বলিউড বাদশা শাহরুখ খানের (Shah Rukh Khan) আজ কোনও পরিচয়ের প্রয়োজন নেই। আজ বিশ্বের মানুষ এই অভিনেতাকে কিং খান নামেই চেনে। তার একটি ছবি বক্স অফিসে হাজার হাজার কোটি টাকা আয় করে। তবে শুধুমাত্র সিনেমার জন্য নয় ফ্যান ফলোইংয়ের জন্যও সংবাদমাধ্যমের আলোচনায় থাকেন। সারা বিশ্ব জুড়ে শাহরুখের প্রচুর ভক্ত রয়েছে। ভক্তরা প্রায়ই সুপারস্টারের প্রতি তাদের ভালোবাসা প্রকাশ করে। তবে সম্পতি শাহরুখ বিপাকে পড়েছে। কিং খান তার ছয়তলা ম্যানশন ‘মান্নত’ (Mannat)আরও দুটি তলা যোগ করতে চান। কিন্তু তার আগে সমাজকর্মী দিলীপ দৌন্ডকর প্রদত্ত উপকূলীয় নিয়ন্ত্রণ অঞ্চল (সিআরজেড) অনুমোদনের বিরুদ্ধে আপত্তি জানিয়ে আপিল দায়ের করেছেন।
সমাজকর্মী দিলীপ দৌন্ডকর অভিযোগ করেছেন যে এই অনুমোদন অবৈধ। কারণ এটি সিআরজেড নিয়মের পূর্ববর্তী লঙ্ঘন সত্ত্বেও দেওয়া হয়েছে। এই মামলা এখন ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনালে (National Green Tribunal) বিচারাধীন। দৌন্ডকরের দাবি, শাহরুখ খান পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় (এমওইএফঅ্যান্ডসিসি) থেকে প্রয়োজনীয় পরিবেশগত অনুমোদন না নিয়েই দুটি ঐতিহ্যবাহী কাঠামো ভেঙে ফেলেছেন। এটি সিআরজেড নিয়ম অনুযায়ী বাধ্যতামূলক। তিনি আরও জানিয়েছেন, উক্ত জমিটি মূলত সংবিধিবদ্ধ উন্নয়ন পরিকল্পনায় একটি আর্ট গ্যালারির জন্য নির্ধারিত ছিল। কিন্তু মহারাষ্ট্র উপকূলীয় অঞ্চল ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের (এমসিজেডএমএ) বাধ্যতামূলক অনুমোদন ছাড়াই এই সংরক্ষণ সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
আপিলে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে এসেছে। দৌন্ডকর অভিযোগ করেছেন, ‘জওয়ান’ অভিনেতা এমসিজেডএমএ-র প্রয়োজনীয় অনুমতি না নিয়েই একটি গ্রাউন্ড প্লাস ছয়তলা কাঠামো নির্মাণ করেছেন। এছাড়াও, তিনি একটি গভীর বেসমেন্ট নির্মাণের বিষয়টি তুলে ধরেছেন। যেটি মাটির নিচে প্রায় ছয় মিটার গভীর এবং এতে অনুমোদন ছাড়াই খনিজ ও ভূগর্ভস্থ জল নিষ্কাশন করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন।
সমাজকর্মীর আরও অভিযোগ, শাহরুখ খান (Shah Rukh Khan) প্রাথমিকভাবে জনসাধারণের জন্য ১২টি ওয়ান-বেডরুম-হল-কিচেন (১বিএইচকে) ফ্ল্যাট নির্মাণ করেছিলেন। এটি পরে একত্রিত করে একটি বিলাসবহুল একক পরিবারের বাড়িতে পরিণত করা হয়। তিনি বলেন এটি ১৯৭৬ সালের আরবান ল্যান্ড (সিলিং অ্যান্ড রেগুলেশন) আইনের বিধান লঙ্ঘন করেছে। দৌন্ডকর শাহরুখের বিরুদ্ধে তথ্য গোপন এবং ভুল উপস্থাপনার অভিযোগও তুলেছেন।
ট্রাইব্যুনাল (National Green Tribunal) তার পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করেছে, দৌন্ডকরের উত্থাপিত অভিযোগগুলো ২০০০ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যবর্তী সময়ের। যেখানে বিতর্কিত সিআরজেড অনুমোদনটি ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে জারি করা হয়েছে। আদেশে আরও বলা হয়েছে এই অনুমোদন ২০১৯ সালের সিআরজেড নোটিফিকেশনের বিধান অনুযায়ী দেওয়া হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। তবে ট্রাইব্যুনাল দৌন্ডকরকে তার দাবির সমর্থনে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রমাণ জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। পরবর্তী শুনানি নির্ধারিত হয়েছে ২৩ এপ্রিল।
ট্রাইব্যুনাল (National Green Tribunal) এখন পর্যন্ত শাহরুখের (Shah Rukh Khan) পক্ষে বা বিপক্ষে কোনো চূড়ান্ত রায় দেয়নি। তবে দৌন্ডকরের দাবিগুলো যদি প্রমাণিত হয়, তবে এই অনুমোদন বাতিল হতে পারে। শাহরুখ খানের প্রতিনিধিরা এখনও এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। ভক্ত এবং পর্যবেক্ষকরা এখন অপেক্ষায় রয়েছেন। তারা দেখতে চান এই আইনি লড়াই কোন দিকে যায়। পরিবেশ সংরক্ষণ এবং নিয়ম মেনে চলার বিষয়টি এই মামলার মূল কেন্দ্রে রয়েছে।