দেশের করোনা পরিস্থিতি প্রকাশ্যে আনায় মৃত্যুর মুখে বন্দি চিনা সাংবাদিক

News Desk: ২০১৯-এর ডিসেম্বর মাসে চিনের ইউহানে প্রথম করোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে ছিল। কিছুদিনের মধ্যেই গোটা ইউহানে সংক্রমণ মাত্রা ছাড়া হয়েছিল। করোনা সংক্রমণের ওই খবর প্রকাশ্যে…

Chinese journalist jailed over Covid reports 'close to death'

News Desk: ২০১৯-এর ডিসেম্বর মাসে চিনের ইউহানে প্রথম করোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে ছিল। কিছুদিনের মধ্যেই গোটা ইউহানে সংক্রমণ মাত্রা ছাড়া হয়েছিল। করোনা সংক্রমণের ওই খবর প্রকাশ্যে এনেছিলেন ঝ্যাং ঝান নামে চিনের এক মহিলা সাংবাদিক। দেশের করোনা পরিস্থিতি প্রকাশ করার অভিযোগে ওই মহিলা সাংবাদিককে জেলবন্দি করে চিনের জিনপিং সরকার। শুধু বন্দি নয়, আদালত ওই মহিলা সাংবাদিককে চার বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয়। প্রশাসনের বিরুদ্ধে লড়াই জারি রাখতে জেলের ভিতরেই আমরণ অনশন শুরু করেন ওই মহিলা সাংবাদিক। একটানা অনশনের জেরে জেলের ভিতরে ওই মহিলা সাংবাদিক মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছেন বলে খবর।

জানা গিয়েছে ৩৮ বছরের ঝ্যাং ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে চিনের করোনা নিয়ে খবর করেছিলেন। ওই সময় চিনে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ছিল এই মারণ ভাইরাস। নিজের ফোনে করোনা আক্রান্তদের ছবি তুলে তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছিলেন। একই সঙ্গে তাঁর লেখা থেকেই জানা গিয়েছিল জিনপিং সরকার করোনার ধাক্কা সামলাতে কিভাবে ব্যর্থ হয়েছে। সরকারের এই ব্যর্থতা প্রকাশ করায় ২০২০-র মে মাসে ঝ্যাংকে আটক করা হয়। প্রায় ছয় মাস বিচার চলার পর ডিসেম্বরে ঝ্যাংকে চার বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয় আদালত।

   

ঝ্যাং সাংবাদিকতা করলেও তিনি একজন আইনজীবী। তবে বর্তমানে আইনি পেশা ছেড়ে তিনি সাংবাদিকতা করছিলেন। সম্প্রতি আদালতের নির্দেশের বিরুদ্ধে আমরণ অনশন শুরু করেছেন তিনি। এক টানা কয়েকদিন অনশন করার পরই তাঁর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হয়। জেল কর্তৃপক্ষ জোর করে ঝ্যাংকে তরল খাবার খাওয়ালেও তাঁর শরীর একেবারে ভেঙে পড়েছে। তিনি এতটাই দুর্বল হয়ে পড়েছেন যে, হাঁটাচলা তো দূরের কথা হাত-পাও নাড়াতে পারছেন না।

ঝ্যাংয়ের ভাই জু বলেছেন, তাঁর দিদির সার্বিক পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে আসন্ন শীতে তাঁর পক্ষে বেঁচে থাকা অত্যন্ত কঠিন হতে পারে। তাঁর দিদি যদি অবিলম্বে অনশন ভঙ্গ না করেন তবে তিনি হয়তো আর বেশি দিন বাঁচবেন না।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝ্যাংয়ের শারীরিক অবস্থার খবর প্রকাশ হতেই আন্তর্জাতিক মহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ইতিমধ্যেই ওই মহিলা সাংবাদিকের মুক্তির দাবি জানিয়েছে। জু বলেছেন, তাঁর দিদি কোন খারাপ কাজ করেননি। একজন সাংবাদিকের কর্তব্য হল প্রকৃত খবর সামনে আনা। সেটাই করেছিলেন তিনি। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে অকারণে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে বিভিন্ন সংগঠন ও আন্তর্জাতিক মহল ঝ্যাংকে মুক্তি দেওয়ার দাবি তুললেও জিনপিং সরকার বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেনি।