রুমানা বিতর্কে মহুয়ার পাশে তসলিমা

নিউজ ডেস্ক: উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রথম স্থানাধিকারী রুমানা সুলতানার ধর্ম পরিচয় উল্লেখ করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন সংসদ সভাপতি মহুয়া দাস। যা নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক। একজন…

Taslima Nasrin supports Mahua in Rumana debate

নিউজ ডেস্ক: উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রথম স্থানাধিকারী রুমানা সুলতানার ধর্ম পরিচয় উল্লেখ করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন সংসদ সভাপতি মহুয়া দাস। যা নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক। একজন ছাত্রীর ধর্মীয় পরিচয়কে গুরুত্ব দেওয়ায় সমালোচনায় বিদ্ধ করা হয় উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতিকে। তা নিয়ে সাফাইও দিয়েছেন মহুয়াদেবী। যদিও এই বিতর্কে মুহুয়া দাসের পাশেই দাঁড়ালেন বিশিষ্ট লেখিকা তসলিমা নাসরিন।

ধর্মের বিরুদ্ধে বরাবরই সরব হয়েছেন তসলিমা নাসরিন। যা নিয়ে অনেক জটিলতা হয়েছে তাঁর জীবনে। তারপরেও নিজের অবস্থানে অনড় থেকেছেন তিনি। ইসলাম এবং মুসলিমদের বিরুদ্ধেও বিভিন্ন সময়ে সরব হতে দেখা গিয়েছে লজ্জার লেখিকাকে। তবে রুমানা সুলতানার মুসলিম পরিচয় উল্লেখ করার ক্ষেত্রে ভুল কিছু দেখছেন না তিনি। যা নিয়ে সুবিস্তারে ব্যাখ্যা করে পোস্ট করেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়।

তসলিমার কথায়, “নিগেটিভ কথার বেলায় মুসলিম শব্দটি ব্যবহার করা চলতে পারে, পজিটিভ কথার বেলায় মুসলিম শব্দটির ব্যবহার চলতে পারে না! বলতে হবে ‘রুমানা সুলতানা পরীক্ষায় প্রথম হয়েছে।’ যেন রুমানা সুলতানা নামটা শুনে বোঝা যাবে না সে হিন্দু না মুসলিম! মুসলিম শব্দটি পজিটিভ বাক্যে ব্যবহার হোক। এতে মুসলিমরাও অনুপ্রাণিত হবে সামনে এগোতে। আর মুসলিম বিরোধীদেরও কিছুটা বোধোদয় হবে।”

শনিবার নিজের ফেসবুকের দেওয়ালে তিনি লিখেছেন-
মুসলিমরা নামাজ পড়ার জন্য রাস্তা ব্লক করে ট্রাফিক জ্যাম বাড়ায়, জনগণের অসুবিধে করে।
মুসলিমরা আত্মঘাতী বোমা হয়ে মানুষ খুন করে।
মুসলিমরা বোমাবাজি করে।
মুসলিমরা সন্ত্রাস করে।
মুসলিমরা বহুবিবাহ করে।
মুসলিমরা লাভ-জিহাদ করে।
মুসলিমরা আইন-বিরোধী ফতোয়া জারি করে। মানুষের মাথার মূল্য ধার্য করে।
মুসলিমরা মানবাধিকার বিরোধী।
মুসলিমরা নারীবিরোধী শরিয়া আইন বহাল রাখতে চায়।
মুসলিমদের কাছে মেয়ে বিয়ে দেওয়া যাবে না।
মুসলিমদের কাছে বাড়ি ভাড়া দেওয়া যাবে না।
এগুলো ঠিক আছে।

কিন্তু ‘একটি মুসলিম মেয়ে উচ্চ মাধ্যমিকে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে পাস করেছে’ বললে ঠিক নেই।
তাহলে তো মনে হচ্ছে নিগেটিভ কথার বেলায় মুসলিম শব্দটি ব্যবহার করা চলতে পারে, পজিটিভ কথার বেলায় মুসলিম শব্দটির ব্যবহার চলতে পারে না!

বলতে হবে ‘রুমানা সুলতানা পরীক্ষায় প্রথম হয়েছে।’ যেন রুমানা সুলতানা নামটা শুনে বোঝা যাবে না সে হিন্দু না মুসলিম!
মুসলিম শব্দটি পজিটিভ বাক্যে ব্যবহার হোক। এতে মুসলিমরাও অনুপ্রাণিত হবে সামনে এগোতে। আর মুসলিম বিরোধীদেরও কিছুটা বোধোদয় হবে।

আমি বলতে চাই একটি মুসলিম মেয়ে পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে।
একটি মুসলিম মেয়ে শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানীর সম্মান অর্জন করেছে।
একদল মুসলিম মেয়ে শরিয়া আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে।
একদল মুসলিম ছেলে নারীর সমানাধিকারের পক্ষে মিছিল করছে।
একদল মুসলিম মেয়ে ময়দানে গিয়ে তাদের হিজাব আর বোরখা খুলে আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছে।
একটি মুসলিম নভোচারি মেয়ে মঙ্গলগ্রহে পাড়ি দিচ্ছে।
একটি মুসলিম মেয়ে ভরত নাট্যম নৃত্য প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছে।
একটি মুসলিম ছেলে ভালোবেসে এক হিন্দু মেয়েকে বিয়ে করেছে, বলেছে তোমার ধর্ম তুমি পালন করবে, আমার ধর্ম আমি।