অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বুধবার লোকসভায় স্পষ্ট করে জানিয়েছেন যে তামাকজাত পণ্যের উপর উচ্চ কর (Tobacco tax) আরোপের নীতি ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে। তাঁর মতে, তামাকের দাম ও কর বাড়ানো হয় জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে, যাতে নতুন করে কেউ এই ক্ষতিকর অভ্যাসে জড়িয়ে না পড়ে। তিনি বলেন, “জিএসটি চালুর আগেও প্রতি বছর তামাকের দাম ও কর বাড়ানো হতো। এই পদক্ষেপ মূলত স্বাস্থ্যগত উদ্বেগ থেকেই নেওয়া হত এবং আজও সেই দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রয়েছে।”
জিএসটি ক্ষতিপূরণ সেস শেষ হলে নতুন শুল্ক কাঠামো:
২০২৫ সালে ‘সিন গুডস’—যেমন সিগারেট, গুটখা, চিবোনো তামাক, নিকোটিনভিত্তিক দ্রব্য—এর উপর থেকে জিএসটি ক্ষতিপূরণ সেস উঠে যাবে। এই পরিস্থিতিতে যাতে কর সংগ্রহে ঘাটতি না হয় এবং তামাকজাত পণ্যের উপর কার্যকর মোট কর বোঝা অপরিবর্তিত থাকে, সেই লক্ষ্যেই নতুন শুল্ক কাঠামো প্রস্তাব করেছে কেন্দ্র।
সেন্ট্রাল এক্সসাইজ (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল, ২০২৫ তামাকজাত দ্রব্যের জন্য নতুন আবগারি শুল্ক কাঠামো নির্ধারণ করছে, যা সেসের বিকল্প হিসেবে কাজ করবে। একই সঙ্গে হেলথ সিকিউরিটি সেস ও ন্যাশনাল সিকিউরিটি সেস বিল, ২০২৫ পানমসলা ও অন্যান্য নির্দিষ্ট পণ্যের উপর আলাদা সেস আরোপের প্রস্তাব আনে। এই সেস থেকে প্রাপ্ত অর্থ স্বাস্থ্য নিরাপত্তা এবং জাতীয় নিরাপত্তা প্রকল্পে ব্যবহার করা হবে।
অস্বাস্থ্যকর পণ্যের ব্যবহার কমানোই উদ্দেশ্য:
আলোচনার জবাবে সীতারামন বলেন, তামাকের মতো ক্ষতিকর পণ্যে উচ্চ কর আরোপ করা হয় ব্যবহার কমানোর জন্যই। তিনি জোর দিয়ে বলেন, “ডিটারেন্স-ভিত্তিক ট্যাক্সেশন আমাদের নীতির অংশ। ক্ষতিকর পণ্যে দাম বাড়লে মানুষ স্বাভাবিকভাবেই সেগুলি ব্যবহার করতে নিরুৎসাহিত হয়।”
বিরোধীদের আপত্তি ও চলমান বিতর্ক:
বিলে স্বাস্থ্য সতর্কবাণী সংক্রান্ত অংশ নেই—এই অভিযোগ তোলে বিরোধী দল। পাশাপাশি তারা বলেন, সেস থেকে সংগৃহীত অর্থ রাজ্যগুলির সঙ্গে ভাগ না হওয়ায় ফেডারেল কাঠামোর ওপর প্রভাব পড়ছে।
অর্থমন্ত্রী জানান, এই সেসগুলো নির্দিষ্ট জাতীয় প্রকল্পে ব্যবহারের জন্য তৈরি এবং রাজস্ব বণ্টন কাঠামো আগেই নির্ধারিত। বিল নিয়ে আরও আলোচনা চলবে এই সপ্তাহেই। সরকারের লক্ষ্য, মার্চ ২০২৬-এ সেস পুরোপুরি উঠে যাওয়ার আগেই সংশ্লিষ্ট কর কাঠামো পাস করানো।
