ভারতের রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছেন, ভারতীয় রেলে (Indian Railways) শিগগির ৯৫,০০০ নতুন শূন্যপদ পূরণ করা হবে। বিহারের বেতিয়া জংশনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে মন্ত্রী এই ঘোষণা করেন। তিনি আরও জানান, এই নতুন নিয়োগগুলি সম্প্রতি হওয়া ১.৫ লক্ষ রেলপদে নিয়োগের উপর অতিরিক্ত হবে, অর্থাৎ দেশের রেল বিভাগে মোট নিয়োগের সংখ্যা ২.৪৫ লক্ষে পৌঁছাবে।
অশ্বিনী বৈষ্ণব তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করেন, ‘‘ভারতীয় রেলওয়ে সবসময় দেশের উন্নতির অগ্রদূত হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য রেলের আধুনিকীকরণ এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা। শিগগির ৯৫,০০০ নতুন কর্মসংস্থান হবে, যা ভারতীয় রেলওয়ের কর্মী বাহিনীকে আরও শক্তিশালী করবে।’’ তিনি জানান, রেলের নতুন শূন্যপদগুলি দেশের বিভিন্ন অংশে পূর্ণ করা হবে, যাতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের যুবকদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়।
গত বছরের জুলাইয়ে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব ঘোষণা করেছিলেন যে, ভারতীয় রেলওয়ে বিভিন্ন শাখায় একযোগে ১.৫ লক্ষ নতুন কর্মী নিয়োগ করবে। এই পদক্ষেপটি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে ‘আত্মনির্ভর ভারত’ প্রকল্পের অংশ হিসেবে নেওয়া হয়েছিল। এর মাধ্যমে রেলের আধুনিকীকরণ, নিরাপত্তা এবং দক্ষতা বৃদ্ধি করার পাশাপাশি দেশের যুবকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ দেওয়া হয়।
এবার যে ৯৫,০০০ নতুন নিয়োগের কথা বলা হয়েছে, তা মূলত রেলের বিভিন্ন বিভাগে বিশেষজ্ঞ এবং দক্ষ কর্মীদের জন্য। এই পদক্ষেপটি এমন এক সময়ে নেওয়া হচ্ছে, যখন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে চাকরির জন্য আবেদনকারী যুবকদের সংখ্যা বাড়ছে এবং চাকরির প্রতিযোগিতা তীব্র হচ্ছে।
অশ্বিনী বৈষ্ণব আরও বলেন, “রেলওয়ে কেবল একটি পরিবহন ব্যবস্থা নয়, বরং এটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম প্রধান চালিকা শক্তি। ভারতীয় রেলওয়ে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের নাগরিকদের সেবা প্রদান করছে, এবং একই সঙ্গে যুবকদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করছে।”
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রেলওয়ে বিভাগে এত বড় পরিসরে নিয়োগের ফলে দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী হবে, কারণ এটি শুধুমাত্র চাকরি সৃষ্টির ক্ষেত্রেই নয়, পরিবহন ব্যবস্থার উন্নতিতে সহায়ক হবে। ভারতীয় রেলওয়ে দেশের বৃহত্তম নিয়োগকারীদের একটি এবং এটি তরুণদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পেশাগত দিশা প্রদান করে।
বিগত কয়েক বছরে রেলওয়ে সংস্থা কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে বিশেষ মনোযোগ দিচ্ছে। ভারতের বেশ কিছু অঞ্চলে রেলের আধুনিকীকরণের জন্য ব্যাপক বিনিয়োগ করা হচ্ছে, যার ফলে নতুন শূন্যপদ এবং চাকরি সৃষ্টি হচ্ছে। এই পদক্ষেপটি সরকারের বৃহত্তর কর্মসংস্থান নীতির সঙ্গে মিলে যাওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা এই ঘোষণা ভালোভাবে গ্রহণ করেছেন, কারণ রেল বিভাগের চাকরির জন্য আবেদন করতে আগ্রহী যুবকদের জন্য এটি একটি বড়ো সুযোগ হিসেবে দেখা যাচ্ছে। আসন্ন নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য শিগগির রেলের কর্তৃপক্ষ জানাবে।
অশ্বিনী বৈষ্ণব আরও জানিয়েছেন, নতুন নিয়োগগুলি শুধুমাত্র পরিসংখ্যানগত বৃদ্ধির জন্য নয়, বরং রেলের কার্যক্রমের গতি বৃদ্ধি ও সার্বিক দক্ষতা উন্নত করার উদ্দেশ্যেই করা হচ্ছে। এই পদক্ষেপটি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও যুব উন্নয়নের প্রতিশ্রুতির আওতায় আনা হয়েছে।
এই ঘোষণার পর, বিহারের বেতিয়া অঞ্চলের চাকরি প্রার্থীদের মধ্যে একটি উত্তেজনা লক্ষ্য করা গেছে, যেখানে তারা রেলের শূন্যপদে আবেদন করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ইতিমধ্যে, বিভিন্ন রেলকর্মী সংগঠন ও বেতিয়া অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা এই খবরকে একান্তভাবে স্বাগত জানিয়েছে।
ভারতীয় রেলওয়ের নিয়োগ সংক্রান্ত এই পদক্ষেপটি দেশে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির এবং যুবকদের জন্য নতুন দিশা দেখানোর একটি বড়ো উদ্যোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে।