ত্রিপুরার ‘কমরেড’দের মারকাটারি ইমেজে ‘হাই তোলা’ ভুলে গেলেন বঙ্গ বাম নেতৃত্ব

আগরতলা ও কলকাতা: ফোনটা আসতেই ঝিমুনি কাটল বঙ্গ বামেদের ‘লেনিনগ্রাদ’ আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের নিঝুম মুজফ্ফর আহমেদ ভবনে। বন্ধ হয়ে গেল হাই তোলা ! ততক্ষণে সোশ্যাল মিডিয়ায়…

Manik Sarkar

আগরতলা ও কলকাতা: ফোনটা আসতেই ঝিমুনি কাটল বঙ্গ বামেদের ‘লেনিনগ্রাদ’ আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের নিঝুম মুজফ্ফর আহমেদ ভবনে। বন্ধ হয়ে গেল হাই তোলা !

ততক্ষণে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়েছে ত্রিপুরার (Tripura) বিরোধী দলনেতা তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের (Manik Sarkar) কনভয় ঘিরে হামলার খবর। অভিযুক্ত বিজেপি। তবে সেইসব ভাইরাল ছবিতেই দেখা গিয়েছে, বাম সমর্থকরা তেড়ে গিয়ে বেধড়ক মারধর শুরু করেছেন। বঙ্গ বাম নেতারা দেখলেন ত্রিপুরার ‘কমরেড’রা কেমন ‘রণংদেহী’ ইমেজ নিয়েছেন।

Read More: বারবার নিজ কেন্দ্রেই কেন আক্রান্ত মানিক সরকার, সিপিআইএমে ‘জমি’ হারানোর উদ্বেগ

পশ্চিমবঙ্গে ২০১১ সালে বামেরা সরকার থেকে চলে যেতেই নেতারা ঘরমুখো হন। ন্যুনতম শক্তিটুকু নেই। এমনই অবস্থা যে তৃণমূল কংগ্রেসের সামনে মাথা তুলে দাঁড়ানোর সাহসটুকু নেই। অভিযোগ, সরকার চলে যেতেই বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য নিজেকে ‘ঘরবন্দি’ করে নেন। সেই ‘পলায়ন ভাইরাস’ গোটা বঙ্গ বামকে একেবারে গিলে নিয়েছে গত দশ বছরে। নেতৃত্বের দূর্বলতা দলীয় সমর্থনের বড় অংশ তৃণমূল কংগ্রেসের বিরোধিতায় বিজেপিকে বেছে নেন। ফলাফল স্পষ্ট, রাজ্যে বামেরা শূন্য বিধানসভায়। বিজেপি প্রধান বিরোধী দল। তবে বিপুল শক্তি নিয়ে টানা তিনবার সরকার গড়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Manik Sarkar

ত্রিপুরায় সিপিআইএমের টানা ২৫ বছরের সরকার পতন হয় ২০১৮ সালে। উত্তর পূর্বাঞ্চলের এই বাংলাভাষী প্রধান রাজ্যে এখন বিজেপি -আইপিএফটি জোট সরকার। বিরোধী বাম। অভিযোগ, গত চার বছরে রাজ্যে বিরোধীরা প্রবল আক্রান্ত। তবে প্রশাসন নির্বিকার। রাজনৈতিক হামলায় বিজেপি যে নিজের মুখ পোড়াচ্ছে তার সমালোচনা করেছেন বিজেপিরই গুরুত্বপূর্ণ বিধায়ক তথা প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সুদীপ রায়বর্মণ।

Read More: ত্রিপুরা: মমতার টার্গেট কংগ্রেস ভোট! সন্তোষমোহন কন্যা সুস্মিতায় আপ্লুত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর পরিবার

ত্রিপুরায় বারবার আক্রান্ত হয়েও বিরোধী দল সিপিআইএম বঙ্গ কমরেডদের ঘরবন্দি হয়ে ‘পলায়ন ভাইরাস’ জ্বরে আক্রান্ত হয়নি। সরকার হারিয়ে মানিকবাবু রাস্তায় নেমে গণআন্দোলনে অংশ নেন নিয়মিত। রাজ্য জুড়ে তাঁর দলের কর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলছেন। ফলাফল বলছে, বামেরা কোনও দেশব্যাপী ধর্মঘট বা বিক্ষোভ কর্মসূচি নিলে পশ্চিমবঙ্গে টিএমসির দাপটে তেমন প্রভাব পড়েনা। কিন্তু ত্রিপুরায় বিজেপির দাপট উড়িয়েই সম্পূর্ণ সফল হয়। দুপক্ষের সংঘর্ষ হতেই থাকে। তেমনই ঘটনার কেন্দ্র রাজ্যের অতি গুরুত্বপূর্ণ সোনামুড়া মহকুমার ধনপুর।

Manik Sarkar

আরও পড়ুন: কান্তি-অশোক-সুশান্ত-তন্ময় ‘চতুরঙ্গ’ সর্বনাশা আঘাতের মুখে CPIM

সোমবার নিজ কেন্দ্রে যেতে গিয়ে ফের বাধার মুখে পড়েন মানিক সরকার। এর জেরে এলাকায় বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ ছড়ায়। এখান

থেকে টানা চারবার মুখ্যমন্ত্রী ও পরে বিরোধী দলনেতা হিসেবে বিধায়ক মানিক সরকার। তিনি দেশের ‘গরীব মুখ্যমন্ত্রী’ তকমা পেয়েছিলেন। সোমবার নিজ কেন্দ্রে যেতে গিয়ে মানিকবাবুর কনভয় আক্রান্ত হওয়ার পরেই বাম কর্মীরা হামলা শুরু করেন।

সিপিআইএমের বিরুদ্ধে বিজেপি কর্মীদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে। মানিক সরকার বাধা কাটিয়ে ধনপুরেই সভা করেন। তিনি বলেন, ভয় পেও না। আমি আছি। এই ছবি দেখে চমকে গেছেন বঙ্গ বামেরা। যাঁরা বিলক্ষণ জানেন ত্রিপুরায় তাঁদেরই কমরেডরা একদা জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সংঘর্ষে নেমেছিল।