কান্তি-অশোক-সুশান্ত-তন্ময় ‘চতুরঙ্গ’ সর্বনাশা আঘাতের মুখে CPIM

#Political Drama বিশেষ প্রতিবেদন: আক্রমণ হবেই। এটা ধরেই রাজ্য সম্মেলনে ঢোঁক গিলতে তৈরি সিপিআইএম (CPIM)। বিমান-সূর্যকান্ত অর্থাৎ প্রাক্তন ও বর্তমান রাজ্য সম্পাদক হতে চলছেন মূল…

cpim state conference will be a political drama stage

#Political Drama
বিশেষ প্রতিবেদন: আক্রমণ হবেই। এটা ধরেই রাজ্য সম্মেলনে ঢোঁক গিলতে তৈরি সিপিআইএম (CPIM)। বিমান-সূর্যকান্ত অর্থাৎ প্রাক্তন ও বর্তমান রাজ্য সম্পাদক হতে চলছেন মূল লক্ষ্যবস্তু। গোছাগোছা বাছাবাছা প্রশ্নের শক্তিশেল নিয়ে তৈরি আক্রমণকারী ‘চতুর্মুখ’-কান্তি গাঙ্গুলী, অশোক ভট্টাচার্য, সুশান্ত ঘোষ ও তন্ময় ভট্টাচার্য। সিপিআইএমের রাজ্য সম্মেলনে হতে চলেছে ‘চতুরঙ্গ সর্বনাশ’।

২০১১ সাল রাজ্যে বাম বিপর্যয়ের সীমান্ত বছর। সেই বছরেই চৌত্রিশ বছরের বামফ্রন্ট সরকার কুর্সি হারায়। সেই বছরেই তৃণমূল কংগ্রেসের কুর্সি লাভ। গত দশ বছরের ছবি একদম স্পষ্ট পশ্চিমবঙ্গে বামেদের আর স্থান নেই। হারতে হারতে একেবারে শূন্য। সর্বশেষ বিধানসভা ভোটে ‘ভয়াবহ বিপর্যয়’ স্বীকার করেছেন সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র।

   

Susanta Ghosh

সুশান্তর বাণ: ‘বুদ্ধ-তন্ত্র’!
কিন্তু চতুরঙ্গ সর্বনাশা আক্রমণ তাতে আটকাবে না। সূত্রের খবর বারবার বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের নরম রাজনীতির গরম সমালোচক সুশান্ত ঘোষ একেবারে মুখিয়ে রয়েছেন। সম্ভবত তিনিই সর্বাধিক ভয়ঙ্কর আঘাতটি করতে চলেছেন রাজ্য কমিটিকে।সুশান্তবাবুর কাটা কাটা মন্তব্য কীরকম হতে পারে তা তাঁরই লেখা ‘বামফ্রন্ট জনানার শেষ দশবছর’ বই থেকেই মিলতে পারে। জ্যোতিবাবু ও বুদ্ধবাবু দুই মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক দিকের তুল্যমূল্য আলোচনা তুলে ধরে প্রাক্তন পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রী সুশান্ত ঘোষ তীব্র সমালোচনা করেছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের। দল থেকে সাময়িক সাসপেন্ড হন। তবে তাঁকে ফেরাতে বাধ্য হয় সিপিআইএম। শাসক তৃণমূলের নজরে এখনও ‘প্রবল আগ্রাসী’ সুশান্ত ঘোষের লক্ষ্যবস্তু নরম সরম নেতারা।

Kanti Ganguly

কান্তির হামলা: ‘বুড়ো বুড়ি নয় ছোঁড়া ছুঁড়ি’!
সদ্য প্রকাশিত হয়েছে প্রাক্তন সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী কান্তি গাঙ্গুলীর লেখা ব্যক্তিগত রাজনৈতিক স্মৃতির চমকপ্রদ ঘটনাবলী ‘রক্তপলাশের আকাঙ্খায়’। বর্ষীয়ান সিপিআইএম নেতা গতবারের মতো এবারেও যে হারবেন তা স্বয়ং তৃণমূল নেত্রীর ক্যালকুলেশনের বাইরে ছিল বলে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা টিএমসি নেতাদের অনেকেই মনে করছেন। কান্তিবাবু সরাসরি জানিয়েছেন, দলে বৃদ্ধতন্ত্রের ভারত্ব কমাতে হবে। তাঁর হামলার লক্ষ্যবস্তু অবশ্যই সাংগঠনিক গঠনস্তর ও নেতৃত্বের ‘হাই তোলা’ কর্মসূচি। সত্তরোর্ধ কান্তিবাবুর যৌবনদীপ্ত ভূমিকা সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড় এলেই রাজ্যবাসীর কাছে মূল আলোচনা হয়। বয়স তাঁর পায়ের তলায় পড়ে থাকে।

Ashok Bhattacharya

অশোক অশনি: বে-আক্কেলের জোট!
শিলিগুড়ি শুধু নয়, অতি উন্নত চিন পর্যন্ত তাঁর নাম ছড়িয়ে। পুর প্রশাসনের খুঁটিনাটি, পুর উন্নয়নের বিষয়ে প্রাক্তন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্যের রাজনৈতিক তাত্ত্বিক প্রশ্নের উত্তর দিতে কালঘাম ছুটবেই মুজফ্ফর আহমেদ ভবন আলো করে থাকা নেতাদের। অশোকবাবুর সাফ কথা কোন যুক্তিতে সংযুক্ত মোর্চা গঠিত হয়েছিল? নির্বাচনে শিলিগুড়ি থেকে তিনি যে হারবেন তা মোদী-মমতা কারোর অংকেই ছিলনা। তবে তিনি হেরেছেন। শিষ্য শংকর ঘোষ বাম ছেড়ে রাম হয়ে জিতে গুরুর আশীর্বাদ নিয়েছেন। সম্ভবত শিষ্যটি তৃণমূলে যাওয়ার পথে।

Tanmoy Bhattacharya
তন্ময়ে তটস্থ: কেমনধারা দল!
ভোটে হেরে ঘরে ফিরে চিকেন স্যান্ডুইচ খেতে খেতে ত্রিপুরার সর্বাপেক্ষা আলোচিত টিভি চ্যানেলের সাক্ষাৎকারে দলের মুণ্ডপাত করেছিলেন। তার আগে নিজের ফেসবুকেই হামলা করেন দলীয় উচ্চস্তরীয় নেতাদের। প্রশ্ন ছিল অনেকটা এমন, দল কি আদৌ ভোট লড়তে নেমেছিল! প্রাক্তন বিধায়ক তন্ময় ভট্টাচার্যের অবস্থানে সিপিআইএমের অন্দরে ভূমিকম্প দেখা দেয়। প্রবল যুক্তিধর তন্ময়কে মুখ বন্ধ রাখার ফরমান দেওয়া হয়। তিনি মুখ বন্ধ করেছেন। তবে রাজ্য সম্মেলনে তোপ দাগবেন।

পরিস্থিতি বলছে, সিপিআইএমের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্মেলন থেকে নতুন কোনও বিদ্রোহী গোষ্ঠীর জন্ম হতে পারে। অন্তত নেতৃত্বের একাংশের মধ্যে ঘুরছে ১৯৬৮ সালে সিপিআইএমের বর্ধমান প্নেনামের (বর্ধিত সম্মেলন) স্মৃতি।