আত্মসমর্পণের প্রশ্ন উড়িয়ে আমেরিকার কাছে অস্ত্রসাহায্য চাইলেন নিহত তালিবান-বিরোধী নেতার ছেলে

নিউজ ডেস্ক: কাবুলসহ আফগানিস্তানের অধিকাংশ এলাকা তালিবানদের দখলে৷ দেশে তালিবানিরাজ কায়েম করলেও কিছু এলাকার মানুষ এই ভয়ঙ্কর জঙ্গি সংগঠনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের পতাকা তুলছে। তার মধ্যে…

নিউজ ডেস্ক: কাবুলসহ আফগানিস্তানের অধিকাংশ এলাকা তালিবানদের দখলে৷ দেশে তালিবানিরাজ কায়েম করলেও কিছু এলাকার মানুষ এই ভয়ঙ্কর জঙ্গি সংগঠনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের পতাকা তুলছে। তার মধ্যে অন্যতম হল নর্দান অ্যালায়েন্সের প্রাক্তন কমান্ডার আহমেদ শাহ মাসুদের শক্ত ঘাঁটি পঞ্জশির উপত্যকা। পঞ্জশিরের পর তালিবানের শক্ত ঘাঁটি হিসাবে পরিচিত জালালাবাদেও শোনা গিয়েছে প্রতিরোধের সুর। এবার বিখ্যাত তালিবান-বিরোধী নেতা আহমেদ শাহ মাসুদের ছেলে আহমেদ মাসুদ অস্ত্র সাহায্য চাইলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে। তিনি জানিয়েছেন যেঁ তালিবানদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার শক্তি তাদের আছে, কিন্তু তার জন্য আমেরিকার সাহায্য দরকার।

আরও পড়ুন শিল্পেই বিপ্লব: তালিবানদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে কাবুলের গ্রাফিতি শিল্পী শামসিয়া হাসানি

আহমেদ মাসুদ বলেন, “আমি পঞ্জশির উপত্যকা থেকে লিখছি, আমার বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করার জন্য আমি প্রস্তুত। মুজাহিদিন যোদ্ধারা আবারও তালিবানদের মোকাবিলা করতে প্রস্তুত।” পঞ্জশিরে প্রায় ১ লক্ষ ৭০ হাজার মানুষের বসবাস৷ কাবুলের উত্তর-পূর্ব উপত্যকায় মুজাহিদিনরা তাদের ঘাঁটি থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তালিবানদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। এলাকাটি এতটাই বিপজ্জনক যে, ১৯৮০ থেকে ২০২১ পর্যন্ত তালিবানদের কব্জায় আসেনি এই উপত্যকাটি৷ শুধু তাই নয়, ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং মার্কিন সামরিক বাহিনীও এই এলাকায় শুধুমাত্র বিমান হামলা চালিয়েছে৷ তারা কখনও কোনও পদাদিক বাহিনী পাঠানোর সাহস দেখাতে পারেনি৷

আহমদ শাহ মাসুদকে শের-ই-পঞ্জশির বলা হয়৷ তিনি ছিলেন এই অঞ্চলের সর্বশ্রেষ্ঠ সেনাপতি। এলাকার ভৌগোলিক কাঠামো এমন যে, কোন সেনাবাহিনী এই এলাকায় প্রবেশ করার সাহস দেখাতে পারে না। চারদিকে উঁচু পাহাড় দিয়ে ঘেরা এই অঞ্চলের মাঝখানে সমতল ভূমি রয়েছে। সেখানকার গোলকধাঁধা সবার জন্য সহজ হয় না৷

১৯৯০ -এর দশকে তালিবানদের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় আহমেদ শাহ মাসুদ দারুণ প্রতিপত্তি অর্জন করেছিলেন। ভারতও তাদের সাহায্য করে আসছে। বলা হয়ে থাকে যে, একবার যখন তালিবানদের হামলায় আহমদ শাহ মাসুদ মারাত্মকভাবে আহত হন, তখন তাঁকে ভারত সরকার এয়ারলিফ্ট করে তাজিকিস্তানের ফারখোর এয়ারবেসে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করায়। এখানই ভারতের প্রথম বিদেশি সামরিক ঘাঁটি রয়েছে৷ ভারত বিশেষ করে নর্দান অ্যালায়েন্সকে সাহায্য করার জন্য এই সামরিক ঘাঁটি প্রতিষ্ঠা করেছিল। তাঁর ছেলে মাসুদ জানিয়েছেন যে তিনি দেশের বিশেষ বাহিনীর প্রাক্তন সদস্য এবং আফগান সেনাবাহিনীর সৈন্যদের কমান্ডারদের তালিবানদের সামনে আত্মসমর্পণে বিরক্ত।

ফলে তালিবানদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি, আর তার জন্য দরকার প্রচুর অস্ত্র, গোলা-বারুদ এবং আমেরিকান সাহায্য। কারণ সোশ্যাল মিডিয়ার ছবিতে দেখা গেছে তালেবান যোদ্ধারা M4 এবং M18 অ্যাসল্ট রাইফেল, M24 স্নাইপার নিয়ে আইসনিক মার্কিন হামভিসে ঘুরে বেড়াচ্ছে। যার মোকাবিলা করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্টের অস্ত্র সাহায্য প্রয়োজন।