ভারতীয় এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট ৮১৪-এর কুখ্যাত ১৯৯৯ হাইজ্যাকের ঘটনার ওপর ভিত্তি করে তৈরী হয়েছে নেটফ্লিক্সের ‘আইসি ৮১৪: দ্য কান্দাহার হাইজ্যাক’ ( IC 814: The Kandahar Hijack) সিরিজটি। এর আগে দুই হাইজ্যাকারের নাম পরিবর্তন করা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ার চলা তুমুল বিতকে নেটফ্লিক্সের কনটেন্ট হেডকে ডেকে পাঠিয়ে ছিল কেন্দ্রের তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রক। বর্তমানে সিরিজে বিতর্ক এড়াতে কিছু পরিবর্তন এনেছেন নির্মাতারা।
কী কী পরিবর্তন আনা হয়েছে সিরিজটিতে? জানা গিয়েছে যে বিধিবদ্ধ সতর্কীকরণে কিছু রদবদল করা হয়েছে। নেটফ্লিক্সের কনটেন্ট হেড মনিকা শেরগিল জানিয়েছেন যে ১৯৯৯ সালের কান্দাহার হাইজ্যাক সম্পর্কে যাঁরা খুব বেশি জানেন না, তাদের কথা ভেবে সিরিজের ডিসক্লেমারে হাইজ্যাকারদের আসল নাম এবং তাদের ব্যবহৃত ছদ্মনাম দুটিই রাখা হয়েছে। এই বাস্তব ঘটনাটি তুলে ধরার ক্ষেত্রে তাঁরা যে গভীর গবেষণা করেছেন সেটিও জানাতে ভোলেননি মনিকা।
‘আইসি ৮১৪: দ্য কান্দাহার হাইজ্যাক’, একটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে তৈরী ওয়েব সিরিজ যেখানে পাকিস্তান-ভিত্তিক সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হরকাত-উল-মুজাহিদিনের ভারতীয় এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট ৮১৪-এর কুখ্যাত ১৯৯৯ হাইজ্যাকের ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে। সেই সিরিজে দুই হাইজ্যাকারের নাম পরিবর্তন করে হিন্দু নাম রাখার অভিযোগে সোশাল মিডিয়ায় বিতর্কের শুরু হয়। বাস্তব জীবনের হাইজ্যাকের উপর ভিত্তি করে তৈরী শোটি শতাধিক যাত্রীর মর্মান্তিক অভিজ্ঞতা এবং সরকারের মুখোমুখি হওয়া চ্যালেঞ্জগুলি বর্ণনা করে। বিমানটি আফগানিস্তানের তালিবান-নিয়ন্ত্রিত কান্দাহারে পৌঁছনোর আগে সেটিকে একধিক শহরে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
সিরিজে হাইজাকারদের চিফ, ডক্টর, বার্গার, ভোলা এবং শঙ্কর সাংকেতিক নাম দিয়ে দেখানো হয়েছে। ভোলা এবং শঙ্কর নামের ব্যবহার সোশাল মিডিয়াতে সমালোচনার জন্ম দেয়, কারণ কেউ কেউ চলচ্চিত্রনির্মাতাদের ইচ্ছাকৃতভাবে হিন্দু নাম বেছে নেওয়ার অভিযোগ তোলেন, এবং বলেন যে এর ফলে ঘটনাগুলিকে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হবে এবং সম্ভাব্য ধর্মীয় উত্তেজনার উস্কানি দেওয়া হবে। সিরিজটি সোশাল মিডিয়াতে একটি উত্তপ্ত বিতর্কের সূত্রপাত করে, যেখানে সমালোচকরা ঘটনাকে বিকৃত করার অভিযোগে সিরিজের পরিচালক অনুভব সিনহাকে তীব্র সমালোচনা করেছেন।
২০০০ সালের ৬ জানুয়ারি একটি বিবৃতি জারি করেছিল কেন্দ্রের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক। সেখানে জানানো হয়েছিল যে বিমানটির পাঁচ জন হাইজ্যাকারের ধর্ম মুসলমান হলেও, সরকারের সঙ্গে আলোচনা চালাবার ছদ্মনাম ব্যবহার করেছিলেন তাঁরা। বিমানের যাত্রীরা জানিয়েছিলেন যে হাইজ্যাকাররা একে অপরকে‘চিফ’, ‘ডক্টর’, ‘বার্গার’,‘ভোলা’এবং‘শঙ্কর’ নামেই সম্বোধন করতেন। ফলে কেন্দ্রীয় বিবৃতি থেকে স্পষ্ট, সিরিজে হাইজ্যাকেরদের ছদ্দনাম সংক্রান্ত কোনও ভুল তথ্য দেখানো হয়নি।