চলে গেলেন ‘পথের পাঁচালী’র দুর্গা, উমা দাশগুপ্ত প্রয়াণে শোকস্তব্ধ টলিউড

বাংলা সিনেমার ইতিহাসে অন্যতম স্মরণীয় চরিত্র ‘পথের পাঁচালী’ (Pather Panchali)-এর দুর্গা। সেই চরিত্রটি জীবন্ত করেছিলেন অভিনেত্রী উমা দাশগুপ্ত (Uma Dasgupta) । সোমবার সকাল ৮টার দিকে…

বাংলা সিনেমার ইতিহাসে অন্যতম স্মরণীয় চরিত্র ‘পথের পাঁচালী’ (Pather Panchali)-এর দুর্গা। সেই চরিত্রটি জীবন্ত করেছিলেন অভিনেত্রী উমা দাশগুপ্ত (Uma Dasgupta) । সোমবার সকাল ৮টার দিকে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি। তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন বিধায়ক, পরিচালক এবং অভিনেতা চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী, যিনি একই আবাসনে বসবাস করতেন উমার সঙ্গে।

Advertisements

উমা দাশগুপ্তের (Uma Dasgupta) মৃত্যুর খবর সামনে আসতেই সিনেমাপ্রেমীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ক্যানসারে ভুগছিলেন, তবে তার অভিনয় জীবন অনেক আগেই পর্দায় শেষ হয়ে গিয়েছিল। কিছুদিন আগে নেটপাড়ায় উমার মৃত্যুর খবর রটে গেলেও পরে তা গুজব হিসেবে প্রমাণিত হয়। কিন্তু সোমবার আসল খবর আসে— উমা দাশগুপ্ত (Uma Dasgupta) আর আমাদের মাঝে নেই।

Advertisements

১৯৫৫ সালে সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় “পথের পাঁচালী”(Pather Panchali) সিনেমাতে দুর্গা চরিত্রে অভিনয় করে তিনি পৃথিবীজুড়ে খ্যাতি লাভ করেছিলেন। এই চরিত্রটি তার জীবনের অন্যতম অমূল্য দান। সত্যজিৎ রায়ের খোঁজে একদিন তার শৈশবের শিক্ষক মাণিকবাবুর মাধ্যমে তিনি আবিষ্কৃত হন। যদিও উমার বাবা প্রথমে চাননি তার মেয়ে চলচ্চিত্র জগতে আসুক, তবে পরিচালকের অনুরোধে তিনি রাজি হন। তার পর, ‘পথের পাঁচালী’র দুর্গা চরিত্রটি সবার মন জয় করে নেয়। সিনেমায় দুর্গার মৃত্যু একদিকে যেমন অপুর মনে গভীর দাগ কেটেছিল, তেমনি দর্শকদেরও কাঁদিয়েছিল।

শৈশবে থিয়েটার করা উমা দাশগুপ্ত (Uma Dasgupta)জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত সুস্থ থাকার চেষ্টা করেছিলেন। অভিনেতা চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী জানিয়েছেন, উমাদেবীকে একদিন তিনি তার মেয়ের সঙ্গে দেখে এসেছিলেন এবং সে সময় তার শারীরিক অবস্থা বেশ ভালো ছিল। মার্চ মাসে তাকে কলকাতায় ফিরে আসতে দেখা গিয়েছিল। তবে এক মাস পরে, তার মৃত্যুর খবর শোকাবহ হয়ে উঠেছে।

উমা দাশগুপ্ত (Uma Dasgupta) অভিনয় করেছিলেন অনেকটা নিঃশব্দে, পর্দায় তার উপস্থিতি কেবলই অমর হয়ে রয়েছে। ‘পথের পাঁচালী’(Pather Panchali)র দুর্গা চরিত্রে অভিনয় করার পর তিনি আর কখনও অভিনয়ে ফিরে আসেননি। তবে তার অভিনীত চরিত্রটি বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে চিরকালীন হয়ে থাকবে। দুর্গা চরিত্রের সেই প্রাণোচ্ছ্বল হাসি, দুঃখ-কষ্টের মাঝে এক ঝলক আনন্দের ছাপ এখনও দর্শকদের মনে রয়ে গেছে।