বিশ্লেষণ: ড্রাগনে চড়ে ISI জাল বিস্তার করল ইসলামাবাদ-কাবুল ভায়া ঢাকা

প্রসেনজিৎ চৌধুরী: আফগানিস্তানের (Afghanistan) দ্বিতীয় দফার তালিবান সরকারকে (Taliban) ঘিরে রেখেছে পাকিস্তানের (Pakistan) সামরিক গুপ্তচর সংস্থা ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিসেন্স (ISI) অফিসার ও এজেন্টরা। খোদ পাক…

taliban-chaina

প্রসেনজিৎ চৌধুরী: আফগানিস্তানের (Afghanistan) দ্বিতীয় দফার তালিবান সরকারকে (Taliban) ঘিরে রেখেছে পাকিস্তানের (Pakistan) সামরিক গুপ্তচর সংস্থা ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিসেন্স (ISI) অফিসার ও এজেন্টরা। খোদ পাক গুপ্তচর সংস্থার প্রধান ফইজ হামিদের এখান যেন নাওয়া খাওয়ার সময় নেই। পাক সামরিক সদর দফতর রাওয়ালপিন্ডি থেকে তৈরি হওয়া নীল নকশা মাফিক পুরো আফগানিস্তান এখন আইএসআই ‘সেফ জোন’।

Read More: তালিবান সরকারের অংশীদার হাক্কানি নেটওয়ার্ক সক্রিয় নেপাল থেকে উত্তরবঙ্গে

https://video.incrementxserv.com/vast?vzId=IXV533296VEH1EC0&cb=100&pageurl=https://kolkata24x7.in&width=300&height=400

তালিবান জঙ্গিদের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ছায়া মন্ত্রিপরিষদের ঘোষণার সব থেকে বড় চমকটি হলো আফগান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। এই দফতরের ভার গিয়েছে আইএসআই নয়নের মণি জঙ্গি সংগঠন হাক্কানি নেটওয়ার্কের (Haqqani Network) ঘাড়ে। অর্থাৎ তালিবান জঙ্গি সরকার যাই কিছু করুক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা মোস্ট ওয়ান্টেড জঙ্গি নেতা সিরাজউদ্দিন হাক্কানির কড়া নজর থাকবে। মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা এফবিআইয়ের তালিকায় তার মাথার দাম ৫০ লক্ষ মার্কিন ডলার। মোস্ট ওয়ান্টেড। এর থেকেই স্পষ্ট পুরো তালিবান মন্ত্রিসভায় পাকিস্তানের দাপট।

taliban-chaina

ISI চক্রজাল ইসলামাবাদ-ঢাকা-কাবুল একটি বিশ্লেষণ

ISI ঢাকা ইউনিট
কূটনৈতিক মহলের আলোচনা, পাকিস্তান জন্মের পর এই প্রথম কোনও দেশে (আফগানিস্তান) নিরাপদ বিচরণের শক্তিশালী ঘাঁটি তৈরি করেছে আইএসআই। তবে আলোচনায় উঠে আসছে, ১৯৭১ পরবর্তী বাংলাদেশে বিএনপি-জামাত ইসলামি জোট সরকারের আমলে ঢাকায় পাক গুপ্তচর সংস্থার স্বস্তিদায়ক বিচরণের প্রসঙ্গ।

১৯৭৫ সালে সেনা অভ্যুত্থানে বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে সপরিবারে খুনের পর থেকে দেশটিতে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হয়। অভিযোগ, পাকিস্তানের প্রতি খানিকটা নরম হয়েছিলেন পরবর্তী রাষ্ট্রপতি তথা বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। তিনিও সেনা অভ্যুত্থানে খুন হন। এর পর রাষ্ট্রপতি এরশাদের সামরিক জমানা পেরিয়ে ফের বিএনপি সরকারে আসে। তখন প্রধানমন্ত্রী হন খালেদা জিয়া। ঢাকায় অত্যন্ত সক্রিয় আইএসআই। তবে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অতিমাত্রায় সজাগ থাকে ভারত। সেই চাপ নিয়েছিল পাক গুপ্তচর সংস্থাটি। তাদের ষড়যন্ত্রের অন্যতম নাশকতা তৎকালীন বিরোধী নেত্রী আওয়ামী লীগ সুপ্রিমো শেখ হাসিনার উপর ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা। বিশ্ব কেঁপেছিল। পাক মদতপুষ্ট জঙ্গি যোগ স্পষ্ট হয় তদন্তে। বিএনপির একের পর এক মন্ত্রী, খোদ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পুত্র তারেক রহমানের নাম এই নাশকতায় জড়িত। তিনি বাংলাদেশ সরকারের খাতায়’পলাতক’। লন্ডনে থাকেন।

ISI কাবুল ইউনিট
বাংলাদেশে আইএসআই জাল নষ্ট হয় আওয়ামী লীগের সরকার পরপর ক্ষমতায় আসার পর। ঢাকা থেকে নেটওয়ার্ক রাখলেও পাক গুপ্তচর সংস্থাটি পরবর্তী সময়ে বারবার প্রতিবেশি আফগানিস্তানে তাদের নেটওয়ার্ক শক্তিশালী করতে থাকে। প্রথম তালিবান সরকারের সময়ে এই সুযোগ এনে দেয় আফগানিস্তান-পাকিস্তান সীমান্ত এলাকায় সক্রিয় হাক্কানি নেটওয়ার্ক। জঙ্গি সংগঠনটি শীর্ষ নেতা সিরাজউদ্দিন হাক্কানি আইএসআইয়ের ঘনিষ্ঠ। সেই শুরু তাদের মধুচন্দ্রিমা। তবে ২০০১ সালে মার্কিন সেনা প্রবেশের পর কাবুল থেকে সরে যাওয়ায় আইএসআই তার জমি হারান। তারা আফগানিস্তানে সক্রিয় থাকলেও ভারতের ভূমিকা হয় বড়। শুরু হয় ‘র’আনাগোনা। গত দু দশক এমন চলেছে। গত ১৫ আগস্ট তালিবান দখলে গেছে কাবুল। ফের সক্রিয় আইএসআই। তাদেরই পুতুল সরকার এখন কুর্সিতে। আফগানভূমির হর্তাকর্তার বিধাতা এখন পাকিস্তান।