বলিউডের জনপ্রিয় সঙ্গীত পরিচালক সচিন সংঘবি (Sachin Sanghvi) যৌন নির্যাতনের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন। অভিযোগ, ইনস্টাগ্রামে পরিচয়ের সূত্রে এক তরুণীকে বিবাহ ও সংগীত অ্যালবামে সুযোগ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে একাধিকবার যৌন নির্যাতন করেন তিনি।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযোগকারী তরুণী ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইনস্টাগ্রামের মাধ্যমে সচিন সংঘবির সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এরপর তাঁদের মধ্যে ফোনে কথাবার্তা শুরু হয় এবং কয়েকদিন পর অভিযুক্ত তাঁকে নিজের স্টুডিয়োতে আমন্ত্রণ জানান। তরুণীর অভিযোগ, সেখানেই সচিন তাঁকে বিয়ের প্রস্তাব দেন এবং পেশাগত সুযোগ দেওয়ার প্রতিশ্রুতির আড়ালে সম্পর্ক স্থাপন করেন। পরবর্তীতে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার পর তিনি বিয়ের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেন।
এরপর ওই তরুণী পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। দীর্ঘ তদন্ত ও প্রমাণ যাচাইয়ের পর বৃহস্পতিবার রাতে সচিন সংঘবিকে গ্রেপ্তার করা হয়। শুক্রবার তাঁকে আদালতে তোলা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, Bharatiya Nyaya Sanhita (BNS)-এর প্রাসঙ্গিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। অভিযোগকারিণীর বক্তব্য রেকর্ড করা হয়েছে এবং ঘটনাস্থলের প্রমাণ সংগ্রহ চলছে।
সূত্রের খবর, অভিযুক্তের ফোন রেকর্ড, ইনস্টাগ্রাম চ্যাট, স্টুডিয়োর সিসিটিভি ফুটেজ—সবই পুলিশের হাতে এসেছে। সেই সমস্ত তথ্য খতিয়ে দেখা হচ্ছে। একই সঙ্গে, অভিযোগকারিণীর মেডিক্যাল পরীক্ষাও সম্পন্ন হয়েছে।
অন্যদিকে, সচিন সংঘবির আইনজীবী দাবি করেছেন, “এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমার মক্কেল নির্দোষ। তিনি তদন্তে পূর্ণ সহযোগিতা করছেন।”
বলিউড মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিতে সচিন সংঘবি একজন জনপ্রিয় নাম। ‘Stree’, ‘Stree 2’, ‘Bhediya’, ‘Shiddat’, ‘Humpty Sharma Ki Dulhania’ সহ বহু হিট ছবির গান তাঁর সুরে সাজানো। তাঁর গ্রেপ্তারির খবর প্রকাশ্যে আসতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় নড়েচড়ে বসেছেন সংগীতপ্রেমীরা। অনেকেই হতবাক হয়ে বলছেন, “এমন প্রতিভাবান শিল্পীর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ সত্যি হলে তা শিল্পজগতের জন্য ভয়ঙ্কর।”
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। তবে আদালতের নির্দেশে পরবর্তী তদন্ত গোপন রাখা হয়েছে। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আরও প্রমাণ পাওয়া গেলে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে মুম্বই পুলিশ।
এই ঘটনা বলিউডে আবারও ‘কাস্টিং কাউচ’ ও ‘মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিতে নারী শোষণ’-এর বিষয়টি সামনে এনেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, নতুনদের সুযোগ দেওয়ার প্রতিশ্রুতির আড়ালে অনেক সময় এমন অপব্যবহার ঘটে থাকে, যা পুরো শিল্পের ভাবমূর্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।
বর্তমানে সচিন সংঘবিকে পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়েছে, এবং তাঁকে পরবর্তী শুনানির জন্য আদালতে হাজির করা হবে। ঘটনাটি এখন তদন্তাধীন।


